ওভারে দুটির বেশি বাউন্সার দেওয়ার নিয়ম নেই টেস্ট ক্রিকেটে। কিন্তু বল কাঁধ ছাড়িয়ে গেলে তবেই না বাউন্সার। বুকসমান উচ্চতায় তো নয়। নিল ওয়াগনারও এই সুযোগটাই নিয়েছেন। একের পর বুকসমান উচ্চতায় বল করে গেছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। কৌশলটা কাজে দিয়েছে বৈকি! এই বলগুলো না পারা যায় সহজে ছাড়তে, খেলতেও লাগে নিখাদ টেকনিক। বেসিন রিজার্ভে তাই আঘাতে জর্জরিত হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। পরে সাউদির একটা বাউন্সার তো হাসপাতালেও পাঠিয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। চিকিৎসা নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরলেও আর ব্যাটিং করতে পারেননি। আগামী শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে শুরু সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে খেলাও অনিশ্চিত বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের। যাঁর বাউন্সারে সবচেয়ে বেশি জর্জরিত হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা, সেই ওয়াগনার নিজেই অবশ্য টেস্টের চতুর্থ দিন ব্যাট করার সময় এমন আগ্রাসী বোলিংয়ের সামনে পড়েছিলেন। কামরুল ইসলাম রাব্বীর ১৬ বলের মধ্যে তিনবার হেলমেটে লেগেছে তাঁর। একবার তো চিবুকে রক্তও ঝরেছে। কে জানে, বল হাতে হয়তো সেটিরই শোধই নিয়েছেন ওয়াগনার। টেস্টটা হেরেছে বাংলাদেশ। তবে বাউন্সার নিয়ে কথাবার্তা থামেনি। ওয়েলিংটন টেস্ট শেষে সংবাদ সম্মেলনেই কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল—বাউন্সার আইনটা আরেকটু কঠিন করা উচিত কি না? উইলিয়ামসন অবশ্য পক্ষে-বিপক্ষে কিছুই বলেননি। এটাকে ‘খেলার অংশ’ বলে পাশ কাটিয়ে গেছেন। তামিম ইকবালও এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। উইলিয়ামসন এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ক্রিকেটে একসময় যেমন যত ইচ্ছা বাউন্সার দেওয়া যেত, এখন তো আর তা নয়। প্রথাগত বাউন্সারের চেয়ে পাঁজর লক্ষ্য করে করা শর্ট বলগুলোই বেশি ভুগিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। সেটি সবচেয়ে ভালো করেছেন ওয়াগনার। লক্ষ্যটা এত নিখুঁত ছিল যে আহত আঙুল বাঁচাতে হিমশিম খেয়েছেন মুশফিকুর। কাল নিউজিল্যান্ড কোচ মাইক হেসনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বাউন্সারের ক্ষেত্রে যদি বলের উচ্চতাটা কাঁধ থেকে নামিয়ে বুকে নিয়ে আসা হয়, তাঁর দলের সমস্যা আছে কি না। হেসন খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেছেন, ‘কোনো সমস্যা নেই। আমরা নিয়মের মধ্যেই খেলব। আম্পায়াররা নির্দেশনা দিক এ ব্যাপারে।’ ফ্ল্যাট উইকেটে এ রকম বাউন্সারকে কৌশলের অংশই মনে করেন হেসন, ‘আপনি যখন ফ্ল্যাট উইকেটে খেলবেন, কখনো কখনো ব্যাকফুটে খেলাটাকে চ্যালেঞ্জ করতেই হবে। সে ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় আপনাকে মাথাসমান উচ্চতায় বল না করে বুকসমান উচ্চতায় বল করে সুযোগ তৈরি করতে হবে।’ কাউকে আঘাত করতে নয়, উইকেট নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতেই এটা করা হয়েছে বলে দাবি হেসনের, ‘কাঁধ আর বুকের মাঝামাঝি উচ্চতায় বল করার কাজটা নিল (ওয়াগনার) খুব ভালো পারে। ফ্ল্যাট উইকেটে এ রকম বলে অনেক সুযোগ তৈরি হয়।’ নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.