জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, সাবেক মেরুদণ্ডহীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) আর চাই না। আশা করি, সার্চ কমিটি এমন একজন ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সুপারিশ করবে, যিনি মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তি হন। নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রেসিডেন্টের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এরশাদ বলেন, সার্চ কমিটি যাতে এমন নির্বাচন কমিশন গঠন করে যা সমস্ত বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকে। গতকাল দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করার সময় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আজই সম্ভাব্য ৫ ব্যক্তির নাম দেয়া হবে। আর যাদের নাম দেয়া হবে ইতিমধ্যে তাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে এরশাদ বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। ফলে তাদের নির্বাচন করতেই হবে। এ সময় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঁচজনের নামের তালিকা চাওয়ার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গত রোববার তিন দিনের সফরে রংপুরে আসেন। বিকালে দর্শনার পল্লী নিবাস বাসভবনে নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রস্তুতি নেয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির ঘাঁটি রংপুর অঞ্চলের ২২টি আসনে জয়ী হতে হবে। বিএনপি আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না। তারা আন্দোলন করতে পারছে না বিধায় ক্ষমতায়ও আসতে পারবে না। আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা বিএনপিকে ভোট করতে দেবে না। আগামী নির্বাচনের লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে। জাতীয় পার্টি একটু শক্তি অর্জন করতে পারলেই ক্ষমতায় যাবে। তাই দলের সকল বিভেদ ভুলে হাতে হাত মিলিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার আহ্বান জানান তিনি। বলেন বর্তমানে দেশের অবস্থা ভালো না। সুন্দরগঞ্জের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এটা বড় দুঃখজনক। এতে বোঝা যায় দেশ কোন্ অবস্থার মধ্যে চলছে। দেশের মানুষ আর সরকারি দলকে চায় না। তাই আমরা সুন্দরগঞ্জে উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেবো। প্রয়োজনে সেখানে যাবো, সমাবেশ করবো। তিনি নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, জাতীয় পার্টির শক্ত প্রার্থী না থাকায় সেখানে প্রার্থী দেয়া হয়নি। কারণ প্রার্থী দিয়ে কোনো হাস্যরসের কারণ হতে চাই না। যোগ্য নেতা তৈরি করে সবখানে প্রার্থী দেয়া হবে। আগামী নির্বাচনে ৩ শ’ আসনে যোগ্য প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হতে হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমি অনেক জায়গায় সভা-সমাবেশ করেছি। সেখানে দেশের সাধারণ মানুষের ভাষা থেকে বুঝেছি আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কোথায় গেছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক জীবনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দু’দলই তার সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে। আমাকে জেল-জরিমানা করেছে। দেশের মানুষ আমাকে নতুন জীবন দিয়েছে। আমি শৃঙ্খল মুক্ত নই। যার কারণে অনেক কিছু করতে পারি না। তবে এতটুকু বুঝেছি জাতীয় পার্টি নিন্দিত নয় জননন্দিত। আগামীতে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে জাতীয় পার্টির জয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.