তিনি রেলের অন্যতম ধনাঢ্য কর্মকর্তা। যার বিলাসী জীবনযাপন আর নামে-বেনামে সম্পদের হিসাবনিকাশ নিয়ে রয়েছে বিস্মিত হওয়ার মতো নানা তথ্য। তবে এসব গোপন খবর তিনি বেশিদিন গোপন রাখতে পারেননি। রেলভবন ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে দুদকের কাছেও। চলছে অনুসন্ধান, যা তিন বছরেও শেষ হয়নি। অবশ্য বর্তমান দুদক চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেয়ার পর তদন্তে কিছুটা গতি পেয়েছে।
এদিকে করিৎকর্মা হিসেবে পরিচিত অতি সৌভাগ্যবান এই কর্মকর্তার নাম সাগর কৃষ্ণ চক্রবর্তী। সবাই যাকে চেনেন এসকে চক্রবর্তী হিসেবে। পদমর্যাদায় তিনি রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক। তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি রেলের সব বড় বড় প্রকল্পের পরিচালক (পিডি)। তাই রেলে তিনি ‘পিডি সাগর’ নামেই বেশি পরিচিত। একাধারে তিনি সাতটি মেগা প্রকল্পের পিডি! পদ্মা সেতুর রেললিংক সংযোজনের পঁয়ত্রিশ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্পটিও তার ঝুলিতে। অথচ আলোচিত ‘সেভেন প্রজেক্টে’র’ এই পরিচালকের সরকারি চাকরির মেয়াদ আছে আর মাত্র ১০ দিন। পহেলা সেপ্টেম্বর তিনি অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাবেন। তাই তার চাকরির মেয়াদ বাড়াতে পর্দার আড়ালে চলছে হাইপ্রোফাইল তদবির। হাতেনাতে প্রমাণ না থাকলেও এই তদবিরের সঙ্গে বিপুল অংকের আর্থিক লেনদেনও যুক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
সাগর চক্রবর্তীর চাকরির মেয়াদ বাড়াতে হাইপ্রোফাইল তদবির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘চাকরির মেয়াদ বাড়াতে অনেকেই তদবির করেন। সাগর চক্রবর্তীও থাকার জন্য তদবির করতেই পারেন। তাতে তিনি দোষের কিছু তো দেখেন না।’ এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সাগর চক্রবর্তী সাতটি প্রকল্পের পরিচালক কিনা তা তার জানা নেই।’
স্বপদে থাকার জন্য সাগর চক্রবর্তী যে সত্যিই তদবির করছেন তা প্রমাণ করার জন্য আপাতত আর কোনো তথ্য প্রমাণের প্রয়োজন হচ্ছে না। কেননা, রেলমন্ত্রীর এই বক্তব্যই তা প্রমাণের জন্যই যথেষ্ট। মন্ত্রীর এমন মন্তব্য শুনে রেলের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা যুগান্তরের কাছে এমন মন্তব্য করেন।
বিষয়টি শুনে রেল মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শশী কুমার সিংহ তো রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি যুগান্তরকে বলেন, এত বড় বড় প্রকল্প একজন ব্যক্তিকে দেয়া কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। কিন্তু তাদের হাত-পা বাঁধা। কিছুই করার নেই।
একইভাবে অনেকটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন রেলের মহাপরিচালক আজমাদ হোসেন। তিনি বলেন, তার (এসকে চক্রবর্তী) বিষয়ে রেল বিভাগের কিছু করার নেই।
সাগর ওরফে পিডি সাগর : সাগর চক্রবর্তী ওরফে পিডি সাগর খাতা কলমেই মোট সাতটি প্রকল্পের পরিচালক। তবে রেলের প্রায় সব প্রকল্পেই কোনো না কোনোভাবে তার নিয়ন্ত্রণ চলে। অর্থাৎ তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের অঘোষিত পিডি হিসেবে ক্ষমতার ছড়ি ঘোরান। এ অভিযোগগুলো রেল ভবনে দীর্ঘদিন থেকে অনেকটাই ওপেন সিক্রেট।
সূত্র জানায়, সাগর চক্রবর্তী ১৯৮৪ সালের ১২ জানুয়ারি সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে রেলে যোগ দেন। কিন্তু সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার মাত্র ১২ বছরের মাথায় তিনি রেলের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তা হয়ে ওঠেন। ১৯৯৬ সালের পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সুপ্রসন্ন ভাগ্যের বিশেষ মই বেয়ে তিনি উপরেই উঠেছেন শুধু। দ্রুত পদোন্নতি আর প্রাইজ পোস্টিং স্বেচ্ছায় ধরা দেয় তার কাছে। সেই সঙ্গে তিনি পেয়েছেন রেলের বড় বড় প্রকল্পের পরিচালকের পদও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদ্য অবসরে যাওয়া একজন উচ্চপদস্থ রেল কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, সাগর চক্রবর্তী প্রথমে ’৯৬ সালে যমুনা বহুমুখী (পরে বঙ্গবন্ধু সেতু) সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের উপ-পরিচালক হন। তৎকালীন রেলের ডিজি আতাউর রহমানের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের সূত্র ধরে যমুনা সেতু প্রকল্পে নিয়োগ পান তিনি। টানা নয় বছর তিনি এ প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। তবে প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই ’৯৯ সালে তিনি আরেকটি বৃহৎ প্রকল্পের দায়িত্ব পান। কিন্তু এবার উপ-পরিচালক নয়, রেলের সে সময়ের বৃহৎ প্রকল্প ঢাকা-টঙ্গী ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যান। এরপর ২০০৬-০৭ সালে তিনি রেলের অন্যতম লোভনীয় পদ বলে বিবেচিত পরিচালক (প্রকিউরমেন্ট) হিসেবে পদোন্নতি পান। একই সঙ্গে ২০০৭ সালের জুলাই মাসে তিনি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে টঙ্গী ভৈরব প্রকল্পের সঙ্গেও যুক্ত হন। তিনি এই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার পরপরই বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১০ সালে আবারও তিনি পদোন্নতি পান। এবার তাকে রেলের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা করা হয়। এই পদোন্নতির মাত্র এক বছরের মাথায় তিনি টঙ্গী ভৈরব ডাবল লাইন প্রকল্পের পিডি হিসেবে নিয়োগ পান। