২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এ সময় দুর্ঘটনা ৩৫ ও প্রাণহানি ৫০ শতাংশ কমেছে।
বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৯৯৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৪১২ নিহত ও ৮ হাজার ৫৭২ জন আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ৪৭০ নারী ও ৪৫৩ শিশু রয়েছে। এর আগের বছর ২০১৫ সালে একই সময় ৭৮১ নারী ও ৭৬২ শিশুর প্রাণহানি হয়। ওই বছর ৪ হাজার ৫৯২টি দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৮২৩ নিহত ও ১৪ হাজার ২৬ জন আহত হন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় গত দুই বছরে ২ হাজার ৪৬৬ নারী ও শিশুসহ ১০ হাজার ২৩৫ জনের প্রাণহানি হয়। এ সময় সংঘটিত ৭ হাজার ৫৯০টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে আরো ২২ হাজার ৫৯৮ জন।
শীর্ষস্থানীয় ২০টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ওপর জরিপ ও পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে বলে জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছর সড়ক দুর্ঘটনা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় কমেছে ১ হাজার ৫৯৪টি। নিহত ও আহতের সংখ্যা কমেছে যথাক্রমে ৩ হাজার ৪১১ ও ৫ হাজার ৪৫৪টি। অর্থাৎ ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনার হার ৩৫ শতাংশ, নিহতের হার ৫০ শতাংশ ও আহতের হার ৩৯ শতাংশ কমেছে।
জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসের পেছনে ৫টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বছরজুড়ে গঠনমূলক সংবাদ প্রচার, দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে সামাজিক সংগঠনগুলোর ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন, বছরের অধিকাংশ কর্মদিবসে রাজপথে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রীর পদচারণা, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা ও পুলিশের দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকিপূর্ণ অনেক বাঁক চিহ্নিত করে সতর্কীকরণ সংকেত স্থাপন ও সড়ক সংস্কার। অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য প্রধান ৭টি কারণ চিহ্নিত করেছে জাতীয় কমিটি। এগুলো হচ্ছে- বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, নিয়ম ভঙ্গ করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং করার প্রবণতা, চালকদের দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও বেহাল সড়ক।-বাসস।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.