পরীক্ষার হলে সবাই বেঞ্চে বসে হাকে কলম নিয়ে খাতায় লিখে যাচ্ছে প্রশ্নের উত্তর। তাদের পাশেই একজন। সে লিখছে। তবে হাতে কলম নেই, টেবিলের ওপর নেই খাতাও। বিশেষ কৌশলে বেঞ্চের ওপর খাতা রেখে সেখানেই বাম পায়ের দুই আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে মনোযোগ দিয়ে লিখে যাচ্ছে সে।
ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় সিংড়া দমদমা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এভাবেই অন্য সবার সঙ্গে পরীক্ষা দিচ্ছে শারীরিক প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা (১১)। শারিরীক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি তাকে।
সিংড়া পৌর শহরের শোলাকুড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে রাসেল মৃধা। তার দুই হাত ও একটি পা নেই। শুধুমাত্র একটি ছোট্ট পা দিয়েই তার জীবন সংগ্রাম। লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ আর মনের জোরে বাম পায়ে কলম ধরে সে পরীক্ষা দিচ্ছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও হাল ছাড়েননি রাসেলের বাবা-মা। তাকে স্থানীয় শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন। সাথে থাকা রাসেলের মা লাভলী বেগম জানান, তার দুটি সন্তান নিয়ে তিনি জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবন্ধী এই ছেলের বেঁচে থাকার জন্য একটি কর্মই তাদের আশা। সিংড়া দমদমা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা ও পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব বিলকিস আকতার বানু জানান, শুধু ছোট্ট একটি পা দিয়ে পরীক্ষা দেয়াটা সকলকে বিস্মিত করে তুলেছে। তার জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ অতিরিক্ত সময়ও বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন জানান, এটা একটা আশ্চর্যজনক বিষয়। ছেলেটির হাত নেই। একটি পা নেই। তারপরও ছোট্ট একটি পা দিয়ে সুন্দর ভাবে লিখে সে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার অদম্য স্পৃহা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি কেন্দ্র পরিদর্শন করে তার জন্য সফলতা কামনা করেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.