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল প্রায় সতের’শ কোটি টাকা। কিন্তু অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও কয়েক দফা সময় বাড়ানোর কারণে পরে এই প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় দু’হাজার তিনশ’ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০১১ সালে দু’হাজার ২১২ কোটি টাকায় এ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০১৪ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ হতে অতিরিক্ত দু’বছর বেশি সময় লাগায় সরকারের প্রায় সাড়ে চারশ’ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়।
এই প্রকল্পে গাড়ি কেনাকাটা নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে একটি মাত্র প্রকল্পের জন্য মোট ১৬৩টি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে কেনা হয় ১৯টি। আর ভাড়া নেয়া হয় ১৪৪টি গাড়ি। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেয়া হয় দুটি সিডান কার, তিনটি মাইক্রোবাস, দুটি পাজেরো স্পোর্টস কারসহ নয়টি গাড়ি এবং পাঁচটি পিকআপ ভ্যান। মূল প্রকল্পে এগুলোর সরবরাহ মূল্য নির্ধারিত না থাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের কাছ থেকে প্রায় ছয় কোটি টাকা আদায় করে। তাছাড়া গাড়িগুলো মেরামত অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ হিসেবে তিন কোটি ছিয়াত্তর লাখ বিশ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়।
গণমাধ্যমে এ ঘটনা প্রকাশিত হলে ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ প্রসঙ্গে দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখবেন।
যে কারণে গাড়ি উপহার : সূত্র জানায়, বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে উচ্চপদস্থ রেল কর্মকর্তাদের নিয়মিত লোভনীয় উপঢৌকন পাঠান সাগর চক্রবর্তী। প্রকল্পের দামি দামি গাড়ি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ব্যবহার করতে দেয়া হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সাগরের দেয়া দুটি বিলাসবহুল পাজেরো জিপ (ঢাকা-মেট্রো-ঘ-১৩-৫৯৩১ ও ঢাকা-মেট্রো-ঘ-১৩-৫৯৩২) দীর্ঘদিন ব্যবহার করেন সাবেক রেল সচিব আবুল কালাম আজাদ ও মহাপরিচালক আবু তাহের। এ দুই কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার পর বর্তমানে গাড়ি দুটি রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, এভাবে একের পর এক বড় বড় প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুবাদে সাগর চক্রবর্তীর সঙ্গে রেলের প্রভাবশালী ঠিকাদারদেরও বিশেষ সখ্য গড়ে ওঠে। রেলের অন্যতম বড় ঠিকাদার ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে তার সখ্য ব্যক্তিগত বন্ধুত্বে রূপ নেয়। এ বন্ধুত্ব আরও গভীর হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল উন্নয়ন প্রকল্প চলাকালীন। কয়েকটি ধাপে কয়েক হাজার কোটি টাকার কাজ পায় ম্যাক্স কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লি.। এ প্রকল্পটিরও পিডি ছিলেন সাগর চক্রবর্তী। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের সঙ্গে সাগর চক্রবর্তীর সুসম্পর্ক আরও গভীর হয়ে ওঠে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন প্রকল্পের কাজ শুরু হলে। কেননা ৬ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের পিডি হিসেবেও দায়িত্ব পান যথারীতি সাগর চক্রবর্তী। অভিযোগ আছে, ম্যাক্সাস বড় বড় ঠিকাদারি কাজ পাওয়ার পর সাগর চক্রবর্তী যাতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে পিডি হিসেবে নিয়োগ পান সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা হতো।
সূত্র বলছে, বর্তমানে সাগর চক্রবর্তী মোট সাতটি প্রকল্পে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে আছে সিগন্যালিংসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার পর্যন্ত ডাবল লাইন নির্মাণ (২য় সংশোধিত)। প্রকল্পটির কাজ সমাপ্তির ঘোষণা দেয়া হলেও বেশকিছু কারিগরি কাজ এখনও বাকি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে প্রকল্পটি ২০০৬ সালে অনুমোদন পায়। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই অনিয়মের অভিযোগে এর দরপত্র দু’দফা বাতিল হয়। এডিবির অর্থায়নে সেকেন্ড পিএফআর’র আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের সেক্টর উন্নয়ন প্রকল্পেরও পিডি সাগর চক্রবর্তী। