ঘটনাস্থল মালয়েশিয়ার সেলানগর প্রদেশের জালান জেন্টিং ক্লাং এলাকা। সময় বিকেল ৫টা। পেট্রলপাম্পের ক্যাশ কাউন্টারে বসেছিলেন এক শ্রমিক। ওই সময় এক বন্দুকধারী ক্যাশের সব অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল। অপর এক শ্রমিক এসে জাপটে ধরলেন বন্দুকধারীকে। প্রথম শ্রমিক নিরাপত্তা বাটনে চাপ দিলেন। ব্যর্থ হলো ডাকাতির চেষ্টা। পুলিশ ধরল ডাকাতকে।
গত রোববারের ওই ঘটনায় সাহসিকতা দেখিয়েছেন দুই বাংলাদেশি শ্রমিক। তাঁদের একজন গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হয়ে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দি মালয় মেইল অনলাইন জানায়, সেলানগর প্রদেশের জালান জেন্টিং ক্লাং এলাকার পেট্রলপাম্পের ডাকাতির চেষ্টা রুখে দেওয়া সাহসী বাংলাদেশি শ্রমিকের একজন তারেকুল ইসলাম (২৩)। ডাকাতের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তাঁর পা ভেঙে গেছে। এ ছাড়া ডাকাতের ছোড়া একটি গুলি লেগেছে তাঁর ঊরুতে। ক্যাশে থাকা অপর বাংলাদেশি শ্রমিক খালিদ আবদুল্লাহ (৩৪)। ডাকাত ধরায় তারেকুলকে সাহায্য করেছেন তিনি।
দি মালয় মেইলের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বন্দুকধারী পেট্রলপাম্পে উপস্থিত হয় এবং ক্যাশে থাকা খালিদা আবদুল্লাহর দিকে পিস্তল তাক করে সব অর্থ দিতে বলে। খালিদ ডাকাতের মনোযোগ নষ্ট করার জন্য ক্যাশ থেকে সরে যেতে থাকেন।
কুয়ালালামপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তারেকুল ইসলাম দি মালয় মেইলকে বলেন, ডাকাতটি ক্যাশের কাছে অর্থ চাইছিল। ওই সময় তিনি ডাকাতকে চমকে দিয়ে পেছন থেকে জাপটে ধরেন। ডাকাতটি তিনটি গুলি করে। এর একটি লাগে তাঁর ঊরুতে। এর পরও ডাকাতকে ছেড়ে দেননি তিনি।
দি মালয় মেইল জানায়, পেট্রলপাম্পে যাওয়া এক ক্রেতা তারেকুলের সহায়তায় এগিয়ে যান। আর খালিদ ডাকাতের পিস্তল হাতে তুলে নেন। ১৫ মিনিটের মধ্যে পুলিশ এসে ডাকাতকে তাদের হেফাজতে নেয়।
ডাকাতির ঘটনা স্মরণ করে তারেকুল ইসলাম দি মালয় মেইলকে বলেন, ‘এটি ছিল ভয়ংকর। এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটল। কিন্তু সে (ডাকাত) অর্থ ছিনিয়ে নিক, এমনটি আমি হতে দিতে চাইছিলাম না।’
খালিদ আবদুল্লাহ বলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি কাঁপছিলেন। ভয় পেলেও তিনি পরদিন আবার কাজে যান। তিনি আরো বলেন, ‘এমন ঘটনা আবার ঘটবে, এমন ভয় আমি পাই না। শুধু আমার কাজ করে যেতে চাই।’
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে ৩২ বছর বয়সী এক সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। সে ধার করা একটি পিস্তল নিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করে। বিষয়টি এখনো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.