প্রয়াত রবিউল করিম।
ফুটফুটে কন্যাসন্তানের মা হলেন উম্মে সালমা। ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় বিভীষিকাময় জঙ্গি হামলায় স্বামী রবিউল করিমকে হারিয়েছেন তিনি।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় সালমার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে কন্যাসন্তান। কিন্তু কন্যাটি জানে না, বাবার মুখ সে কখনোই দেখতে পাবে না; কাউকে বাবা বলে ডাকাও হবে না তার। বাবার ভালোবাসা কী, তা-ও তার জানা হবে না।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরে কর্মরত ছিলেন বিসিএস পুলিশের ৩০তম ব্যাচের সদস্য রবিউল করিম। ঠিক এক মাস আগেই সন্তান জন্মের এই দিনটিতে জঙ্গি দমনে প্রাণ দিয়েছিলেন তিনি।
আজ সোমবার সকালে অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল উম্মে সালমার। কিন্তু কিছুটা শারীরিক জটিলতায় দ্রুত অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোববার রাত সোয়া ১২টার দিকে ফুটফুটে এক কন্যার জন্ম দেন উম্মে সালমা। রবিউল-সালমা দম্পতির প্রথম সন্তান সাজিদুল করিম (৭), যে কি না এখনো অপেক্ষা করে বাবার জন্য।
মা-মেয়ে দুজনেই সুস্থ রয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে মাকে পোস্ট অপারেটিভ বেডে আর কন্যাকে রাখা হয়েছে শিশু নিবিড় পরিচর্যা (এনআইসিইউ) বিভাগে।
দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলি ও বোমায় প্রাণ হারান ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ রবিউল করিম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন।
গত ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ১০ জঙ্গির অতর্কিতে হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা, ১৭ বিদেশিসহ প্রাণ হারান ২৯ জন।
দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে উম্মে সালমা জানান, দেশের জন্য তাঁর স্বামীর আত্মত্যাগে তিনি গর্বিত। তবে তাঁর শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
হাসপাতালটির চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘রবিউল করিমের বীরত্বকে শ্রদ্ধা জানাই আমরা। আমরা গর্বিত এই পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগে।’
এনামুর রহমান জানান, শহীদ এই পুলিশ কর্মকর্তার স্মৃতির প্রতি বিনীত শ্রদ্ধা জানাতে রবিউল করিমের স্ত্রী ও তাঁর সন্তানের সব চিকিৎসা ব্যয় বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.