টিআর ও কাবিখার বরাদ্দ নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্যদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। আজ সোমবার সন্ধ্যায় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের তীব্র ক্ষোভের মুখে ইনু তাঁর এই অনভিপ্রেত বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এর আগে দুপুরে এই বক্তব্যের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সভায়ও তোপের মুখে পড়েন তথ্যমন্ত্রী। পরে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
গতকাল রোববার রাজধানীতে পিকেএসএফের একটি অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো এমপি আমি জানি, কীভাবে টিআর চুরি হয়। সরকার ৩০০ টন দেন। এর মধ্যে এমপি সাহেব আগে দেড়শ টন চুরি করে নেন। তারপর অন্যরা ভাগ করে। সব এমপি করেন না। তবে এমপিরা করেন।’
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর জের ধরে সচিবালয়ে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে নির্ধারিত আলোচ্যসূচি শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় তোপের মুখে পড়েন তথ্যমন্ত্রী। যদিও এর আগেই তিনি চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদের সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
একপর্যায়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি আসলে কথাগুলো এভাবে বলতে চাননি। সংসদ সদস্যদের তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান করেন। এমপিদের দায়িত্ব পালন এবং ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাঁর মুখ ফসকে কথাটি বেরিয়ে গেছে।
একই বক্তব্য নিয়ে সন্ধ্যার পর সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সরকার ও বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা প্রতিবাদ জানিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা তথ্যমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মাননীয় স্পিকার, তথ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জন্য সব সংসদ সদস্যদের নিকট ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী বলে দিছেন, ৩০০ টন কাবিখার মধ্যে দেড়শ টনই এমপিদের পকেটে যায়। আর দেড়শ টন আমরা আমাদের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেই। অর্থাৎ কোনো কাজই হয় না। গ্রামাঞ্চলে যে এত উন্নয়ন হচ্ছে, প্রতিদিন আমরা বলছি, আপনারা বলছেন, তাহলে উন্নয়নটা হয় কী করে? বাতাসে হয়?’
এর পরই তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের সম্পর্কে যে বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দের যে বক্তব্য আমি শুনলাম তাতে আমি মনে করি, আমার এই বক্তব্য অনভিপ্রেত ছিল এবং এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি, ক্ষমা চাচ্ছি।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.