তুরস্কে ১৫ হাজার ২০০ শিক্ষা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দেশটিতে সেনা বাহিনীর অভ্যুত্থানচেষ্টার পর কোনো বিভাগের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হলো।
আজ মঙ্গলবার বিবিসি জানিয়েছে, বরখাস্ত হওয়া এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত তুরস্কের ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত শুক্রবারের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে পেছনে এ ফেতুল্লাহ গুলেনকেই দায়ী করছে তুরস্ক সরকার। গুলেন এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, তুরস্কের উচ্চ শিক্ষা বোর্ড দেড় হাজারেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম গুলেনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
এর পরই এই অভিযোগে দেশটির নয় হাজার পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিচার বিভাগের সদস্য ও সেনাবাহিনীর জেনারেলসহ আরো কমপক্ষে ছয় হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। প্রায় তিন হাজার বিচারককে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইলদিরিমের কার্যালয় থেকে আড়াই শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সরানো হয়েছে। তুরস্কের সংবাদ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ কমিটি আজ মঙ্গলবার টোয়েন্টিফোর রেডিও ও কয়েকটি টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স বাতিল করেছে।
গত ১৪ জুলাই তুরস্কের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে দেশটির সেনাবাহিনীর একটি অংশ। সেনাবাহিনীর ওই দলটি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের ক্ষমতা দখলের দাবিও করেছিল।
কিন্তু দেশটির জনগণ গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সেনাসদস্যদের অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করে দেয়। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গোপন স্থান থেকে মোবাইল
অ্যাপের সাহায্যে দেওয়া বার্তায় সরকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন জনগণকে। এরপর দেশটির জনগণ সেনাসদস্যদের পিটিয়ে পুলিশে তুলে দেয়। সেনাদের ট্যাংক দখলে নিয়ে তার মাথায় দেশের পতাকা লাগিয়ে উল্লাস করে জনতা।
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের দেওয়া তথ্যমতে, ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টায় নিহত হয়েছেন ২৬৫ জন। এর মধ্যে অভ্যুত্থানপন্থী বিদ্রোহী রয়েছেন ১০৪ জন। আর অভ্যুত্থান প্রতিরোধ করতে গিয়ে সামরিক-বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন ১৬১ জন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.