এশিয়ার দেশগুলোতে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বাতিল ইলেকট্রনিক যন্ত্র থেকে সৃষ্ট বর্জ্য বা ই-বর্জ্য। এ থেকে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশদূষণ। এই বিপদ থেকে বাঁচার উপায় হলো ই-বর্জ্যের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্ব্যবহার। কিন্তু বেশির ভাগ দেশে হয় সুষ্ঠু আইন নেই, নয়তো থাকলেও মানা হচ্ছে না।
এশিয়ার ই-বর্জ্য নিয়ে ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটি ১৫ জানুয়ারি এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে এশিয়ায় ই-বর্জ্যের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৬৩ শতাংশ। মানুষের আয় বৃদ্ধি, নতুন ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা এবং যন্ত্রগুলো দীর্ঘস্থায়ী না হওয়া ই-বর্জ্য বাড়ার অন্যতম কারণ। কম্বোডিয়া, চীন, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম—গবেষণায় আলোচিত এই ১২টি দেশে ২০১৫ সাল শেষে ই-বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ২৩ লাখ টন। এদের মধ্যে চীনের অবস্থা ভয়াবহ। পাঁচ বছরে দেশটির ই-বর্জ্য সৃষ্টির পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ লাখ ৮১ হাজার টন। দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও জাপান নব্বইয়ের দশকের আইন মেনে ই-বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা করে থাকে। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোতে এসব আইনের বালাই নেই। এই এলাকাগুলোতে সিসা ও পারদের মতো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হচ্ছে। উন্মুক্ত জায়গায় ই-বর্জ্য পোড়ানো কিংবা অনিরাপদ ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। ই-বর্জ্য পুনর্ব্যবহারে নিরাপদ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না হলে শুধু পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক দিক থেকেও ক্ষতি হচ্ছে। যেমন একটি স্মার্টফোন তৈরিতেই পিরিয়ডিক টেবিলের অর্ধেকের বেশি পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে অনেক ধাতু আছে বিরল, একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। নিয়ম না মেনে চললে এই ধাতুগুলোর পুনরুদ্ধার সম্ভব হয় না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.