বিয়ে হলো মাত্র দেড় মাস। মোটামুটি অনেকটাই ধুমধামে বিয়েটা হয়েছিল। গায়ে হলুদের রং এখনো শুকায়নি। এরই মধ্যে বিভিন্ন দোষে অপরাধী করা হয়েছে ওই নববধূকে। বিয়ের তিনদিনের মাথায় শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হন গৃহবধূ সুমি। গত সোমবার স্থানীয় সমাজপতিরা সালিশ ব্যবস্থা করেন। তারা মৌখিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেন ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করা হবে ওই বধূকে। এতে প্রচণ্ড অভিমানে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় সুমি আক্তার (১৯) নামের ওই নববধূ। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের বাদুরতলী গ্রামে। বিষপানে আহত সুমিকে তার স্বজনরা উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সে ওই গ্রামের আ. কাদের হাওলাদারের মেয়ে। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি। কাদের হাওলাদার কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, আজ থেকে মাত্র দেড় মাস আগে একই ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকার খেতাছিড়া গ্রামের মো. ইউনুচ কাজির ছেলে শাহিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মেয়েকে বিবাহ দেন। বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে ২ লাখ টাকা ধার্য করা হয়েছে। ছেলেপক্ষ ৪ বার আমার মেয়েকে দেখেন তারপর তারা এ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আমিও জামাতা ও তার পরিবারের তুষ্টি মতো উপহার সামগ্রী ও নগদ টাকা প্রদান করি। মেয়ের বিয়ের বয়স মাত্র দেড়মাস হলো। এই সময়ের মধ্যে আমার মেয়ের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। গত সোমবার তারা স্থানীয় সমাজপতিদের সমন্বয় সালিশ ডাকেন। সমাজপতি নামের সালিশদারেরা মৌখিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন আমার মেয়েকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় (তালাক) দিয়ে দিবেন। এ সিদ্ধান্তের কথা আমার মেয়ে জানতে পেরে অভিমান করে বিষ খেয়েছে। বিষ খাওয়ার বিষয়টি আমরা টের পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমি আমার মেয়েকে স্বামীর মর্যাদা পাইয়ে দেয়ার জন্য মামলা করবো। তিনি আরো জানান, বিয়ের মাত্র তিনদিনের মাথায় মেয়ের শাশুড়ি শাহানা বেগম আমার মেয়েকে মারধর করে। জানি না মাত্র তিনদিনে কি ক্ষতি করেছিল আমার মেয়ে। কাদের হাওলাদারের বোনাই মো. কাঞ্চন মৃধা জানান, ছেলেপক্ষ ৪ বার যাচাই করে আমার শ্যালকের মেয়েকে বৌ হিসেবে তাদের বাড়িতে নেয়। জামাতা পরিবারের তুষ্টি মতো উপহার সামগ্রী ও নগদ টাকা প্রদান করা হয়েছে। মাত্র দেড়মাসের মধ্যে কি এমন ক্ষতি করেছে মেয়েটি? তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। আমি সবার কাছে এর বিচার দাবি করছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান। মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.