ভূটানকে বলা হয় সৌন্দর্যের নগরী । ভূটানে যেতে যেহেতু বাংলাদেশীদের ভিসা লাগে না তাই অসংখ্য পর্যটক প্রতিবছরই ভূটান পাড়ি জমায় । অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে কিভাবে ভূটান যেতে হয় বাই রোডে । আজকের আয়োজনটা থাকছে আপনাদের প্রশ্নগুলোকে কেন্দ্র করে । আশা করি এই লেখনির মাধ্যমে অনেকেই উপকৃত হবেন ।
রাতে শ্যামলী এস.আর বাসে করে ভূটান ঘুরে আসলাম। যাওয়ার আগে শুনতাম ছবির মতো সুন্দর একটা দেশ কিন্তু যাওয়ার পর বুজলাম তার থেকেও সুন্দর গোছানো একটা দেশ ভূটান। এবার আসি বিস্তারিত বর্ণনায়, কিভাবে যাবেন, কই থাকবেন, কি করবেন?
****প্রথমেই ভারতীয় ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হবে যা ঢাকার শুধুমাত্র গুলশান শাখা থেকে করিয়ে নিতে পারবেন। ট্রানজিট ভিসার বিস্তারিত বর্ণনা এই লিংকে। http://travelersofbangladeshandworld.blogspot.com/2016/08/blog-post.html
তারপর আগে থেকে টিকিট করে রাখা শ্যামলী বাসে উঠে পরুন । আরামবাগ থেকে রাত ৮টায় এবং কল্যাণপুর থেকে ৯টায় ছাড়ে। সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা তারমানে পরদিন সকাল ৮টার মধ্যে আপনি বুড়িমারি সীমান্তে। ৯টায় ইমিগ্রেশন অফিস খুললে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে ঢুকে পরুন ইন্ডিয়াতে। ২ সীমান্তের বর্ডারের কাজ শেষ করে আপনার জন্য অপেক্ষারত বাসটিতে উঠে পরুন ।
ভুটানের যাবার জন্য ময়নাগুরি নামক জায়গায় নেমে ১টা লোকাল বাসে উঠে পরুন ভাড়া নিবে ৩০ রুপি। ঐখান থেকে নেমে সাফারি নামের গাড়িতে উঠুন ভাড়া পড়বে ৩০/৩৫ টাকা যা আপনাকে জয়গাও ভূটান-ইন্ডিয়া বর্ডারের কাছাকাছি নিয়া যাবে। এরপর ৭টাকা ভাড়া দিয়ে অটোতে (আমাদের দেশে সিনজি) উঠে চলে যাবেন জয়গাও ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসে এবং এক্সজিট সিল লাগিয়ে সোজা চলে যান ভূটান। মনে রাখবেন ভূটান-ইন্ডিয়া ওপেন বর্ডার, যখন খুশি যাওয়া ও বের হওয়া যায়। কোন সমস্যা নেই। আমার মতে খাওয়া দাওয়ার কাজটা জয়গাও তে সেরে নেয়াই উত্তম হবে।
