জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনু্ষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পাশাপাশি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সমর্থকদের (অ্যাডভোকেট) একটি বিশেষ সভায় যোগদানের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
সেই সঙ্গে জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকের জন্য মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সলবার্গ, ইউনিলিভারের প্রধান নির্বাহী পল পোলম্যান, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ধো এবং প্রফেসর ইউনূস।
জাতিসংঘ মহাসচিব ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে এর সমর্থকরা কীভাবে সহায়তা করতে পারেন সে বিষয়ে সকলের পরামর্শ চান। জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে তিনি কীভাবে তাদের কাজে সহায়তা করতে পারেন সে বিষয়েও তিনি তাদের মতামত জানতে চান।
সমর্থকদের প্রত্যেকেই এ বিষয়ে সর্বোত্তম কর্মপন্থা কী হতে পারে সে বিষয়ে তাদের মতামত জানান। প্রফেসর ইউনূস নারী, তরুণ সমাজ ও সাধারণভাবে সিভিল সোসাইটির সমবেত শক্তিকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে চালিত করার জন্য জোরালোভাবে সুপারিশ করেন। তিনি বিশেষভাবে প্রস্তাব করেন যে, জাতিসংঘ মহাসচিব নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণদেরকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন করতে ও এই লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন কার্যক্রমে তাদের সম্পৃক্ত করতে পারেন এবং এই উদ্দেশে নেতৃস্থানীয় দেশগুলোর অর্জন ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে তাদের অবহিত করতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তার বক্তৃতা মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হতে পারে। গুতেরেস প্রফেসর ইউনূসকে তার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং দারিদ্র বিমোচনে প্রফেসর ইউনূসের অসামান্য অবদানের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দাভোসে সপ্তাহব্যাপী বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম চলাকালে প্রফেসর ইউনূস টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা রিচার্ড কার্টিস ও সেলিব্রিটি শেফ জ্যামি অলিভার আয়োজিত বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একটি বিশেষ প্রাতঃরাশ সভায় বক্তৃতা দেন।
উল্লেখ্য, এই দু’জন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব তাদের প্লাটফর্ম ও খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বার্তা ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের বার্তাগুলো প্রচারের ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য মাঠ পর্যায়ে যেসব কাজ হচ্ছে তার প্রচারও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশে ও অন্যদের সামাজিক ব্যবসা নিয়ে যে সকল কাজ হচ্ছে এবং বাংলাদেশে নবীন উদ্যোক্তা কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র তরুণ-তরুণীরা কীভাবে উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে তা তুলে ধরেন। তিনি একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে তার ‘তিন শূন্য’ – অর্থাৎ শূন্য দারিদ্র, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নীট কার্বন নিঃস্বরণ – কেন গুরুত্বপূর্ণ তাও ব্যাখ্যা করেন।
এছাড়াও প্রফেসর ইউনূস জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সংক্রান্ত অ্যাডভোকেসি গ্রুপের সমন্বয়কারী জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব টমাস গাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দাভোসে জাতিসংঘ পার্টনারশিপ স্পেসে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের ওপর সরাসরি সম্প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে অংশ নেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.