নামের সঙ্গে যুক্ত আছে লাকি শব্দটি। তাই বুঝি যেখানে হাত দেন তিনি সফলতা পান। বলা হচ্ছে শারমিন লাকির কথা। মডেল ও উপস্থাপিকা হিসেবে সবাই তাকে চিনে থাকলেও বহু গুণের অধিকারী তিনি। নেপথ্যে থেকে বিজ্ঞাপনের ভয়েস ওভারেরও কাজ করেন প্রচুর। বিশেষ দিবস এলে তিনি কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নেন। এছাড়া আরটিভিতে তার উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচার হয় রূপচর্চা বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘লাক্স ব্রাইডাল শো’। বিভিন্ন পরিচালকের নির্দেশনায় শারমিন লাকি ‘ইগলু ফিরনি’, ‘বেঙ্গল প্লাস্টিক’, ‘আরসি’সহ আরো বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। তবে মডেল হিসেবে কাজ করলেও তাকে অভিনয় করতে দেখা যায়নি কোনো নাটক বা চলচ্চিত্রে। অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও তা ফিরিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে শারমিন লাকি মানবজমিনকে বলেন, সত্যি বলতে নাটক-সিনেমায় এখনো প্রস্তাব পাচ্ছি। তবে অনেকবারই অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও না করেছি। কারণ বার বার মনে হয়েছে অভিনয় আসলে আমার জন্য না। আর অভিনয় আমার কোনো কালেই টার্গেট ছিল না। মঞ্চ নাটক দেখেই তার বড় হয়ে ওঠা হলেও লাকি বলেন, অভিনয় অনেক কঠিন একটি কাজ। এটা আমার দ্বারা করা সম্ভব নয়। অনেক আগে থেকেই আমার কাছে অনেক ভালো ভালো কাজের প্রস্তাবও এসেছিল। কিন্তু যেহেতু আমি অভিনয় ভালোভাবে করতে পারব না, তাই করিনি। তবে এসএ টিভিতে অভিনয়ের আঙ্গিকে ‘হঠাৎ একদিন’ অনুষ্ঠানে শারমিন লাকি, তার স্বামী খন্দকার নজরুল ইসলাম ও কণ্ঠশিল্পী শাহেদকে একবার দেখা গেছে। এখানে কথা বলার ফাঁকে কিছুটা অভিনয় দেখাতে হয়েছিল তাদের। সেটাও অবশ্য অল্পক্ষণের জন্য। সমপ্রতি ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী পণ্ডিত ড. বালমুরালি কৃষ্ণ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্রে ভয়েস দিয়েছেন শারমিন লাকি। এবারের ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব-২০১৬’ এ তা দেখানো হচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত কর্পোরেট ইভেন্ট ও সম্প্রতি মেয়র আনিসুল হকের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’-এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেছেন তিনি। এদিকে নতুন বছরের শুরুতে এনটিভিতে ‘রূপচাঁদা-ডেইলি স্টার সুপার শেফ প্রতিযোগিতা’ অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবেও কাজ করতে যাচ্ছেন শারমিন লাকি। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, আসছে জানুয়ারিতে মাস জুড়ে এফডিসিতে এই অনুষ্ঠানের নতুন পর্বের জন্য শুটিং শুরু হবে। অন্যদিকে তার উপস্থাপনায় ‘লাক্স ব্রাইডাল শো’ এরইমধ্যে দুইশ’র বেশি পর্ব পার করেছে। এই অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে তিনি বলেন, জনপ্রিয়তার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে বলে আমি মনে করি। কারণ এখন সময় পাল্টেছে। আগে বিয়ে এবং রূপচর্চা নিয়ে মানুষ খুব বেশি সচেতন ছিল না। এখন বিয়ের অনেক আগে থেকেই সাজসজ্জা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানটি দর্শকদের বিয়ে সংক্রান্ত অনেক সমস্যা সহজ করে দিয়েছে। কবিতা আবৃত্তির প্রতি ভালো লাগা আগের মতোই আছে শারমিন লাকির। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, আবৃত্তি আমার ভালো লাগার অন্যতম অনুষঙ্গ। আগে ‘এ সময়’-এর সঙ্গে আমি নিয়মিত কাজ করতাম। প্রয়াত নরেন বিশ্বাস, প্রদীপ ঘোষ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, আলী যাকের, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও আসাদুজ্জামান নূরের মতো গুণী ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিখেছি আবৃত্তি কতটা নান্দনিক করে তোলা যায়। সে কারণে হয়তো চাইলেও আবৃত্তি থেকে বিরত থাকতে পারব না। এত কাজ করার পরও রয়েছে তার অপূর্ণতা। এ প্রসঙ্গে শারমিন লাকি বলেন, অনেক অপূর্ণতা আছে আমার। বিষয়ধর্মী কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। টক শো ধরনের না। ধরা যাক, বাংলাদেশের ২০টি বড় নদী নিয়ে কাজ। সপ্তাহে একটা করে ২৬ পর্বের অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিলাম। থিমেটিক বা গবেষণামূলক কাজ করতে পারিনি। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রথমে ডাকে, তারপর আর শেষ পর্যন্ত বাজেট না মেলার কারণে করা হয়ে ওঠে না। ফালতু অনুষ্ঠান করতে চাই না। প্রাণের কাজ করতে চাই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.