ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট মানুষকে নেতিবাচক অনুভূতি দিচ্ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, অনলাইনে অন্য বন্ধুদের সুখী জীবন দেখে অনেকে ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়েন।
ফেসবুকের ‘লাইক’ পাওয়ার আশা এ ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে। ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে আশানুরূপ লাইক না পেলে অনেকে বিচলিত ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যরা বেশি লাইক পেলে ৪২ শতাংশ মানুষ ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়েন।
রাশিয়ার অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি ল্যাব বিশ্বের ১৬ হাজার ৭৫০ জন ব্যক্তিকে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। ওই সমীক্ষার ফল অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে।
গবেষণায় দেখা যায়, কিছুক্ষণ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে সময় কাটানোর পর ইতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তে নেতিবাচক আবেগ তৈরি হয়। মানুষ ইতিবাচক কারণ ও মেজাজ ভালো করতে এসব সাইটে যান। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ মানুষ বন্ধু, সহকর্মীদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে এসব সাইট ব্যবহারের কথা জানান। ৬০ শতাংশ মানুষ বিনোদন ও মজার পোস্ট পড়তে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে যাওয়ার কথা বলেছেন।
সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি ও ইতিবাচক বিভিন্ন ঘটনা পোস্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটানোর কথা বলেছেন অনেকেই। হাসির বিষয় পোস্ট করার ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ ও ছুটির দিনে সময় কাটানোর বিষয় পোস্ট করতে ৪৩ শতাংশ মানুষ যুক্ত থাকেন।
অবশ্য এসব মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখতে পছন্দ করেন না অধিকাংশ মানুষ। ৭২ শতাংশ মানুষ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখতে বিরক্ত বোধ করেন।
অনেকেই সামাজিক যোগাযোগে ভালো বোধ করার আশা নিয়ে ঢুকলেও বন্ধুদের সুখী পোস্টগুলো দেখে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেরেন। অন্যের জীবন উপভোগের বিষয়টি তাঁর মধ্যে নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো বন্ধুর অনুষ্ঠানে যাওয়ার ছবি দেখলে ৫৯ শতাংশ মানুষ খুশি হন না এবং ৪৫ মানুষ বন্ধুর ছুটির দিনের ছবি দেখে নেতিবাচক অনুভূতির কথা বলেন।
এমনকি অতীতে নিজের পোস্ট করা সুখী পোস্টগুলো বর্তমানে নেতিবাচক হিসেবে দেখা দিতে পারে। ৩৭ শতাংশ মানুষ তা-ই বলেছেন।
এর আগেও এ ধরনের গবেষণায় সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট সম্পর্কে মানুষের হতাশার কথা ফুটে উঠেছিল। ৭৮ শতাংশ মানুষ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ছেড়ে যাওয়ার কথা বিবেচনা করছেন বলে জানান। তবে সামাজিক যোগাযোগের সাইটে থেকে যাওয়ার একমাত্র কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, ডিজিটাল স্মৃতি যেমন ছবি এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে।
তথ্যসূত্র: পিটিআই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.