নষ্ট মনের প্রবাসীর কষ্টের জীবন
এক জন প্রবাসী তার প্রথম জিবনে পিতা মাতা ভাই বোন নিয়ে সুখী হতে চেয়েছিল।তার যৌবনে অর্থ সামর্থ দিয়ে চেষ্টা করেছিল একটি সুন্দর ও সুখী পরিবার গড়তে। পিতা মাতার নিন্ম মধ্য বিত্ত পরিবারের জীবন যুদ্ধের এক লড়াকু সৈনিক ও ছিলো। ছিলো বাবা মায়ের ডানপিঠে ছেলে।জিদ্দি ছেলে,আদরের ছেলে।জীবনের প্রথম আয়ের অর্থ বিলিয়েছে আপন জনের মাঝে অকাতরে।সবার মুখে হাসি দেখতে চেয়েছিলো। ছোট ভাইকে নিয়েও দেখেছিলো এক রঙিন স্বপ্ন। যদিও সহযোগিতার মাঝেও ছিলো হাসি তামশা ঠাট্টা মস্করার ছাপ ,কাউকে কিছু দিলে দশ কথা শোনানোর অভ্যাস ,সবাই মেনে নিয়ে ছিলো তার স্বভাবের অংশ হিসাবে,হাসি কান্না আনন্দ বেদনায় চল ছিলো জীবন ,কিন্তু বিয়ের কয়েক বছর পর বদলে গেল দৃশ্য পট।
এখন তার পিতা মাতা ভাই বেরাদার আত্বীয় স্বজন সবাই তার শত্রু.,সর্ব ক্ষেত্রে সন্দেহ ,তার জীবন সাথী ছাড়া আর কাউকেই বিশ্বাস করে না সে,তিলকে তাল করা ,জঘন্য মিথ্যার আশ্রয়ে নিজের যুক্তি তর্ককে প্রমান করাই যেন তার জীবনে এক মাত্র লক্ষ্য।চোখের সামনের অপরাধ তার চোখে পড়ে না।মায়ের সাথে উদ্যত আচরণের করে না প্রতিবাদ . সর্ব ক্ষেত্রে মাতা পিতার দোষ খুঁজে পায় সে ।অতি দরদে, ঘর ভাঙ্গনের ঝড় ও তুলেছিলো অন্যের জীবনে।বউকে তার বাপের বাড়ী রেখে চলে গেল আবার সেই প্রবাস। এ এক দুরভাগা নষ্ট মনের প্রবাসীর, আপন জনের ভালবাসা বঞ্চিত প্রবাসীর ছুটির উপখ্যান।ছুটির কটা দিন যে নিজে ছিলো অমানুষিক যন্ত্রনায়।অন্যদের দিয়েছে পাহাড় সম কষ্ট আর পরিবারকে রেখেছিলো নগ্ন দেহে গরম তাওয়ার উপর
এক প্রবাসী সপ্ন ভাংলো নিজের, ক্ষতি করে গেলো অনেক আপন জনের। বাধা গ্রস্ত করলো সামনে এগিয়ে যাবার পথ। স্বপ্ন ভাংলো কারো স্বপ্নের শুরুতে।এক দিন হয়তো এই প্রবাসী ফিরে আসবে আপন জনের কাছে,তখন হয়ে যাবে অনেক দেরী। যে পিতার হাত ধরে প্রথম পথ চলা সে পিতার চোখে অস্রু এনেছে সে, উম্মাদ করেছে কথার বানে বার বার ,যে মায়ের গর্ভে তার জন্ম সে মাকে কাঁদিয়েছে অঝরে।দেখলাম মায়ের দুধের সাথে এক নগ্ন বেইমানি। তার পিছনের রহস্য রহস্যই রয়ে গেলো। যে ছেলে ঈদে ,অনুষ্ঠানে আত্বিয় স্বজনদের নাখোশ করেনি যার চোখে ছিলো এক স্বপ্নিল ভবিষ্যত সামান্য কিছু কথা আর মতের অমিলেই এত সহজে জীবন গাড়ী উল্টো রথে । কি থাকতে পারে এর পিছনে।
