আজকাল অনেকেই ঘরের ভেতরে হাঁটা-দৌড়ানোর যন্ত্র বা ট্রেডমিল কিনে ব্যায়াম করে থাকেন। কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, ঘরে ট্রেডমিলে হাঁটা ভালো, নাকি ঘরের বাইরে? এর উত্তরটা ঠিক স্পষ্ট নয়। কেননা ক্যালরি খরচ, মাংসপেশির ব্যবহার এবং হৃৎস্পন্দন বা শ্বাস-প্রশ্বাসের হার—সবই প্রায় সমান হতে পারে। তবে সামান্য কিছু পার্থক্যও আছে: * ট্রেডমিলে হাঁটলে বা দৌড়ালে কোমর বা ঊরুর মাংসপেশির চেয়ে বেশি কাজ করে পায়ের কোয়াড্রিসেপস মাংসপেশি। সাধারণ হাঁটা বা দৌড়ে এই পার্থক্য নেই। তাই ট্রেডমিলে হাঁটার সময় এই বিশেষ ভারসাম্য শিখে নিতে হয়, নয়তো আঘাতের ঝুঁকি থাকে। * বাইরে হাঁটার সময় আমাদের বাতাসের গতির বিরুদ্ধে কাজ করতে হয়। পথে বা রাস্তায় বাঁক থাকে, পথ মসৃণ বা অমসৃণ থাকতে পারে, পায়ের নিচে বালু, ইট, পাথর এড়িয়ে যেতে হয়। এই সবকিছু মিলে গবেষকেরা বলেন, বাইরে হাঁটলে শরীর, স্নায়ুতন্ত্র, ইন্দ্রিয় যতটা তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে, ট্রেডমিলে তা সম্ভব নয়। * বাইরে, বিশেষ করে পার্কে হাঁটলে প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়া যায়, যা মনের স্বাস্থ্যের জন্য উত্তম। এ ছাড়া শরীরে সূর্যের আলো লাগে, যা থেকে আমরা ভিটামিন ডি পাই। চোখের সামনে উদ্দেশ্য বা সমাপ্তি রেখা থাকে, যা মনকে উদ্বুদ্ধ করে। * আধুনিক ট্রেডমিলে হৃৎস্পন্দন, দৌড়ের গতি বা ক্যালরি ক্ষয়ের হিসাব প্রতি মুহূর্তে পাওয়া যায়। এতে আপনি লক্ষ্যে পৌঁছেছেন কি না জানতে পারেন। যাঁরা দৌড়বিদ, তাঁরা ট্রেডমিলে চর্চা করলে নিজের গতি মাপতে পারবেন। * আবহাওয়া খারাপ থাকলে বাইরের চেয়ে ট্রেডমিলই ভালো। যাঁদের বাইরে হাঁটার জায়গা নেই বা সুযোগ সেই, তাঁরা এই যন্ত্রের ওপর হাঁটতে পারেন। তবে মোট কথা হলো, হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম বা হাঁটার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। বাইরেই হোক, কি ঘরের ভেতর, এইটুকু সম্পন্ন করার চেষ্টা কখনোই ছাড়বেন না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.