শেরপুরে জেলা নির্বাচন অফিসের সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে কার্যালয়ের গুদামে রাখা বেশ কিছু ব্যালট বাক্স পুড়ে গেছে। গতকালই পিরোজপুরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। শেরপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে দুর্বৃত্তরা এ অফিসের সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকে। এ সময় ভবনের নিচতলায় অবস্থিত সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের গুদামের জানালার কাচ ভেঙে ভেতরে আগুন দেয় তারা। কিছুক্ষণ পর অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী মো. রেদোয়ান পোড়া গন্ধ পেয়ে ও ধোঁয়া উঠতে দেখে কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের খবর দেন। পরে শেরপুর দমকল বাহিনী গিয়ে আগুন নেভায়। ইতিমধ্যে ২৮০টি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, একটি কম্পিউটার ও একটি প্রিন্টার পুড়ে যায়। গতকাল সকালে শেরপুরের জেলা প্রশাসক এ এম পারভেজ রহিম, পুলিশ সুপার মো. রবিউল হাসান গনিসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বিকেলে পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহ থেকে সিআইডির ক্রাইম সিনের কর্মকর্তারা। শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে বিকেলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, গুদামে নির্বাচনী উপকরণ রক্ষিত ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এসব ধ্বংসের জন্য দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। প্রার্থীর বাড়িতে হামলা: পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোহাগদল গ্রামে সদ্য সমাপ্ত জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. শাহ আলমের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা সোয়া একটার দিকে ছাত্রলীগ কর্মী তানজীদ ইসলাম ওরফে তন্ময় ও মো. তপুর নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে শাহ আলমের বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা বাড়িতে থাকা দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেন। হামলা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামে শাহ আলমের এক সমর্থক আহত হন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে হামলাকারীদের তাড়িয়ে দেয়। শাহ আলম অভিযোগ করেন, ‘তানজীদ এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। আমি জেলা পরিষদের প্রশাসক হওয়ার পর ওরা এলাকায় এসব কর্মকাণ্ড চালাতে পারছিল না। এ কারণে নির্বাচনে আমি পরাজিত হওয়ার পর আমার বাড়িতে হামলা চালায়।’ তবে তানজীদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমিসহ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা স্বরূপকাঠি সরকারি কলেজে গেলে শাহ আলমের লোকজন আমাদের ধাওয়া করে। এ সময় আমরা তাদের পাল্টা ধাওয়া দিই। বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা সঠিক নয়।’ নেছারাবাদ থানার ওসি মুনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। হামলার ঘটনায় তপু ও তুহিন নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.