কঠিন সময়ের মুখোমুখি কক্সবাজার টেকনাফের মানুষ। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় গত ৭ বছরে টেকনাফের সাগর উপকূল দিয়ে ট্রলারে করে ঝাঁকে ঝাঁকে মানব মালয়েশিয়া গমনের প্রেক্ষিতে টেকনাফ সীমান্তের সাবরাং ও শাহপরীরদ্বীপ উপকূলীয় এলাকার ১৫টি পাড়ার যুবক শূন্য হয়ে পড়েছে। যুবতীরা বিয়ের উপযুক্ত হবার পর পাত্রের অভাবে বিয়ের পিড়িতে বসতে পারছে না।
এছাড়া পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের আরাকান থেকে রোহিঙ্গা নাগরিক বউ চোরাইপথে টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় প্রবেশের ফলে বাংলাদেশি মেয়েরা উপযুক্ত পাত্র পাচ্ছে না। সম্প্রতি সাগর উপকূলীয় এলাকার মানব পাচার এয়ারপোর্ট নামে হিসাবে খ্যাত সাবরাং কাটাবনিয়া ও শাহপরীদ্বীপ সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে এ তথ্য পাওয়া যায়।
তথ্যমতে টেকনাফ সীমান্ত উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের সাগর উপকূলীয় এলাকার ১৫টি পাড়া মালয়েশিয়ায় ভাগ্যের আশায় সাগর পথে ট্রলার যোগে নারী পুরুষ পাড়ি জমানোর ফলে ওই সব পাড়া এখন প্রায় যুবক শূন্য হয়ে পড়েছে। পাড়াগুলো হচ্ছে, সাবরাং এর কাটাবনিয়া, কচুবনিয়া, হারিয়াখালী, খুরেরমূখ, মুন্ডারডেইল, কোয়াংছড়িপাড়া, আলীর ডেইল, ডেগিল্যারবিল, চান্দলীপাড়া, নয়াপাড়া, শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণপাড়া, মাঝেরপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, ভাংগরপাড়া ও উত্তরপাড়া।
সব পাড়া দিয়ে গত ৭ বছরে সাগর পথে ট্রলারযোগে ঝাঁকে ঝাঁকে মানব মালয়েশিয়া সোনার হরিনের আশায় পাড়ি জমিয়েছিল। এর মধ্যে অধিকাংশ যুবক বলে এলাকাবাসী জানান। স্থানীয় মানবপাচারকারী দালালরা নানা প্রলোভন দিয়ে ওদের ঝুকিপূর্ণ সাগর পথ দিয়ে মালয়েশিয়ায় নিয়ে গেলেও এদের মধ্যে অনেকের হাদিস নেই বলে ঐসব এলাকার তাদের আত্নীয় স্বজনেরা অভিযোগ করেন।
অপর দিকে মালয়েশিয়ায় যারা ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় পাড়িয়ে জমিয়েছিল তাদের মধ্যে অনেকেই প্রতারণা, কর্মের অভাব ও নানা অসুখে বিসুখে ভুগছেন বলে জানা যায়। তাই তারাও সেখানে শান্তিতে নেই এবং তারা স্বদেশে ফিরে আসতে চায়। ঐসব এলাকার যুবক শূণ্যতার কারণে বিয়ের উপযুক্ত সময়ে পদার্পন করার পর পাত্রের অভাবে যুবতীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাত্র শিকারে ব্যস্তজীবন কাটাচ্ছে। আবার অনেকেই ইয়াবা পাচার ও বিভিন্ন অসমাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছে। হাটে বাজারে, দোকানে ও যানবাহনে এদের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করার মত।
অপর দিকে মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশে অনুরূপভাবে যুবক শূন্যতার খবর পাওয়া গেছে। ইয়াবা ব্যবসার সার্থে টেকনাফ সীমান্ত এলাকার যুবকেরা মিয়ানমারের যুবতীদের বউ বানিয়ে নিয়ে আসছে এবং মিয়ানমারের যুবতীরা বাংলাদেশী যুবকদের মোটা অংকের যৌতুক দিয়ে বিয়ে করছে।
এমন তথ্য বিভিন্ন গোয়েন্দা ও মিডিয়াদের রয়েছে। এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নিকাহ রেজিষ্টার (কাজী) মো. রাকেবুল হক এর সাথে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি জেনেছেন এবং যুবক শূন্য এলাকায় অতীতের মত বিবাহ সম্পাদন বর্তমানে তেমন হচ্ছে না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.