বছরের এ সময়ে অনেকে নানা অসুখে ভোগেন। এর মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে সিজনাল অ্যাফেকটিভ ডিসঅর্ডার বা ‘এসএডি বা স্যাড’ সমস্যা। স্যাড হচ্ছে একধরনের বিষণ্নতা রোগ।
এ সমস্যাকে অনেকেই শীতকালীন বিষণ্নতা (উইন্টার ডিপ্রেশন বা উইন্টার ব্লুজ) বলে থাকেন। কারণ, শীতের ভাব শুরু হলে সূর্যের আলো কমতে শুরু করায় মানুষের মেজাজ মারাত্মক রকম পরিবর্তন হয়ে যায়। এ সময় নানা রকম বিষণ্নতার উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে।
অনেক সময় এটাকে গ্রীষ্মকালীন বিষণ্নতা বা মৌসুমি বিষণ্নতা বলা হয়। তবে বসন্ত বা গ্রীষ্ম মৌসুমে এ ধরনের ‘স্যাড’ উপসর্গে খুব কম মানুষ ভোগেন। তবে এ সমস্যা কেন হয়, এর সঠিক কারণ এখনো নির্ণয় করতে পারেননি গবেষকেরা। তাঁরা ধারণা করেন, স্যাড সমস্যার ঝুঁকি বাড়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এ সমস্যা মূলত তরুণীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। যাঁদের পরিবারে বিষণ্নতার সমস্যা আছে, তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাঁরা বিষুবরেখা থেকে দূরে অবস্থান করেন, তাঁদের এই শীত-বিষণ্নতা পেয়ে বসে। অবশ্য সবার ক্ষেত্রে একই রকম উপসর্গ দেখা যায় না। স্যাড সমস্যার ভুক্তভোগী হঠাৎ করে বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তায় ভুগতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে আশাহত আবেগ কাজ করে। কোনো কাজে মনোযোগ বসাতে পারেন না। ঘুমে পরিবর্তন দেখা যায়। বেশি ঘুম বা না ঘুমানোর যেকোনো একটি সমস্যা তৈরি হয়। কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার বেশি খেতে ইচ্ছা করে বলে ওজন বাড়তে থাকে। দুর্বল লাগে। নিজেকে পরিবার, বন্ধু ও সামাজিক কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। যৌনস্পৃহা কমে আসে। মনে আত্মহত্যার ঝোঁক চেপে বসে। শরীর অবসন্ন ও ক্লান্ত দেখায়। চোখ মেলতে ইচ্ছা করে না। এ ধরনের বিষণ্নতা শীতে শুরু হয়ে গ্রীষ্মের শুরু পর্যন্ত চলতে থাকে।
গবেষকদের ধারণা, সূর্যের আলো কমে যাওয়ার কারণে এসএডি সমস্যা হয়। উজ্জ্বল আলোয় দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় কাটালে এ ধরনের বিষণ্নতা থেকে মুক্তি মিলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, কোনো কোনো সময় সাধারণত মন খারাপ বা দুঃখভাব চলে আসতে পারে। কিন্তু অনেক দিন ধরে বিষণ্নতা চলতে থাকলে এবং কোনো কিছুতে মন বসাতে না পারলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ‘স্যাড’ সমস্যা দূর করতে চিকিৎসা হিসেবে লাইট থেরাপি, ওষুধ ও সাইকোথেরাপি ব্যবহার করা হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.