আমরা Phuntsholing পৌঁছাই বিকেল ৪ টাইয় এবং সেখান থেকে ১টা ৮ সিটের গাড়ি ভাড়া করি এবং সোজা চলে যাই ওদের রাজধানী থিম্পুতে। যেতে যেতে প্রায় রাত ১১:৩০। ও ভালোকথা, বাংলাদেশ এবং ভুটানের সময় একদম এক (GMT+6 ) । আমরা থিম্পুতে Yoesel Hotel 2 তে ছিলাম যার double Bed রুমের ভাড়া ছিল 700 rupee এবং triple Bed রুমের ভাড়া ছিল 9০০ rupee. গোছান, ছিমছাম হোটেল। প্রথম দিনঃ সকালে ঘুম থেকে উঠে পাশের হোটেলের রেস্টুরেন্ট Hotel Choephal Norkye থেকে নাস্তা করে নেই। এখানের খাওয়া মজার। আমাদের প্রথম দিনের নাস্তার আইটেম ছিল Cheese Egg, Parata, Dal Fry & Coffee. আমরা প্রথই দিনই থিম্পু থেকে Punakha নামক শহরে যাওয়ার permit করায় নিসিলাম যেন পরবর্তীতে কোন সময় নষ্ট না হয়।
দ্বিতীয় দিন: যাত্রা এবার পুনাখা। সকাল ১০টায় রওনা দিলাম, ২/২:৩০ ঘণ্টার মতন সময় লাগে পৌছাতে। যাওয়ার পথে Duchala, Punakha Dzhong, এবং Suspension Bridge তো মাথা নষ্ট করে দেয়। আবহাওয়া অন্য শহর থেকে একটু ভিন্ন কিন্তু খুবই উপভোগ্য। কেউ ভূটান গেল, কিন্তু পুনাখা গেল না, তাহলে তার ভূটান যাত্রাই অপূর্ণ। সারাদিন ঘুরে রাতে আবার থিম্পুতে ফিরে গেলাম কারন পুনাখাতে থাকার মতন ভাল হোটেল নেই। আর থিম্পু হয়ে যেহুতু পারো যাওয়া লাগে তাই থিম্পুতে চলে যাওয়াটাই ভাল সিদ্ধান্ত।
তৃতীয় দিন: থিম্পু এবং পুনাখা দেখা শেষে এবার আমাদের যাত্রা স্বপ্নের শহর Paro এর উদ্দেশে। এখানে আমরা ছিলাম Hotel Dragon এ, এটা ইন্ডিয়ান হোটেল খুব সম্ভবত এর মালিক কলকাতার লোক। তাই এখানে সর্ব ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। যেমন; সাদা ভাত, আলু ভর্তা, আলু ভাজি, শুকনা মরিচ দিয়া আলু ভর্তা, খাসির তরকারি, মুরগির তরকারি, সবজি এক কথায় পুরা ১৬ আনা বাঙালি খাওয়া তবে দাম একটু বেশি। তবে কয়েক দিন টানা ফ্রাইড রাইস আর চাউমিন খেতে খেতে আমরা অস্থির হয়ে গেচিলাম। তাই বাঙালি খাবার পেয়ে এই সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করি নাই।
চতুর্থ দিন, এবার পারোর সব থেকে বড় আকর্ষণ Tiger Nest/ taksin. যেটা ওদের ধর্মীয় এবং পর্যটনের দিক থেকে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিন হাজার ফুট হেটে উঠতে হবে আবার নেমে আসতে হবে। পায়ে হাটার বিকল্প কোন বেবস্থা নাই। আমাদের উঠতে সময় লেগেছিল প্রায় ৩:৩০ ঘণ্টার মতন আবার নামতে সময় লেগেছে ১ ঘণ্টার বেশি। দিন শেষে এটাই ছিল সব থেকে মজার এবং সারা জীবন মনে রাখার মতন একটা ঘটনা।
