প্রতীকী ছবিটি এনডিটিভি থেকে নেওয়া
‘বউ বদল খেলার’ ছলে সহকর্মীর স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় নৌ-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এক নৌ-কর্মকর্তার স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ঘটনাটি তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্ত দল (স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ টিম-এসআইটি) গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্যাতিতা ওই নারীর দাবি, শুধু তিনি নন, এই ঘটনা বেশির ভাগ সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীদের জীবনে ঘটে থাকে।
তদন্তে প্রভাব বিস্তার করতে পারে এমন আশঙ্কায় ঘটনাটির সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন নৌ-কর্মকর্তার স্ত্রী। কিন্তু আদালত সেই দাবি নাকচ করে দিয়ে পুলিশকেই তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। পাশাপাশি মামলাটি কেরালা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরেরও দাবি জানিয়েছিলেন ওই নারী। কিন্তু আদালত তাও নাকচ করে দেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভিতে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার শুরু ২০১৩ সালে। ওই বছরের ৪ এপ্রিল নৌ-কর্মকর্তার স্ত্রী এ অভিযোগটি আনেন। বিয়ের এক বছর পর ২৬ বছর বয়সী ওই নারী তাঁর স্বামী, স্বামীর চার সহকর্মী এবং আরেক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দাখিল করেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে তাঁর ওপর নৃশংস অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেন, পাঁচ নৌ-কর্মকর্তা এবং তাঁদের একজনের স্ত্রী তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। নৌ-কর্মকর্তারা হরহামেশাই ‘স্ত্রী অদল-বদল খেলা’ বা ‘ওয়াইফ সোয়্যাপ’-এর ছলে এ কর্মটি করে থাকেন।
ঘটনার বিবরণে বলা হয়, বিয়ের পরে স্বামীর কর্মস্থল কেরালা রাজ্যের কোচিতে ছিলেন ওই নারী। সেখানেই তাঁকে যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয়।
আদালতে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, স্বামীর কর্মস্থানে নিয়মিত ‘বউ বদল’ পার্টি হতো। প্রথমে তিনি এই ঘটনাটি সম্পর্কে জানতেন না। একদিন তিনি আরেক কর্মকর্তার স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন।
অভিযোগ করা হয়‚ এরপরই ওই নারীর ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। প্রথমে তাঁর স্বামী তাঁকে জোর করেন ‘বউ অলদ-বদল খেলায়’ অংশ নিতে। কিন্তু স্বামীর এই কথায় রাজি না হওয়ায় স্বামীর উসকানিতে তাঁর চার সহকর্মী তাঁকে ধর্ষণ করেন।
এরপর মুখ বন্ধ করার জন্য তাঁকে পাগল প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন স্বামী‚ দাবি নির্যাতিতার।
এই নির্মম অভিজ্ঞতা নিয়ে তরুণী প্রথমে কোচি বন্দর থানার পুলিশের কাছে যান। কিন্তু পুলিশ এই অভিযোগটি নেয়নি। এরপর তিনি যান ভারতীয় নৌবাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার এবং শেষে নৌবাহিনীর প্রধানের কাছে।
কিন্তু কেউ ওই নারীর অভিযোগটি শুনতে চাননি। শেষে তিনি প্রতিরক্ষা দপ্তরে অভিযোগটি করেন। এরপরই টনক নড়ে সরকারের। তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি এই ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
সবশেষ ওই নারী আদালতের দ্বারস্থ হন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.