ধন্যবাদ হে প্রবাসী।শুভ হোক তোমার একাকী পথ চলা।ভালো থেকো প্রবাসের কষ্টের জীবনে নষ্ট মন নিয়ে। পিতা মাতার আভিশাপ থেকে আল্লাহ তোমাকে বাঁচালে বাঁচাতে ও পারেন, কারন পিতা মাতা সন্তানের প্রতি কষ্ট প্রকাশ করেন মুখ থেকে আর দোয়া করেন অন্তর থেকে।তবে প্রবাসী সত্যি তুমি এক দুর্ভাগা ।যাবার বেলায় মায়ের আঁচলের স্পর্শ তোমার ভাগ্যে জোটেনি। পাওনি মাথায় হাত রেখে দীর্ঘজীবী হওয়ার দোয়া ,মায়ের কোলে মাথা রেখে ফেলতে পারোনি ক ফোটা চোখের জল। পাওনি পিতার চুম্বন তোমার কপালে,পেলেনা বিমান বন্দরে ভাইয়ের শেষ আলিংগণ ,যার ভালবাসার আবেগের ছোয়ায় থাকতে প্লেনের ভিতর পুরুটা সময়।
বিজিত হতে এসে পরাজিত হয়ে গেলে প্রবাসী।অর্থই অনর্থের মূল ।ভালবাসায় জয় করা যায় পৃথিবীকে, ধৈর্যের মত মহত গুন থাকা উচিত প্রতিটি মানুষের , সংসার জীবনে করতে হয় আপোষ তাই বলে পিতা মাতার সাথে ,মায়ের দুধের সাথে বেইমানী করে নয়. ভালবাসার থাকে প্রকারভেদ,স্ত্রী তার ভালবাসার পাবার অধিকার রাখে ,মা বাবাকে অপমান করে নয়.
নিজের ভুল গুলিকে দেখতে হবে পূর্বে তার পর অন্যের। একের প্রতি অপরের থাকতে হবে শ্রদ্ধা বোধ ,থাকতে হয় ক্ষমা করার ক্ষমতা।তাহলে চলা যায় অনেক দিন এক সাথে অনেক দূর.মৃত্যুর সময় প্রয়োজন পড়ে এক মুঠো মাটির গোলা। রক্তের টানে ফিরে আসে মানুষ আপন জনের কাছে,যত দুরেই থাকুক সবাই ফিরে আসে শেকড়ে। প্রিয় জন আপন জন থেকে দুরে থাকার কষ্ট প্রবাসীরাই জানে। পিতা মাতা উম্মাদ হলেও তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা যাবে না ,বলে দিয়েছে ইসলাম। আদর ভালবাসায় অসঙ্গতি দূর করা যায় সকলের সাথে ,এর জন্য কারো তাবেদারী নয় ইচ্ছা শক্তি যথেষ্ট .
এক বুক জ্বালা নিয়ে নিজের সৃষ্ট তুষের আগুনের যন্ত্রনায় ফিরলে কাল বৈশাখীর ঝড়ের ছুটির কয়েক মাস,যার জন্য বেশিরভাগ ই দায়ী তুমি নিজেই । যদি কেউ কোথাও ভুল করে থাকে ক্ষমা করলেও পারতে। আর যদি কেউ মনের অজান্তে তোমাকে দিয়ে থাকে বেদনা সেও একদিন পাবে তার সাজা। তোমার নিজের বিবেক আজ তালা বন্ধী কোন এক লোহার বাক্সে ,গহীন জঙ্গলে কিংবা অথৈ সাগরে।যার চাবি খুঁজতে পাড়ি দিতে হবে তোমাকে অনেক লম্বা পথ, নয়তো কাটবে তোমার জীবন নিসঙ্গ একাকী। যাদের কু মন্ত্রণায় কষ্ট দিলে নিজের পিতা মাতাকে ,তারা হয়তো নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করে নিবে ,এমন ও হতে পারে হারাতে পর নিজের কবরের মাটি টুকু।মা বাবার বদ দোয়া বড়ই কঠিন। ভালো থেকো ,প্রবাস থেকে আরেক প্রবাসীর এই দোয়া।
মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বাবু ,সিঙ্গাপুর প্রবাসী
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.