তবে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েও ফেল করায় এসব প্রার্থী স্নাতক পর্যায়ে বিপর্যয়ে পড়ার শংকার কথা বলছেন বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক।
তিনি বলেন, ‘এরা তো ইঞ্জিনিয়ার হবে, তো কিভাবে হবে? বিজ্ঞান বিষয়ে ন্যূনতম মৌলিক জ্ঞান আছে বলে তো মনে হয় না। আগে দেশে বিখ্যাত প্রকৌশলবিদরা ছিলেন, এখনও অনেক আছেন। তাদের অবস্থান এরা তো ধরে রাখতে পারছে না। একেবারে অযোগ্য এসব মুখস্তবিদ্যার শিক্ষার্থী দিয়ে আর যাই হোক, দেশের প্রকৌশল বিষয়ে কাজে আসবে বলে মনে হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৌলিক জ্ঞানের শূন্যতা নিয়ে এখন প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করছে শিক্ষার্থীরা। তা না হলে যে শিক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসিতে রসায়ন, পদার্থ, গণিত, ইংরেজি পড়ে জিপিএ-৫ পেয়ে আসছে, সেই শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় একই বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ন্যূনতম নম্বর কেন পাচ্ছে না। এটা কি সাংঘাতিক ব্যাপার নয়?’
তবে ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহা. আবদুস সোবহান বলছেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ায় শূন্য আসন পূরণে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
শনিবার রুয়েটের প্রশাসনিক ভবন ও ওয়েবসাইটে নোটিশের মাধ্যমে শূন্য আসন পূরণে পুনরায় যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা দেয়া হবে। আশা করছি, দ্রুত ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে পরিবিজ্ঞান ও ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে।
ভর্তি কমিটি সূত্র জানায়, গত বছরের ৩০ আগস্ট ১৪টি বিভাগে ৮৭৫টি আসনের বিপরীতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় ৩১ অক্টোবর রাতে। উত্তীর্ণ ২ হাজার ৪৯৮ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১ ও ২ ডিসেম্বর মেধাতালিকা থেকে ভর্তি নেয়া হয়। তবে তালিকায় প্রথমদিকে থাকা প্রার্থীদের অধিকাংশ ভর্তি হয়নি। পরে আরও চার দফা মেধাতালিকা প্রকাশ করেও ২২৮টি আসন পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ৩টি বিভাগে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। ৬টি বিভাগে ১৩৮টি আসন শূন্য থেকে যায়।
অবকাঠামো সংকটের অজুহাতে প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ দেয়া, ভর্তি কমিটির দূরদর্শিতার অভাব ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন না আনায় এ ধরনের সংকট সৃষ্টি হয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ না করায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ : এদিকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করা হলেও রুয়েট তা করছে না। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে মেধাক্রম দেয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার বিষয়েও। বৃহস্পতিবার দুপুরে শূন্য আসনে ভর্তি বিষয়ে খোঁজ নিতে আসা একাধিক শিক্ষার্থী যুগান্তরকে এ অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক মো. কামারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন থাকে। অন্যরা করে আমরা এখনও তা করছি না।
তবে স্বচ্ছতার প্রশ্ন আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্যই এ বিষয়ে ভাববে। এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মোহা. রফিকুল আলম বেগের মোবাইলে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই দফা দফতরে গিয়েও তার দেখা মেলেনি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.