বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে শুরু করে দেশের সবাইকে নতুন চিন্তায় ফেলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজার ব্যাট। জীবনের অন্যতম সেরা একটি ইনিংস ভক্তদের উপহার দিয়েছেন মাশরাফি। গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হবার পর থেকেই প্রায়ই মাথা ঘোরা, নানারকম দুর্বলতায় ভুগছেন মাশরাফি । এরই মধ্যে মাত্র কদিন আগেও শরীরে দুর্বলতা আর অসুস্থতা নিয়ে খেলার পর সমস্যাটি সেই সমস্যা আরও বেশি ভোগাচ্ছে মাশরাফিকে। তারপরেও সেই দুর্বলতা নিয়েই আবারো অভাবনীয় এক রেকর্ড তার !
শনিবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ১০৪ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে ও টি২০ অধিনায়ক । শেখ জামালের বিপক্ষে মাশরাফির ৫১ বলের ইনিংসটি ছিল ২টি চার ও ১১টি ছক্কায় সমৃদ্ধ। স্ট্রাইক রেট ২০৩.৯২! শফিউল ইসলামের বলে মার্শাল আইয়্যুবের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মাশরাফি।
তবে মজার ব্যপার হলো রেকর্ডের কথা নাকি জানতেনইনা মাশরাফি। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের কাছে থেকেই প্রথম পান এই দুর্দান্ত রেকর্ডের কথা ! সাংবাদিকদের কাছে এই রেকর্ডের কথা জানতে পেরে প্রথমে দারুন কৌতুহলী হয়ে নিজেই জানতে চান তার নিজের করা রেকর্ডের পরিসংখ্যান!
ষষ্ঠ ম্যাচে কলাবাগানের এটি ছিল মাত্র দ্বিতীয় জয়। পয়েন্ট টেবিলে তারা ১২ দলের মধ্যে তলানি থেকে তৃতীয়তে। এর আগে ১০২ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে খেলে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি, তবু জিততে পারেনি দল। এবার জিতিয়েই ছাড়লেন ব্যাটিং কীর্তিতে। মাশরাফির আশা, এই জয় থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে দল।
‘অনেকে ভাবতে পারেন এসব কথার কথা, সবাই বলে থাকে। কিন্তু আসলেই আমার কাছে দলের জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ। আমার সেঞ্চুরিতে দল জিতেছে, রেকর্ডের চেয়ে এটা অনেক বড়।’
সেখনেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, ‘ফিফটি হওয়ার পর শরীর খারাপ লাগছিল। আমি চাইছিলাম যত দ্রুত দলের রান বাড়ানো যায়। যে ওভারে চারটি ছক্কা মারলাম, সেটায়ই তৃতীয় ছক্কা মারার পর সবার চেঁচামেচি শুনে স্কোরবোর্ডে তাকিয়ে দেখি ৯৭ রান। এরপর একটি সিঙ্গেল, পরে ছক্কায় সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির পরও তেমন কিছু মনে হয়নি। রান আরও বাড়াতে হবে, এটাই ছিল চিন্তা।’
তিনি আরও জানানা, ম্যাচ শেষে শরীরটা ভালো লাগছিল না, ম্যাচের আগেও ছিল একই অবস্থা।’
‘সকালে মাঠে গিয়ে দেখি মাথা ঘোরাচ্ছে।খুব খারাপ লাগছিল। পরে মাত্র ৫২ রান হওয়ার পর খুব হতাশ লাগছিলো। তবে মাঠে নামলে ওসব বেশিক্ষণ মাথায় থাকে না।’
খেলা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তিনি আরও জানালেন, ‘ ‘তখন দলের যা রান রেট, তাতে সেভাবে এগোলে আমরা হয়ত ২৭০-২৮০ করতে পারতাম। এই ব্যাটিং উইকেটে সেটা যথেষ্ট হতো না। এজন্যই আমি চেয়েছিলাম নেমে যতটা সম্ভব দ্রুত কিছু রান করতে।’
প্রসঙ্গত, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও একটি শতক আছে মাশরাফির। ২০০৫ সালে জাতীয় লিগে খুলনার হয়ে সিলেটের বিপক্ষে করেছিলেন ১৪০ বলে ১৩২। মাশরাফির অসাধারণ ইনিংসেই হারের মুখ থেকে ম্যাচ বাঁচিয়েছিল খুলনাকে । সেবারের শতকে ড্র, আর এবারেরটায় জয়। দল অন্ত:প্রাণ মাশরাফি তাই এগিয়ে রাখছেন এই শতকটিকেই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.