বিদেশী নাগরিকদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন প্রণয়নসহ ছয় দফা সুপারিশ করেছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। গুলশানে জঙ্গি হামলার পর নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ সুপারিশ করেন তারা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুগান্তরকে বলেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দূতাবাস তাদের আশংকার কথা ব্যক্ত করে চিঠি দিয়েছে। আমরা বিদেশীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করেছি।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ১ জুলাই গুলশানে বিদেশী নাগরিকদের ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের জন্য ৫ জুলাই একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বাংলাদেশে অবস্থিত প্রায় সব দূতাবাস/মিশন প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাকালে বিদেশী কূটনীতিকরা কূটনৈতিকপাড়া এবং তাদের নিজস্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। ওই বৈঠকে কূটনৈতিকপাড়া ও তাদের নিজস্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে একটি গাইডলাইনসহ ছয় দফা সুপারিশ দেন কূটনীতিকরা। অন্য সুপারিশগুলো হল- কূটনীতিকদের বাসভবনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেয়া। আর যেসব স্থাপনায় নিয়মিত যাতায়াত করেন, সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা। যেমন- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গুলশান সুপার মার্কেট, মসজিদ ও হাসপাতালগুলো, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো, বিদেশী ক্লাব, রেস্টুুরেন্ট ও বিভিন্ন ক্যাফে। পাশাপাশি বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে স্বতন্ত্রভাবে চেক-ইন ও মালামাল স্ক্যানিং করা এবং কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর দূতাবাস ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে নিয়মিতভাবে অবহিত করা। এছাড়া ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কর্মরত সাহায্য সংস্থার কর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা। এসব বিষয় উল্লেখ করে ১৪ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে কূটনৈতিকপাড়া ও বিদেশী কূটনীতিকদের নিরাপত্তা জোরদার করে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিদেশীদের জন্য নিরাপত্তা গাইডলাইন তৈরি করতে একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর নিজেদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছে ঢাকার বিভিন্ন দেশের দূতাবাস। এ ব্যাপারে ১০ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘসহ ২৩টি দেশ আবেদন করেছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.