লালমনিরহাটের আদিতমারীতে গলায় দড়ি দিয়ে খোরশেদ আলী (৪৮) নামে এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার বিকালে নিজ বাড়ির পার্শ্বে একটি কাঁঠাল গাছ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে আদিতমারী থানা পুলিশ।
নিহত কৃষক খোরশেদ আলী আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চওড়াটারী গ্রামের আকরাম আলীর ছেলে।
এদিকে তার আত্মহত্যার পিছনে দু‘রকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, এনজিও থেকে নেয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধের দুশ্চিন্তার কারণে ওই কৃষক আত্মহত্যা করতে পারে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান প্রামানিক বলছেন, ওই কৃষকের বুকের ব্যাথা ও সংসারের নানা দুশ্চিন্তা ছিল। সে কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি।
আদিতমারী থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) সাফিউল যুগান্তরকে বলেন, ফাঁসিতে ঝুলানো অবস্থায় ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ঘটনাস্থল থেকে থানায় নিয়ে আসছে পুলিশ। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা এখনও পরিস্কার নয় বলে জানান তিনি। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কৃষক খোরশেদ আলী বেসরকারি সংস্থা আরডিআরসের স্থানীয় কার্যালয় থেকে ৪ মাস আগে এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ফলে ওই ঋণের জন্য প্রতি মাসে তাকে ১০ হাজার টাকা করে কিস্তি গুনতে হয় । এছাড়াও দুই স্ত্রী ও ৮ সন্তানের সংসারে খরচ নির্বাহ করতে স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও ঋণ নিতে হয়েছিল ওই কৃষককে।
তবে সম্প্রতি তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বুকে প্রচণ্ড ব্যাথা পাওয়ার কারণে প্রায় বেকার হয়ে পরেন।
আর দুই স্ত্রীর সংসারের খরচ নিয়েও খুবই দুশ্চিন্তায় পরেন বলে কৃষক খোরশেদ আলীর পরিবরের লোকজন জানায়।
সোমবার সকালে আরডিআরএস এর চলতি মাসের কিস্তি হিসেবে ১০ হাজার টাকা পরিশোধের নির্ধারিত দিন ছিল তার । ফলে একদিকে অসুস্থতা আর অন্যদিকে ওই কিস্তি পরিশোধের দুশ্চিন্তা বেশ তাড়া করে তাকে।
একপর্যায়ে রোববার রাতে বাড়ির পাশের একটি কাঁঠাল গাছের ডালের গলায় রশি দিয়ে কৃষক খোরশেদ আলী আত্মহত্যা করেন বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়।
সোমবার সকালে এলাকাবাসীসহ পরিবারের লোকজন তার লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলে থাকা অবস্থায় দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। বিকালে আদিতমারী থানা পুলিশ ওই কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
আরডিআরএস দুর্গাপুর শাখার ব্যবস্থাপক হামিদুল হক বলেন, খোরশেদ আলী নামে ওই ব্যক্তি এক লাখ টাকা ঋণ নেয়ার পর মাত্র ৩ মাসের কিস্তি পরিশোধ করেছেন। এখনো অনেক টাকা বকেয়া রয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
নিহতের স্ত্রী সাহেরা বেগম কেঁদে কেঁদে বলেন, অনেক দিন ধরে লোকটা মনমরা হয়ে বসে থাকে। কী থেকে যে কী হয়ে গেল- তা বুঝতেই পারলাম না। বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠেন তিনি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আদিতমারী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান, মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে থানা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে ময়নাতন্তের জন্য তার লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। তথ্যসূএ: ইন্টারনেট
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.