ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে তার দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে প্রশাসন। গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ডাকা লাগাতার ধর্মঘটও সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ডাকা ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনসহ ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে দিয়াজের মা কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এর প্রেক্ষিতে টানা লাগাতার ধর্মঘট পালন করে আসছে দিয়াজের অনুসারীরা। তারা প্রক্টর আনোয়ারের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি পেশ করে প্রশাসনের কাছে। তার মধ্যে রয়েছে- দিয়াজ ইরফান চৌধূরী হত্যার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আদালতের নির্দেশে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্তের স্বার্থে প্রক্টরিয়াল বডি থেকে সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনকে অপসারণ, সব আসামির দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, পূর্বের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বাতিল করে স্বচ্ছতার সঙ্গে নতুন ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেশ এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলার তদন্তে যাতে কোনো ধরনের ব্যাঘাত না ঘটে সে জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেহেতু শিক্ষক আনোয়ারকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তাই স্বচ্ছতার জন্য তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়া হলো। গত ২০শে নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে নিজ কক্ষের দরজা খোলার জন্য অনেক ডাকাডাকি করেন তার মা। একপর্যায়ে কোনো ধরনের সাড়া না পেয়ে পড়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় জানালা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ দেখতে পাওয়া যায়। এরপর স্থানীয় হাটহাজারী থানা পুলিশ গিয়ে রাত ১০টায় তার মরদেহ উদ্ধার করে। দিয়াজের মা শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তার পুত্র হত্যার বিচার চাইবেন বলে জানিয়েছিলেন। তার কাছেই তিনি কারা জড়িত, কেন খুন করা হয়েছে- সব বিষয় তুলে ধরবেন। যদিও পুলিশ দিয়াজের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে জানিয়েছিল। অন্যদিকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেও তাকে খুন করার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজের পরিবার দাবি করেছে, তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঁচড়ের দাগ রয়েছে। ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে মৃত্যু হওয়ার পর তার লাশ নামানোর সময় দেখা যায় এক পা খাটের সঙ্গে লেগে ছিল। তাছাড়া কনুইয়ের নিচে কালচে দাগ রয়েছে। ছাত্রলীগের একটি পক্ষ ৯৫ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে ভাগবাটোয়ারায় দিয়াজকে বাধা মনে করে এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তারা জানান।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.