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। অথচ এখনও প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ বাকি। এছাড়া আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেল লাইনকে ডুয়েলগেজ রূপান্তর প্রকল্প শুরু হয় ২০১৪ সালে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৭ শতাংশ কাজ হয়েছে। ছয় হাজার ৫০৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকার এই প্রকল্পের পিডি সাগর চক্রবর্তী। বাংলাদেশ রেলওয়ের সাব-রিজিওনাল রেল ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের প্রিপারেটরি সহায়তার জন্য কারিগরি সহায়তা শীর্ষক প্রকল্প ও ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল প্রকল্প প্রস্তুতিমূলক সুবিধার জন্য কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের ও ঢাকা-মাওয়া-যশোর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পেরও পিডি সাগর। প্রায় ৮শ’ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের দক্ষতা উন্নয়নে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের পরিচালক করা হয়েছে সাগর চক্রবর্তীকেই।
তবে সাগরের পিডি কাহিনী আলোচনার তুঙ্গে উঠে আসে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্প ঘিরে। কারণ সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক (ফাস্ট ট্র্যাক) এই প্রকল্পেও পিডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এসকে চক্রবর্তী। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শুরু না হতেই ভুতুড়ে খরচের মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। কারণ প্রকল্পের অফিস সজ্জার জন্যই ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প পরিচালকের অফিস সজ্জা বাবদ খরচ আড়াই কোটি টাকা। প্রকল্প পরিচালকের অফিস সাজাতে এমন ব্যয়বহুল বরাদ্দ দেয়ার নজির ইতিপূর্বে কখনও দেখা যায়নি। অথচ প্রকল্প পরিচালক সাগর চক্রবর্তী রাজধানীর রেল ভবনের ষষ্ঠ তলায় একটি সুসজ্জিত সুপরিসর কক্ষ ব্যবহার করছেন। অভিযোগ আছে, এভাবে সাজসজ্জার বাড়তি খরচ দেখিয়ে দুর্নীতির সরল অংককে আরও সহজ করা হয়।
সূত্র জানায়, প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় নিয়মিত বেতন-ভাতার বাইরে ভাতা হিসেবে বেতনের ২০ পার্সেন্ট বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া প্রকল্পের গাড়ি ও জ্বালানি খরচসহ ঠিকাদারের কমিশন তো রয়েছেই। তাই এ ধরনের একটি প্রকল্পে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়াকেও অনেকে সৌভাগ্য মনে করেন। সেখানে সাগর চক্রবর্তী রেলের সবচেয়ে বড় বড় সাতটি প্রকল্পের পরিচালক হয়েছেন। এক্ষেত্রে নির্ধারিত এই পার্সেন্টেজের হিসাব মেলালেও তা টাকার অংকে ছোটখাটো প্রকল্প ব্যয়ের সমান।
এদিকে একজন কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে যুক্ত থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেল মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শশী কুমার সিংহ যুগান্তরকে আরও বলেন, প্রকল্প তৈরি হয়ে আসার পর আমরা শুধু ফাইল অনুমোদন করি। তাদের কিছুই করার নেই। তবে তিনি মনে করেন, একজন ব্যক্তি একাধিক বড় প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেলে তার পক্ষে কোনো প্রকল্পে সঠিকভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। এক প্রশ্নের জবাবে রেলের মহাপরিচালক আজমাদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পে পরিচালক নিয়োগ করা হয়ে থাকে। তাই সাগর চক্রবর্তীর চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়। এর বেশি তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেল ভবনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ‘ভাই এসব লিখে কোনো লাভ হবে না। এদের হাত অনেক উপরে। ওরা এতটাই প্রভাবশালী যে, আমরা নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও উল্টো সাগর চক্রবর্তীদের মতো অফিসার আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে। এটাই জাতির দুর্ভাগ্য।’
সাগর চক্রবর্তীর বক্তব্য : সাগর চক্রবর্তীর সঙ্গে এ বিষয়ে যুগান্তর প্রতিবেদকের কথা হয় ১৭ আগস্ট রাত পৌনে ৯টায়। উল্লিখিত অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি বলেন, ‘ভাই নিউজ-টিউজ কইরেন না। আসেন কথা বলি।’ এরপর গত দু’দিনে তিনি একাধিকবার সরাসরি কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। শনিবার রাতে তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘মহল বিশেষ তার বিরুদ্ধে মাঠে এসব কুৎসা রটাচ্ছে।’ তিনি দাবি করেন, ‘তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। তিনি একজন দক্ষ কর্মকর্তা। এজন্য তাকে একাধিক প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’ রিপোর্ট না করার অনুরোধ জানিয়ে সাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘আসেন সরাসরি কথা বলি। প্লিজ নিউজ কইরেন না।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.