পঞ্চম দিনঃ ভুটানের সব সুন্দর সৃতি সাথে নিয়ে এবার আমাদের গন্তব্য আরেক সৌন্দর্যের রানি দার্জিলিং। চা বাগানে ঘেরা অপুরুপ সুন্দর দার্জিলিং শুধু টিভিতেই দেখেছি কিন্তু এবার সুযোগ এসেছে সামনে থেকে দেখার। এবার রওনা হলাম পারো থেকে দার্জিলিং এর উদ্দেশ্যে। সকাল ১১টা। আমাদের যাত্রা শুরু। ৪:৩০/৫ ঘণ্টা সময় লাগে ফুএেন্টসলিং পৌছাতে। পথে যাত্রা বিরতি বেশি নিলে সময়তো একটু বেশি লাগবেই। অবশেষে ভূটান বর্ডার গেটে পৌছালাম স্থানীয় সময় ৫টায়। এক্সিট সিল নিয়ে হেঁটে চলে গেলাম ইন্ডিয়ার ভিতর সোজা ওদের ইমিগ্রেশন অফিসে আর লাগিয়ে নিলাম এন্ট্রি সিল। যেহুতু দারজেলিং যাব তাই রাতটা শিলিগুড়ি থাকতে হবে। ৩,৫০০ টাকায় একটা গাড়ি ভাড়া করে রওনা দিলাম এবং রাত ১০:৩০ নাগাদ শিলিগুড়ি পৌঁছে গেলাম। বলে রাখা ভাল যে ইন্ডিয়া ঢুকেই ইন্ডিয়ার ১টা মোবাইল সিম কিনি ইন্টারনেট প্যাকেজ সহ। তাই অনলাইনেই ১টা হোটেল বুক দিয়া সরাসরি উঠে পরি হোটেলে। ২ রুম, ২ রাত সর্বমোট ৩,০০০ রুপি। রাতে আরেকটা গাড়ি ঠিক করে রেখেছিলাম পরের দিন সারা দিন যেন ভালভাবে ঘুরতে পারি কোন ঝক্কি ছাড়া।
সপ্তম দিনঃ গত কয়েক দিনের ক্লান্তি পুষিয়ে নেবার জন্য এবার একটা সেই ঘুম দেয়ার পালা কারন বাসতো সেই ১:৩০ টায়। যে কথা, সেই কাজ। ১০ টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে নিলাম এবং সকালে নাস্তা করলাম স্ট্রিট ফুড দিয়ে। ২০ রুপিতে ৩ টে পরটা এবং refillable ডাল। চমৎকার স্বাদ, পেটেও তৃপ্তি, জিহ্বাতেও তৃপ্তি। হাল্কা ঘুরে, বিধান মার্কেটে শপিং করে বাসে উঠে গেলাম। গন্তব্য এবার বাংলাদেশ।
খরচাপাতি:
জনপ্রতি আপনার খরচ পড়বে ১৫-২০ হাজার টাকা (শপিং ছাড়া)। মনে রাখা ভালো, সময় স্বল্পতার জন্য আপনি হয়তো হাভেলি ও বুম্থাং-এর মতো আকর্ষণীয় জায়গায় যেতে পারেননি। হাভেলি, বুম্থাং ঘুরলে খরচ কিছুটা বাড়বে।
আর সব কিছুতে ট্যাক্সি বাদ দিয়ে পাবলিক বাসে ঘুরলে খরচ কিছু কম পড়বে কিন্তু সময় বেশি লাগবে।
কিছু লক্ষণীয়:
১. ভারতীয় ভিসাসহ পাসপোর্টের ফটোকপির কয়েক কপি, আর পাসপোর্ট সাইজের ছবি সঙ্গে রাখবেন। ২. ন্যাশনাল আইডি কার্ডের দু-তিনটি ফটোকপি। ৩. চাকরিজীবী হলে NOC (No Objection Certificate) ও স্টুডেন্ট হলে আইডি কার্ডের দু-এক ফটোকপি। ৪. ভুটানে সরকারি ছুটি অনেক বেশি, তাই সরকারি ছুটির লিস্ট দেখে ভ্রমণ প্লান করলে ভালো। ৫. ভুটানে কোথাও কোনো মসজিদ ও মুসলিম রেস্টুরেন্ট আপনার চোখে পড়বে না। ভুটানিজ ভাত, ডাল, সবজি খুবই মজার। তারপরও আপনার প্রয়োজন মনে হলে, বাংলাদেশ থেকেই কিছু, আচার, চাটনি, বিস্কুট নিয়ে যেতে পারেন। ৬. ও হ্যাঁ, আরেকটা কথা, ভুটান শতভাগ ধূমপানমুক্ত দেশ। কিন্তু সবার জন্যই