পারিবারিক স্বচ্ছলতা ছিল না। অর্থের অভাবে ক্লাস সেভেনের বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। বাড়ির বড় ছেলে, তাই অনিবার্যভাবে অল্প বয়েসেই সংসারের দায়িত্ব তুলে নিতে হয়েছিল কাঁধে। রোজগারের সন্ধানে একটা সময় মুম্বাইয়ের রাস্তায় কলম বিক্রি করতেন। আর এই বিক্রি করার ক্ষেত্রে ছিল তাঁর অভিনব কায়দা। বলিউড তারকাদের গলা নকল করে একের পর এক বিক্রি করতেন কলম। সেই গলা নকল করার দক্ষতাই পরবর্তী জীবনে তাঁকে ঠেলে দেয় কমেডির মঞ্চে। বলিউড ইতিহাসে এক অধ্যায় হিসেবে আজ যিনি পরিচিত, জোহন প্রকাশ রাও ঝানুমালা ওরফে জনি লিভার। হাঁটি হাঁটি পা পা করে গতকাল অর্থাৎ ১৪ আগস্ট ৫৮তম জন্মদিন পেরিয়ে পা রাখলেন ৫৯-এ।
আজ সবার চেনা জনি লিভার তিনি। নিছক কৌতুক অভিনেতার সংজ্ঞায় নয়, কৌতুক ইতিহাসের একটা অধ্যায়ও বলতে গেলে তিনি। তেলেগু এই মানুষটি ইতিমধ্যেই অভিনয় করে ফেলেছেন তিনশোর বেশি ছবিতে, যার বেশির ভাগ অভিনয়ই ছবির নায়ককে ছাপিয়ে অনায়াসে জয় করে নিয়েছে দর্শকদের হৃদয়। সারল্যের হাসি নিয়ে সবার মন জয় করে চললেও তাঁর কিন্তু রয়েছে নিজস্ব এক জগত। যেখানে একান্তে গোপন করে রেখেছেন তাঁর কিছু নিজস্ব ব্যক্তি স্বকীয়তা।
প্রতিদিন সকালে উঠে একেবারে নিয়ম করে ক্রসওয়ার্ডের ধাঁধা সমাধান করা তাঁর নিত্য অভ্যেস। ধাঁধা মেলাতে না পারলে নাকি সারাদিনে মন ভালো থাকে না জনির। তবে হ্যাঁ, পর্দায় জনি লিভারকে দেখে যতই হেসে কুটিকুটি হোন না কেন, বাস্তব জীবনে নাকি বেশ গম্ভীর মেজাজের তিনি। বিশেষ করে বাবা হিসেবে তো বেশ কড়া জনি লিভার। শোনা যায়, মেয়ের ক্ষেত্রে নাকি বেশ কড়া মেজাজের বাবা তিনি।
শরীর চর্চা টর্চা করতে খুব একটা পছন্দ করেন না জনি। তবে স্টেজ শো করার দুই দিন আগে নাকি ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেন। কারণ, স্টেজ শো করতে গিয়ে শরীর যাতে ভারি হয়ে না পড়ে। এমনিতে খেতে ভীষণ ভালোবাসেন। তাঁর সব থেকে প্রিয় খাবার হলো সম্বর-রাইস। বিদেশ-বিভূঁইয়ে গেলেও নাকি জনি দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের রেস্তোরাঁ খুঁজে বেড়ান।
জনি লিভার গাড়ি চালাতে পছন্দ করেন কেবল মার্সিডিজ। এর অবশ্য একটা কারণও আছে। জনি লিভার জীবনে অনেক কষ্ট করে প্রথম নাকি মার্সিডিজের স্টিয়ারিং হাতে ধরেছিলেন। তাই এখনো মার্সিডিজ গাড়িকেই পছন্দ করেন তিনি।
তবে পর্দায় দাপিয়ে অভিনয় করলেও বাস্তব জীবনে বেশ খুঁতখুঁতে টাইপের লোক জনি। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথাও যাওয়ার কথা থাকলে নিদেনপক্ষে তিন ঘণ্টা আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দেন। শুটিংয়ের ক্ষেত্রে এখনো ঘণ্টাখানেক আগে এসে পৌঁছান স্পটে। অভিনয়কে আজও সিরিয়াস বিজনেস হিসেবেই মনে করেন বলিউডের এই অন্যতম কৌতুক অভিনেতা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.