লেখাপড়া করে আলোকিত হতে চেয়েছিলেন বিলকিস। কিন্তু মেয়েটির স্বপ্নপূরণের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় এলাকার এক বখাটে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় শেষ পর্যন্ত ওই বখাটের ছুরিকাঘাতে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে বিলকিস। জানা যায়, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী সেনঘোনা এলাকার মোকতার আহমদের মেয়ে ও কোনাখালী হেদায়তুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী হুরে জান্নাত বিলকিছকে (১৫) উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে একই ইউনিয়নের মেহেরনামা ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের পুত্র বখাটে মিনহাজ উদ্দিন। গত ৫ই জানুয়ারি সকাল ৯টায় এই ঘটনা ঘটে। সেই থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বিলকিস। চিকিৎসকেরা জানান, ছুরির আঘাতে বিলকিসের দু’হাতের পাঁচটি রগ কেটে গেছে। ছুরিকাঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে তার। মুমূর্ষু বিলকিসকে সারিয়ে তুলতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে কথা হলে বিলকিসের বাবা মুদি দোকানি মোক্তার আহমদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে এবং বড়ই আদরের। তাকে যে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে মনে হচ্ছে তা আমার বুকে বিদ্ধ হয়ে আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি সামান্য মুদি দোকানি। অতিকষ্টে সন্তানদের লালন-পালন করছি। বিলকিসকে অস্ত্রোপচার করতে হবে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে চিকিৎসকেরা। কক্সবাজারের প্রাইভেট হাসপাতালে দেখেছি। তারা দু’লাখ টাকা চেয়েছে। কিন্তু আমি এতো টাকা পাবো কোথায়?’ স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনার পর পরই ছুরিকাঘাতকারী বখাটে মিনহাজকে স্থানীয়রা আটক করে ইউপি কার্যালয়ে হস্তান্তর করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে মিনহাজকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ছাড়া পেয়ে ওই বখাটেসহ তার পরিবারের লোকজন বিলকিসের পরিবারকে বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তার পিতা মোক্তার হোসেন। অভিযোগ উঠেছে, বখাটে মিনহাজের পরিবার ঘটনাটি দামাচাপা দিতে মোটা অংকের মাধ্যমে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই ওয়ার্ডের মেম্বারকে ম্যানেজ করেছে। কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম সিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর ওই মিনহাজকে আটক করে স্থানীয় মেম্বারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে ওই ছাত্রী সুস্থ হলে সালিশের মাধ্যমে মিনহাজের বিচার হবে।’ জানতে চাইলে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড.একেএম ইকবাল বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। যখন শুনেছি খোঁজ-খবর নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.