খোলা। কোথাও কোনো সিগারেট কিনতে পাবেন না, ধূমপানের মতো বদভ্যাস থাকলে সিগারেট সঙ্গে করে নিয়ে নেবেন। পরবর্তী সময়ে তা বারে (smoking zone), হোটেলে অথবা পাহাড়ে ধূমপান করতে পারবেন, কিন্তু ধরা পড়লে কোনো কথা নেই, নগদ মোটা অঙ্কের জরিমানা। তবে ধূমপান না করাই ভালো। ৭. নিজস্ব প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বাংলাদেশ থেকেই নিয়ে গেলে ভালো।
ভূটান এ হোটেলে অবশ্যই দামাদামি করে উঠবেন এতে ২০০/৩০০ টাকা প্রতিদিন শুধু হোটেলেই সেভ হবে।
কিছু করনীয়ঃ
১. ডলার চেংরাবান্দাতেই ভাংগাবেন কারণ পুরা ভুটানে আমার চোখে কোন মানি এক্সচেঞ্জার পরে নাই। ভুটানে কোন সমস্যা ছাড়াই ইন্ডিয়ান রুপি চলে, সুতরাং ইন্ডিয়ান ৫০০ আর ১০০ করে টাকা নিয়া যান। ২. দার্জিলিং যদি যাওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলেও ডলার চেংরাবান্দাতেই ভাংগাবেন কারণ দার্জিলিং শহরে রেট অনেক কম দেয়। 3. অবশ্যই ১০০ ডলারের নোট নিয়ে যাবেন কারণ ৫০ বা খুচরা নোটে কম রেট দেয়। আর সর্বদাই চেষ্টা করবেন নতুন ১০০ ডলারের নোটটা নিতে। (আমি চেংরাবান্দাতে ৬৬ রুপি করে পেয়েছিলাম) । ৪. ভূটান ও দার্জিলিং এ হোটেলে অবশ্যই দামাদামি করে উঠবেন এতে ২০০/৩০০ টাকা প্রতিদিন শুধু হোটেলেই সেভ হবে।
কিছু প্রয়োজনীয় কনটাক নাম্বার ও ঠিকানা (যদি কারো প্রয়োজন পরে)
Hotel Choephal Norkye (Thimphu) Tel: +975 17628400 এদের ডাবল বেড ১২০০ এবং ত্রিপল বেড ১৫০০ করে। খুবই স্ট্যান্ডার্ড। Yoesel Hotel 2 (Thimphu) Tel: +975 77399406 +975 17852311 +975 17606447 এদের ডাবল বেড 700 এবং ত্রিপল বেড 900 করে। moderate service। Hotel Dragon (Paro) Tel: +975 8272174 +975 17762628 +975 17320473 এদের ডাবল বেড 1000 এবং ত্রিপল বেড 1300 করে। (This is the best, Bengali foods are available too) Hotel Diamond (Shiliguri) Tel: +91 98327 88314 এদের ডাবল বেড 800 করে। moderate service।
যারা ভুটান ভ্রমন করতে ইচ্ছুক কিন্তু সঠিক গাইডলাইন এর কারণে যেতে পারছেন না তাদের জন্য এই পোষ্ট আশা করি উপকৃত হবেন। পরিচ্ছন্ন শহর, সুসভ্য নাগরিক, গহীন জঙ্গলে ছাওয়া পাহাড় বা দূষণহীন নদী দেখে যদি আমাদেরও যদি একসময় আমাদের দেশে এই জিনিসগুলো নিশ্চিত করার আকাঙ্খা জাগার কোন সম্ভাবনা থাকে, তাহলে আমি বলবো ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য মারামারি, ধরাধরি, দালালের পেছনে না ছোটাছুটি না করে বরং ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিয়ে ঘুরে আসুন সুন্দর সুসভ্য দেশ ভুটান, একই খরচে। আর চাইলে আরেকটু বেশি খরচে বিনা ভিসায় আকাশপথে তো যেতে পারেনই। ভুটান ভ্রমন ভিসা
