ঝড়, তাণ্ডব, উদ্দামতা শব্দগুলো বোধহয় ক্রিস গেইলের সমার্থক! ক্রিকেট মাঠের ভেতরে থাকুন অথবা বাইরে, গেইল মানেই উচ্ছ্বলতা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আক্রমণাত্মক ওপেনারের রঙিন, আকর্ষণীয় জীবন-যাপনের কথা ক্রিকেট-দুনিয়ায় কারো অজানা নয়। এবারের আইপিএল চলার সময় গেইলের সুযোগ হয়েছিল একটি রাজকীয় প্রাসাদে পাঁচ দিন কাটানোর। সদ্যপ্রকাশিত আত্মজীবনীতে সেই ‘রাজসিক’ দিনগুলোর কথা ভক্তদের জানিয়েছেন তিনি নিজেই।
আইপিএলের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মালিক বিজয় মালিয়ার একটা বিশাল বাড়ি আছে গোয়াতে। বাড়ি না বলে অবশ্য প্রাসাদ বলাই ভালোই। গলফ কোর্স, সুইমিং পুল, সিনেমা হল কি নেই সেখানে! এবারের আইপিএলে একবার দুটো ম্যাচের মাঝে পাঁচ দিন ‘ব্রেক’ পেয়েছিল ব্যাঙ্গালোর। আর সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছিলেন দলটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গেইল।
ব্যাঙ্গালোর দলের ম্যানেজার জর্জ অবিনাশের কাছ থেকে কিংফিশার ভিলা নামের প্রাসাদটার কথা জানতে পেরে উৎসাহে লাফিয়ে উঠেছিলেন গেইল। আত্মজীবনী ‘সিক্স মেশিন : আই ডোন্ট লাইক ক্রিকেট—আই লাভ ইট’-এ তিনি লিখেছেন, ‘অনেক হোটেলের চেয়ে প্রাসাদটা বড়। আমার দেখা যে কোনো বাড়ির চেয়ে এটা ভালো।’আরেকটু বিশদ করে গেইল লিখেছেন, ‘যেন জেমস বন্ডের জন্য একটা বিশাল অট্টালিকা বানানো হয়েছে। প্রচুর সাদা কংক্রিট আর কাঁচ দিয়ে তৈরি হয়েছে প্রাসাদটা। পুরো প্রাসাদটা আমার থাকার জন্য দেওয়া হয়েছিল। যেখানেই যাচ্ছিলাম, আমার সঙ্গে দুজন বেয়ারা থাকছিল। নিজেকে মনে হচ্ছিল যেন রাজা! শুরুতে প্রথম সুইমিংপুলে গেলাম। তারপর গেলাম দ্বিতীয় সুইমিংপুলে। ড্রেসিং গাউন পরে লনে হাঁটলাম। তারপর একটা কিংফিশার বিয়ার নিয়ে ফিরে এলাম পুলের কাছে। পুলের পাশে বসে থাকার সময় একটার পর একটা কিংফিশার বিয়ার পাঠানো হচ্ছিল আমাকে।’
প্রথম দিন গলফ কার্ট চালিয়ে পুরো প্রাসাদ ঘুরে বেড়িয়েছিলেন গেইল। গিয়েছিলেন প্রাসাদের নিজস্ব সিনেমা হল আর গ্যারেজেও। গ্যারেজে অজস্র গাড়ির ভীড়ে তাঁর মন কেড়ে নিয়েছিল একটি বাইক। বাইকটার বিশেষত্ব হলো সেটা তিন চাকার। গেইল লিখেছেন, ‘কোনো গাড়ি নয়, হার্লি-ডেভিডসনের তিন চাকার একটা বিশাল বাইক আমার চোখ কেড়ে নিয়েছিল। এ ধরনের বাইকে আমি আগে কখনো উঠিনি। এমনকি তিন চাকার বাইক আগে কখনো দেখিওনি। একজন আমাকে দেখিয়ে দিয়েছিল বাইকটা কিভাবে চালাতে হয়।’
কিংফিশার ভিলায় কোনো হাতি নেই। তবে গেইলের সম্মানে একটা হাতিও জোগাড় করে হয়েছিল। সেই হাতিতে চড়ে পুরো প্রাসাদ ঘুরে বেড়িয়েছিলেন এই সময়ের অন্যতম বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান।
খাওয়ার সময়ও কম অবাক হননি গেইল। বাবুর্চির কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, কি কি মেনু পাওয়া যাবে। তখন বাবুর্চি তাঁকে বিস্মিত করে জবাব দিয়েছিল, ‘কোনো মেনু নেই স্যার। আপনিই মেনু।’ মানে যা চাইবেন তাই খেতে পারবেন!
গেইলের নাকি ঐ প্রাসাদ ছেড়ে আসতেই ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু বাধ্য হয়েই যোগ দিতে হয়েছিল দলের সঙ্গে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.