অবশেষে রানের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ। প্রথম দিকে ব্যাটসম্যানরা ধুকতে থাকলেও শেষ দিনে চার ইনিংসেই রান ওঠে ১৬০-এর বেশি। ১৩ খেলার মধ্যে সাতটি আগে ব্যাট করা দল জয় পেয়েছে আর ছয়টিতে পরে ব্যাট করা দল জিতেছে। সবচেয়ে বড় ৯ উইকেটের ব্যবধানে পরপর দুই খেলায় জিতেছে রংপুর রাইডার্স। তবে তারাই আবার ঢাকার কাছে সবচেয়ে বড় ৭৮ রানের ব্যবধানে হেরেছে। ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ১৯৪ রান করেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। সবচেয়ে বেশি রান উঠেছে বরিশাল-রাজশাহী খেলায়। বরিশালের ১৯২ রানের জবাবে রাজশাহী আউট হয় ১৮৮ রানে। এর পরে বেশি বেশি রান ওঠে ঢাকা-কুমিল্লার খেলায়। খুলনা সবচেয়ে নাটকীয় দুটি জয় পেয়েছে মাত্র ৩ ও ৪ রানের ব্যবধানে। দুটিতেই শেষ ওভারে বল হাতে চমক দেখান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর এ ১৩ খেলায় নতুন নজরকাড়াদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার মেহেদি মারুফ। রাজশাহীর মেহেদি হাসান মিরাজ খেলার তেমন সুযোগ না পেলেও সাব্বির রহমান দেখিয়েছেন তার ব্যাটিং দাপট। জাতীয় তারকাদের মধ্যে মুশফিক আছেন ফর্মে। আর বাদ পড়াদের মধ্যে শাহরিয়ার নাফীস চার খেলায় সেরা ব্যাটসম্যান। নাসির হোসেনও রান পাচ্ছেন ভালো। তবে ব্যাটিংয়ে দেশি ব্যাটসম্যানরাই এখন পর্যন্ত এগিয়ে। রান সংগ্রহে সেরা পাঁচজনই দেশের। তবে এ আসরে ভালো মানের বিদেশি খেলোয়াড় না থাকাই এর কারণ। ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়রা কোন মানের তা তাদের পরিসংখ্যানই বলে দেয়। বোলিংয়ে পেসার শফিউল আছেন সবার ওপরে। যদিও ম্যাচসেরা বোলিং নৈপুণ্যটা বাদপড়া পেসার আবুল হাসানের। বাংলাদেশের স্পিনাররা ভালো করতে পারছেন না। বেশি উইকেট পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই বিদেশি আফ্রিদি, নবী আর জুনাইদ। এর মধ্যে আফ্রিদি লেগ স্পিনার আর নবী অফ স্পিনার। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ঢাকার প্রথম পর্ব শেষে ঢাকা ডায়নামাইটসই পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স সবার নিচেই। সোমবার রাতে তাদের চতুর্থ খেলাতেও কুমিল্লা হেরে যায় সাকিব আল হাসানের ঢাকার কাছে। ওই খেলায় টসে জিতে কুমিল্লার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ঢাকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে বিপাকে পড়ে যায়। ঢাকা ১৯৪ রানের বিশাল ইনিংস গড়ে কুমিল্লার সামনে কঠিন এক লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে দেয়। জবাবে তারা ১৬১ রান তুলতে সক্ষম হয়। আর এতে মাশরাফির অবদানই ৪৭ রান। মূলত বোলার মাশরাফিই ৯ নম্বরে নেমে এ রান করেন ৩৫ বলে। এর মধ্যে ছক্কা হাঁকান পাঁচটি আর চার দুটি। তৃতীয় ম্যাচ হারের পর কুমিল্লার দলে অন্তদ্বন্দ্বের খবর বেরোয়। চতুর্থ খেলাতেও হারের পর তাদের ভেতরের খবর জানা যায়নি। তবে তাদের এক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে নতুন করে শুরু করতে চান তারা। দলে শান্তি নেই চিটাগাং ভাইকিংসেও। তারা কমিল্লার চেয়ে তুলনামূলক বেশ ভালো দল গড়েও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাচ্ছে না। চার খেলায় মাত্র একটি জয় দেখেছে তারা। তামিম ইকবালের নেতৃত্বে দলটি গত আসরেও সুবিধা করতে পারেনি। চট্টগ্রামে নিজেদের দর্শকদের সামনে কেমন করবে তারা তা নিয়ে কর্মকর্তারা চিন্তিত। তবে মাশরাফি তামিম দুজনই মনে করেন এখন ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। সবচেয়ে বড় চমক এখন পর্যন্ত বরিশাল বুলসের। তারা ঢাকার খুব কাছাকাছিই আছে। খুলনা টাইটান্সও পিছিয়ে নেই। রংপুর প্রথম দুই খেলায় জয় পেলেও তৃতীয় খেলায় হেরে গেছে। রাজশাহী ভালো খেলেও জয়ের নাগাল পাচ্ছে না। তারা শেষ ওভারে এসে হেরে গেছে খুলনা ও বরিশালের কাছে। ডাবল লীগ পদ্ধতির এ আসরে অর্ধেকের বেশি খেলা বাকি প্রতি দলের। তাই এখনই সেরা চারে থাকা নিয়ে কারও নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই। ঢাকায় ৮ই নভেম্বর শুরু হয় খেলা। ১৭ তারিখ হতে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু হয়ে চলবে ২২শে নভেম্বর পর্যন্ত। ২৫শে নভেম্বর থেকে শুরু হবে ঢাকার দ্বিতীয় পর্ব।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.