ট্যুরিস্ট ভিসা ছাড়া আর কোন ভিসার জন্য টোকেন-ফোকেন, ক্যাম্প/ট্যাম্প লাগে না। ট্রানজিট ভিসার জন্যও না। পনের দিনের ভিসা দেবে, যাওয়ার সময় ৩ দিন, এবং আসার সময় ৩ দিন চাইলে ভারতও কিছুটা ঘুরে আসতে পারেন। আমরা যেমন কালিম্পং আর দার্জিলিং ঘুরে এসেছি আসার সময়। দার্জিলিং আগেও গিয়েছি, ভুটান থেকে ফিরে এবার আর ভাল লাগেনি। হোটেলের কাছাকাছি এলেই দালালরা ছেঁকে ধরে! রাস্তাঘাটে ময়লা তো আছেই বাংলাদেশের মত।
খরচ: শ্যামলির শিলিগুড়ি-ঢাকা আসা-যাওয়া টিকেট ৩০০০ টাকা (এসি বাস) ভিসা প্রসেসিং ফি ৬০০ টাকা এনডোর্সমেন্ট ফি ১৩০-৫০০ টাকা (ব্যাংক ভেদে) চ্যাংড়াবান্ধা থেকে জয়গাঁও ট্যাক্সিতে জনপ্রতি ৩০০-৩৫০ রুপি। বাসে গেলে ময়নাগুড়ি থেকে জয়গাঁও, অর্ধেকের কম খরচ।
জয়গাঁও ইমিগ্রেশনের কাজ সেরে ভুটান গেইট দিয়ে ফুন্টসোলিং হেঁটে ঢুকতে হবে, কোন খরচ নাই। বাংলাদেশে থাকতেই মোবাইল ফোনে গুগুল ম্যাপে জায়গাগুলো দেখে রাখবেন, পরে নেটওয়ার্ক ছাড়াও ক্যাশের জমে থাকা ম্যাপ দিয়ে পথ চিনতে পারবেন। এটা করলে ভেঙে ভেঙেও বাসে চলাচল করা সম্ভব। তাতে সময় বাঁচে। ফুন্টসোলিংয়ে ৮০০-১২০০ নিউলট্রামে (Ngultrum, গুলট্রাম নয়) হোটেলে ঝকঝকে ডাবল রুম পাবেন, গিজার সহ। অর্থাৎ মাথাপিছু খরচ ৪০০-৫০০ নিউ। খাওয়া খরচ আপনার ওপর। মোমো/থুকপা খেলে ৪০-৬০ নিউ, ভাত খেলে ১৩০-২৫০ নিউ লাগবে। চা ২০ নিউ। মিনারেল ওয়াটার না কিনলেও পারেন, ওদের নরমাল পানি ভাল। রুপি আর নিউলট্রামের ভ্যালু একই। রুপিও চলে পুরো ভুটানেই।
ফুন্টসোলিং পৌঁছেই পরের দিন দুপুরের বাসের টিকিট কেটে রাখলে থিম্পু যেতে পারেন বাসে। ২৪০ নিউ লাগবে। এই ফাঁকে ফুন্টসোলিং দেখে নিন। সুন্দর আছে। হেঁটেই দেখুন, ভালমত দেখতে পাবেন। ছোট্ট শহর। পাশে সুন্দর নদী, মধ্যদিয়ে ঝর্ণা বয়ে গেছে। পাহাড় তো আছেই। মানুষও দেখার মত। প্রায় সবাই খুব সুন্দর ইংরেজি বলে, ফলে যোগাগোগে সমস্যা হবে না। আর যারাহিন্দি বলতে পারেন, তাদেরও সমস্যা হবে না। ট্যাক্সিতে থিম্পু গেলে মাথাপিছু ৬০০ নিউ লাগবে। বাসের টিকিটের সংকট আছে, বাসও খুব বেশি না। Sponsored by Revcontent From The Web You Won’t Believe What He Did After Winning the Lottery!
