স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছাড়া দেশে স্থানীয় বা জাতীয়, কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও দেশে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়নি। এটি আমাদের ব্যর্থতা। গতকাল শনিবার ফরিদপুরে ‘নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে এই অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা। শহরের এক রেস্তোরাঁয় এই সংলাপের আয়োজন করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, ফরিদপুর। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ। শ্যামা ওবায়েদ বলেন, দুঃখজনক হলেও এ কথা সত্য, স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও দেশে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়নি। এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ত্রুটি-বিচ্যুতিই দায়ী। তবে আশার কথা, ১৮ নভেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়ে গণতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বিএনপির এ প্রস্তাবকে শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন এক-দুজন নেতা ছাড়া সব নেতা-কর্মী স্বাগত জানিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। বিএনপিকে নির্বাচনমুখী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়, তবে তার আগে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতির ব্যাপারে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ঐক্য শুধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে মন্তব্য করে শ্যামা ওবায়েদ বলেন, বিএনপি ও জামায়াত দুটি পৃথক সত্তা ও আদর্শের দল। এ কারণে বিএনপি প্রস্তাব দিয়েছে নিবন্ধনকৃত দল নিয়ে সংলাপের কিংবা স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত সংসদে যেসব দলের প্রতিনিধিত্ব আছে, তাদের নিয়ে সংলাপের। শ্যামা ওবায়েদ বলেন, খালেদা জিয়ার প্রস্তাবে সেনাবাহিনী-সম্পর্কিত বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ ও র্যা বের ওপর মানুষের আস্থা নেই। নির্বাচনের সময় এদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এ জন্য বিএনপি শুধু নির্বাচনকালীন সেনা মোতায়েন এবং ওই সময় সেনাবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ফরিদপুরের আহ্বায়ক আলী আকবর হালদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক এস এম শফিউল আলম, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ বি এম সাত্তার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আসাদুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, বাংলার চোখের ফরিদপুর প্রতিনিধি সাংবাদিক আহমেদ ফিরোজ, ফরিদপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন, তিতুমীর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব হামিদুল হক প্রমুখ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.