সূত্র জানায়, সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবের জমজমাট জুয়ার আড্ডা দুপুর ১২টার পর হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। জুয়াড়িরা ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে ‘খেলা’ বন্ধের কারণ জানতে চাইলে ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, একটু ঝামেলা হয়েছে। পত্রিকায় লেখালেখির কারণে মার্কেট গরম। স্থানীয় থানা পুলিশ জুয়ার বোর্ড বন্ধ রাখতে বলেছে। এদিকে যুবলীগ নেতা সম্রাট ও খালেদ নিজ নিজ আস্তানায় অনুগতদের বিশাল বহর নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এ অবস্থায় নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কি করা যায়, এ বিষয়ে আলোচনা হয়। অপরদিকে রাজধানীর জুয়ার আস্তানায় অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে র্যাব। প্রতিটি জুয়ার আস্তানার অভ্যন্তরের চিত্র ধারণের জন্য ছদ্মবেশে র্যাবের গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ শুরু করেছে। আদালতে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য তারা এসব জুয়ার আস্তানার ভিডিও চিত্র গোপনভাবে ধারণ করবেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, জুয়ার বোর্ডে প্রভাব বিস্তারের জের ধরে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় খুনোখুনির ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে মতিঝিল এলাকায় গত এক বছরে অন্তত তিনজন প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হয়েছেন। বিশেষ করে যুবলীগ নেতা তারেক ওরফে কিলার তারেক র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর মতিঝিল ক্লাবপাড়ার জুয়া আস্তানার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ চলে যায় যুবলীগ নেতা সম্রাটের হাতে। বর্তমানে সেই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে খালেদ নামে আরেক উঠতি নেতার সঙ্গে। এ দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় বাংলাদেশ রেলওয়েসহ বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের টেন্ডার দখলকে কেন্দ্র করে। সর্বশেষ জুয়ার বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই দুই প্রভাবশালীর অনুসারীরা এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
অপরদিকে জনৈক সাঈদ ওরফে সাঈদ কমিশনারের জুয়ার টাকায় কেনা বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক মাস আগে তিনি তিন কোটি টাকা দামের হাল ফ্যাশনের একটি গাড়ি কেনেন। সেই গাড়িতে সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা শুরু করেছেন। ওই সাঈদ আরামবাগ, ফকিরাপুল ও মতিঝিল এলাকার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছেন। স্থানীয়রা জানান, সাঈদ আরামবাগ ফকিরাপুলের বিভিন্ন স্থানে গেট বসানোর নামে বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজি করেছেন। এছাড়া ফকিরাপুল, আরামবাগের বিভিন্ন প্রেস, অফিস ও বাসাবাড়ি থেকে তার নামে মাসে কয়েক কোটি টাকা চাঁদা তোলা হয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। প্রসঙ্গত, সোমবার ‘রাজধানীতে দেড়শ’ স্পট : অভিজাত ক্লাবে রাতভর জুয়ার আড্ডা’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, জুয়ার বোর্ডে উড়ছে কোটি কোটি টাকা। চালকের আসনে সরকারি দলের প্রভাবশালী এক নেতা, যিনি সবার কাছে জুয়া সম্রাট নামে পরিচিত। ওই ব্যক্তি বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল হোটেল সিঙ্গাপুরের মেরিনা বে’তে জুয়ায় প্রতিটি ‘লিডে’ কয়েক কোটি টাকা বাজি ধরেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.