থিম্পুতে হোটেল খরচ/খাওয়া খরচ ফুন্টসোলিংয়ের মতই। অর্থাৎ দিনে ১ হাজার টাকায়ই হয়ে যাবে। ট্যাক্সি ছাড়াও ঘোরা সম্ভব, মজাই লাগে। দু একটা জায়গায় ট্যাক্সি খরচ যোগ করতে হবে। শেয়ার করলে খরচ কমই। থিম্পুএক রাত থেকে পরদিন সকালে রওনা দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি চলে আসতে পারেন সারা দিনে। রাতটা কাটিয়ে পরের দিন বর্ডার ক্রস করে দেশে ঢুকতে পারেন। আমি হলে শিলিগুড়ি না এসে ফুন্টসোলিংয়ে, অর্থাৎ ভুটানেই রাতটা কাটিয়ে পরদিন বিকালে চ্যাংড়াবান্ধা ক্রস করবো।
এ পর্যন্ত যাওয়া আসা ও ভুটান / ভারতে ৩ রাতের খরচ মিলে বোধহয় ১০ হাজার টাকার মতো হলো, ক্যালকুলেট করতে ইচ্ছা হচ্ছে না । বাসে করে পারোও যেতে পারবেন, প্রতি দিনের জন্য এক-দেড় হাজার টাকা যোগ করুন ।
এই লিংকে (http://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/index.html) গিয়ে নিজে নিজেই ভারতের ভিসার ফরম পূরণ করুন, তারপর প্রিন্ট নিয়ে গুলশান ভিসা সেন্টারে (IVAC) চলে যান প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ (ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য যা লাগে)। আর ভুটান বর্ডারে অন অ্যারাইভেল ভিসা পাবেন ৭ দিনের। আমরা থিম্পুতে গিয়ে আরও চারদিন এক্সটেন্ড করে নিয়েছিলাম, ফলে মোট ১১ দিন ঘুরেছি ভুটানে। ফুন্টসোলিং, পারো, থিম্পু, পুনাখা/ওয়াংদি ও বুমথাং। ফেরার পথে ভারতে কালিম্পং ও দার্জিলিং। আমরা দুইজন গিয়েছিলাম, কোন এজেন্ট ফেজেন্ট ছাড়াই, ১৩ দিনের ট্রিপে খরচ হয়েছে সর্বসাকুল্যে মাত্র ৫৫০ ডলার। অর্থাং জন প্রতি প্রায় ২৭৫ ডলার।
চারজন গেলে ভাল হবে, রুম ও ট্যাক্সি শেয়ার করতে পারবেন আরামে। তবে যত বেশ ভ্রমণসঙ্গী, তত ফ্যাকরা। কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠবে না, কেউ নিজের পানির বোতল নিজে বহন করবে না, কেউ এখানে যেতে চাইবে, কেউ ওখানে। আমার হিসাবে দুজনই বেস্ট। কোনভাবেই ৩ জন বা ৫ জন নয়।
বিদ্র: ভুটান পরিচ্ছন্ন দেশ, সেটাকে পরিচ্ছন্নই রাখবেন দয়া করে। রাস্তা পার হবেন জেব্রা ক্রসিংয়ে, নিয়ম মেনে। সবার সাথে বিনীত আচরণ করবেন, যেন বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ থাকে। মনে রাখবেন, ওরা প্রতিবেশি অনেক দেশের (!) মানুষের চাইতে বাংলাদেশিদের শ্রদ্ধা করে। শ্রদ্ধার দাম দেবেন অনুগ্রহ করে। আমরা যে রুমে থেকেছি, সেটার বালিশ কম্বল পর্যন্ত গুছিয়ে রেখে এসেছি, যেন পরে দেখে খুশি হয় ।
ঘড়ি দেখে চলুন। ওদের সকাল ৮ টার বাস ৮:০০ বাজেই ছাড়ে। আধঘণ্টা আগে রিপোর্ট করার নিয়ম। ওয়াংদিতে আমাদের দেরি দেখে ফোন দিয়েছিল। আমরা পৌঁছাবার পর বাস ছাড়লো, তাও নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট আগেই, ৭:৫৬ মিনিটে, কারণ যাত্রী সবাই চলে এসেছে। দেরী করলে বাস মিস করবেন, তখন আর ১০ হাজার টাকায় হবে না। আমার দোষ দিয়ে কিন্তু টাকা ফেরত পাবেন না।
সূএ: ইন্টারনেট
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.