জার্মানিতে আডল্ফ হিটলারের মাইন কাম্ফ বই-এর একটি বিশেষ সংস্করণের বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে বলে বলছে এর প্রকাশক। বইটি গত বছর প্রকাশিত হয়েছিলো। বইটিতে মূল পাঠের সাথে সাথে সমালোচনামূলক টীকা-ভাষ্য যুক্ত করা হয়েছে- যার উদ্দেশ্য হলো, বইটি যে বাজেভাবে লেখা এবং এর বক্তব্য যে অসংলগ্ন – তা তুলে ধরা। বইটির প্রকাশক আন্দ্রেয়াস ভিরশিং বলেছেন, জার্মান ভাষায় রচিত ইহুদি-বিদ্বেষী এই নাৎসি মেনিফেস্টোটির ৮৫ হাজার কপি বিক্রি হয়েছে। মিউনিখে অবস্থিত সাম্প্রতিক ইতিহাস সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান আইএফজেডের পরিচালক তিনি। প্রকাশকরা বলছেন, এই জানুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ তারা বইটির ৬ষ্ঠ সংস্করণ প্রকাশ করবেন। বইটিতে বিভিন্ন প-িত ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞদের সমালোচনামূলক মন্তব্যও ছাপা হয়েছে। মাইন কাম্ফ-এর বাংলা অর্থ আমার সংগ্রাম। নাৎসি আমলে প্রকাশিত এই বইটির প্রচ্ছদের সাথে বর্তমান বইটির মিল নেই। এর প্রচ্ছদে শুধু সাদা রঙের একটি মলাট, সেখানে নেই হিটলারের কোন ছবিও। স্বস্তিকাসহ অন্যান্য নাৎসি প্রতীক জার্মানিতে নিষিদ্ধ। মি. ভিরশিং জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএকে বলেছেন, আইএফজেড এখন এর একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ এবং ফরাসী ভাষাতেও এটি প্রকাশের কথা ভাবা হচ্ছে। প্রথম সংস্করণটি জার্মানিতে প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালে। সেটি চার হাজার কপি ছাপা হয়েছিলো। এ ধরনের একটি উত্তেজনাকর বই প্রকাশের সমালোচনা করেছে বিভিন্ন ইহুদি গ্রুপ। মাইন কাম্ফ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯২৫ সালে, হিটলারের ক্ষমতায় আসার আট বছর আগে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে নাৎসী জার্মানির পতন হয় ১৯৪৫ সালে, এবং হিটলার পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে তার বাংকারে আত্মহত্যা করেন। ১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের পর মিত্র বাহিনী এই বইটির গ্রন্থস্বত্ব বাভারিয়া রাজ্যের কাছে হস্তান্তর করে। তারা বইটি ঘৃণা ছড়াতে পারে এ আশঙ্কায় এর পুনর্মুদ্রণ নিষিদ্ধ করে। তবে যুদ্ধের সময় বইটি এত ছাপা হয়েছিল যে তার কপি সারা দুনিয়াতেই সহজপ্রাপ্য। জার্মান আইন অনুসারে, এই কপিরাইট কার্যকর থাকে ৭০ বছর। এখন সেই কপিরাইটের মেয়াদ এক বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই পুনর্মুদ্রণে আর বাধা নেই। মি. ভিরশিং বলেছেন, বইটি প্রকাশের আগে আইএফজেড যথাযথ আইনি পরামর্শ নিয়েই বইটি ছাপা হয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.