শাহেদ আলী এ সময়ের ব্যস্ত অভিনেতা ও মডেল। টিভি নাটক, চলচ্চিত্র ও মডেলিং- এ তিন মাধ্যমেই সরব তিনি। এ মুহূর্তে তার হতে রয়েছে পাঁচটি ছবির কাজ। এগুলো হলো তৌকীর আহমেদের ‘হালদা’, গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নজাল’, সৈকত নাসিরের ‘পাষাণ’, একে রেজা গালিবের ‘কালের পুতুল’ ও আকরাম খানের ‘খাঁচা’। এছাড়া নতুন আরো কিছু ছবিতে কাজ করার কথা রয়েছে সামনে। চলচ্চিত্রে ব্যস্ততা প্রসঙ্গে শাহেদ আলী বলেন, ছবিগুলোতে কাজ করার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো ভালো লাগা। গল্প ও চরিত্র পছন্দ হয়েছে বলেই করছি। আরেকটা ব্যাপার হলো, নির্মাতা ও শুটিং ইউনিট। এ জায়গাটি একটা দেখার বিষয়। একজন ভালো নির্মাতা কিংবা একটি ভালো ইউনিটের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারটাই আলাদা। কারণ, এখান থেকেই একটি ভালো প্রোডাকশন বেরিয়ে আসে বলে আমি মনে করি। মূলত চলচ্চিত্রের চেয়ে টিভি পর্দাতেই বেশি পরিচিত শাহেদ আলী। টিভি নাটকেই বেশি দেখা মেলে তার। এ মুহূর্তে বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে ‘হাউস ওয়াইভস’, ‘দহন’, ‘সিনেমাওয়ালা’, ‘আমার কিছু মেঘ আছে’, ‘বৃষ্টিদের বাড়ি’, ‘টক্কর’, ‘মহল্লা বিডি.কম’ ইত্যাদি। এছাড়া আরো কিছু নতুন নাটকে কাজ করার কথা রয়েছে। ধারাবাহিকে ব্যস্ততা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন এ কয়েকটি কাজই করছি। চলচ্চিত্রের ব্যস্ততার কারণে কিছু কাজ কমিয়ে দিয়েছি। আমি নাটকের ক্ষেত্রে বরাবর গল্পটা খুব প্রাধান্য দিই। পছন্দের গল্প না পেলে কাজ থেকে বিরত থাকি। ধারাবাহিকের পাশাপাশি খণ্ড নাটকেও কাজ করছেন শাহেদ আলী। সম্প্রতি রুবায়েত মাহমুদের পরিচালনায় ‘ক্রস রোড’ নাটকের কাজ শেষ করেছেন তিনি। এছাড়া সম্রাটের পরিচালনায় একটি নাটকে অভিনয়ের কথা রয়েছে তার। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রায়ই বিজ্ঞাপনচিত্রেও উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় শাহেদ আলীর। কিছুদিন আগে সুপারক্রিট সিমেন্টের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। বিজ্ঞাপনের কাজটি একান্ত ভালোলাগা থেকে করেন এ অভিনেতা। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো নির্মাতা কিংবা পণ্যের ওপর গুরুত্ব দেন। শাহেদ আলী বলেন, বিজ্ঞাপনের কাজটি আসলে ভালো লাগলে করি। নির্মাতা ও পণ্য কি সেটার ওপর নির্ভর করে কাজটি করবো কিনা। মিডিয়ায় দীর্ঘদিনের পথচলা শাহেদ আলীর। এতটা সময়জুড়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতাই হয়েছে। কেমন যাচ্ছে বর্তমান অবস্থাটা জানতে চাইলে বলেন, এখন মার্কেটের অবস্থা তো সবারই জানা। ভালো-মন্দ মিলিয়ে কাজ হচ্ছে। অনেক চ্যানেল হয়েছে। প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। তবে আমি আমার অবস্থান থেকে বলতে পারি, ভালো কাজ ছাড়া অভিনয় করি না। অভিনয়ের ব্যাপারে আমি বরাবরই একটু সিরিয়াস। তাই বুঝে শুনে কাজ করার চেষ্টা করি। এটা ঠিক, নাটকে বর্তমানে যে সমস্যা চলছে তা স্থায়ী নয়। ভালো সময় আবারও ফিরে আসবে। অনেকেই বলেন, দর্শক ভারতীয় চ্যানেলের কারণে দেশি চ্যানেল দেখা থেকে সরে আসছেন। বিষয়টির সঙ্গে শাহেদ আলী কতটুকু একমত? তিনি বলেন, অন্যদের দোষ দিয়ে লাভ কি? আগে নিজেকে ঠিক করতে হবে। এর মানে এই নয়, আমরা মেধাশূন্যতায় ভুগছি। ভালো কাজ করার জন্য যথেষ্ট মেধাবী রয়েছে। কিন্তু সুষ্ঠু নিয়মনীতির অভাবে আমাদের কোয়ালিটি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। চ্যানেলগুলোর মধ্যে কোনো নিজস্বতা নেই। পাশের দেশে দেখুন, ওদের চ্যানেলগুলোর কিছু নিয়ম নীতিমালা রয়েছে। সিরিয়াল কিংবা রিয়েলিটি শো-নির্ভর চ্যানেলগুলোতে শুধু ওই ধরনের অনুষ্ঠানই প্রচার করা হচ্ছে। খবরের চ্যানেল ওদের আলাদা। এমনকি বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রেও নিয়ম-কানুন রয়েছে। আমাদের এখানে সেসবের দিকে নজর নেই কারোরই। দর্শকের কথা চিন্তা করছে না কেউ। আমি নিজেই যখন রাতে টিভি দেখতে বসি, চ্যানেল খুললেই দেখা যায় সব টকশো চলছে। কোনো নিয়মনীতি নেই। এসব দেখে নাটক দেখার উৎসাহ হারিয়ে ফেলি। এতসব সমস্যা থাকলেও সুষ্ঠু পরিকল্পনা করলে টিভি মাধ্যমের চলমান সমস্যা অচিরেই কেটে যাবে বলেও প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন শাহেদ আলী।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.