চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফের পরিবারে চলছে মাতম। চারদিকে শুধুই কান্না। বন্ধু মহলেও চলছে শোক। পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করার ইচ্ছা ছিল উঠতি এই তরুণের। যোগ দিয়েছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কর্মকর্তা একটি বেসরকারি ব্যাংকেও। কিন্তু রাজনীতি করার যার নেশা তার তো মানুষের সেবা ছাড়া কিছুই ভালো লাগার কথা নয়। বিন্দু বিন্দু করে বুনতে থাকা সব আশাই যেন মাটি হয়ে গেল সড়ক দুর্ঘটনায়। চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন এলাকায় বাসের ধাক্কায় আশরাফ উদ্দিন উমর (২৭) নিহত হন। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগেরও সদস্য। গত রোববার রাত ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আশরাফ বেসরকারি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার খন্দকিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম জসিম উদ্দিন আহমদ। বায়েজিদ বোস্তামি থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ নোমান জানান, আশরাফ হাটহাজারীর আমান বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। অক্সিজেন মোড়ের চৌধুরী ভিলার সামনে পৌঁছালে একটি বাস পেছন থেকে তাকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন আশরাফ। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব জানান, ওমর আশরাফ উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। সোমবার দুপুরে স্থানীয় কে সি নজু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। আশরাফের মৃত্যুতে বন্ধু মহলেও চলছে আর্তনাদ। নগর ছাত্রলীগ নেতা ফরহাদ বলেন, ছেলেটি ভালো ছিল। সে ব্যাংকেও চাকরি করতো। আবার রাজনীতি করতো সক্রিয়। প্রায়ই বলতো প্রচলিত ধারার রাজনীতি পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। কিন্তু তার সে ইচ্ছে পূরণ হলো কই? চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় লাশের বহর বেড়েছে। প্রতিদিনই ২/৩ জন করে মানুষ মারা যাচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত মাসেই মারা গেছে অন্তত ১৮/২০ জন। সর্বশেষ গত একমাস আগে মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন শাহ আমানত ব্রিজ এলাকায় বাস ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে এক নারীসহ ২ জন নিহত ও কমপক্ষে ৭ জন আহত হন। ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৩টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন সিএনজি যাত্রী তানজিনা কামাল রূপা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনই নিহত লোকজন আসছেন একজন-দুইজন করে। নিহতদের আত্মীয়স্বজনদের বিলাপে ভারী হয়ে উঠছে হাসপাতালের পরিবেশ। আশরাফ নামের যে ছেলেটি মারা গেছে তার জন্য এখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.