ডাগর ডাগর চোখ আর দোহারা গড়ন। মাথায় শরৎচন্দ্রের বনলতা সেনের মতো অন্ধকার ঢাকা চুল। দেখলে এক পলকেই প্রেমে পড়ে যাবেন যে কোনো যুবক। কথায় রয়েছে আলাদা মাধুর্যতা। যে কথায় সম্মোহনী শক্তি ঐশ্বরিক। কাছে টানে ভালোবাসার জাগায় কোটি তরুণের হৃদয়ে। এ আকর্ষণীয় রূপ আর সৌন্দর্য নিয়েই ম্যাগাজিনের ফটোশুট দিয়ে শোবিজ অঙ্গনে পথচলা শুরু হয় শবনম ফারিয়ার।
এরপর টিভি বিজ্ঞাপন। তারপর অভিনয়। ফলে এখন টিভি পর্দার পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখ তিনি। দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি নির্মাতাদেরও ভরসার জায়গায় রয়েছেন শবনম। তাই তো নাটক আর বিজ্ঞাপনের শুটিং নিয়েই কেটে যাচ্ছে তার বর্তমান সময়।
২০১৫ বছরে নাটক ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে টিভি মিডিয়ায় বেশ আলোচিত ছিলেন এ তারকা। আলোচনার পাশাপাশি নারীদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সোচ্চারও ছিলেন তিনি। এ বছর তার অভিনীত প্রায় ত্রিশটির বেশি নাটক প্রচার হয়েছে।
যে নাটকগুলো দর্শক মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে বেশ। পাশাপাশি শবনম ফারিয়ার ক্যারিয়ারকেও সমৃদ্ধ করেছে। এ ছাড়া বিজ্ঞাপন দিয়েও দর্শকদের সামনে সারা বছর উজ্জ্বল থেকেছেন এ তারকা। বছরের একেবারে শেষ এসে মিনারেল ওয়াটারের একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেও আলোচিত হন তিনি। এ বিজ্ঞাপনটিতে দারুণ এক লুকে উপস্থাপন করা হয়েছে ফারিয়াকে। এখনও প্রচারে না আসা বিজ্ঞাপনটি প্রসঙ্গে এমন কথাই জানালেন এর নির্দেশক মাহিন আওলাদ।
প্রেমের গুঞ্জন নিয়েও চলতি বছরটি আলোচনায় ছিলেন ফারিয়া। এ ছাড়াও বেশ কয়েকবার অভিনয় থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা ও আবার অভিনয়ে ফেরা নিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি। সমাজে নানা অসঙ্গতি ও নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে বেশ স্ট্যাটাস দিয়েও নজরে ছিলেন এ তারকা। তার মধ্যে তনু হত্যার বিষয়ে তার বিষদ স্ট্যাটাসটি নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছিল। আসলে এ দেশে নারীরা কতটা নিরাপদ? সবকিছু মিলে তরুণ এ অভিনেত্রীর বেশ সুসময়ই গিয়েছে এ বছরটি। তবে আলোচনায় নয় দর্শকদের জন্য ভালো কিছু করে মনে গেঁথে থাকতে চান এ তারকা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শোবিজের এ অল্প সময়ে দর্শকদের বেশ ভালোবাসা পাচ্ছি। আমি চাই ভালোবাসার এ জায়গাটা আরও শক্ত হোক। দর্শকদের জন্য এমন কিছু কাজ করে যেতে চাই যাতে সারা জীবন এরই মাঝে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি।’
বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে পরিবারের সবার ছোট ফারিয়ার শৈশবটা মফস্বলেই কেটেছে। আর বড় হয়েছে শহরে। তাই সব ধরনের পরিবেশ সম্পর্কে জানা আছে তার। কিছুটা আবেগী এ মেয়েটির স্বপ্ন কিন্তু অভিনয় ঘিরে ছিল না। সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নেয়ার লক্ষ্য ছিল তার। কিন্তু নানা কারণে এ স্বপ্নের পথে হাঁটা হয়নি তার। হেঁটেছেন আরেক পথে। হাঁটছেন এখনও। হাঁটবে আরও বহুদূর পর্যন্ত। অভিনয় দিয়ে জয় করে নিতে চান দর্শক হৃদয়। তাই সেলুলয়েডের পর্দাই তার শেষ ঠিকানা।
ফারিয়ার ভাস্য মতে, ‘নাটক নয়, সিনেমাই বেঁচে থাকে। নাটকের টার্গেট অডিয়েন্স থাকলেও চলচ্চিত্র সর্বজনীন। সব মিলিয়ে আমাদের দর্শকদের কাছে নাটকের চেয়ে সিনেমার গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই এমন একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই, যার মাধ্যমে শবনম ফারিয়া যুগের পর যুগ বেঁচে থাকবে’।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.