সাদামাটা একটি দলকে জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের শীর্ষে তুলেছেন কামাল বাবু। ষষ্ঠ রাউন্ড পর্যন্ত তিন জয় আর তিন ড্রতে পুরান ঢাকার দলটির সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট। সমান পয়েন্ট আছে মুক্তিযোদ্ধা, আবাহনী ও শেখ জামালেরও। তবে মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া গোল গড়ে এগিয়ে রহমতগঞ্জ। অখ্যাত নয়ন, দিদারুল, মাসুমকে নিয়ে গড়া সেই রহমতগঞ্জকে শিরোপার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তিনি। ছোট দলের এই বড় কোচ গতকাল কথা বলেছেন মানবজমিনের সঙ্গে। তার কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হলো : প্রশ্ন: লীগ শুরুর আগেই লড়াইয়ে থাকার কথা বলেছিলেন। তখন কি ভেবেছিলেন ষষ্ঠ রাউন্ড পর্যন্ত আপনার দল শীর্ষে থাকবে? কামাল বাবু: শুরুতে এতটা হয়তো ভাবিনি। তবে আমার বিশ্বাস ছিল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই দল নিয়ে ফাইট করতে পারবো। ষষ্ঠ রাউন্ড পর্যন্ত তা-ই করেছি। এখন লীগের যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত আমি শিরোপার লড়াইয়ে থাকতে পারবো। প্রশ্ন: আপনার এই বিশ্বাসটা এলো কোথা থেকে? কামাল: আমার অফিসিয়ালরা আমাকে দল তৈরি করার ক্ষমতা দিয়েছিলেন। আমি ক্লাবের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে একটি দল সাজিয়েছি, যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে পারে তাদের নিয়ে। প্রশ্ন: লড়াই করা আর শিরোপা জেতা তো এক নয়? কামাল: আমাকে শিরোপা জেতার স্বপ্ন দেখাচ্ছে আমার রিজার্ভ বেঞ্চ। আমি মনে করি যেকেনো দলের চেয়ে আমার রিজার্ভ বেঞ্চ অনেক বেশি শক্তিশালী। প্রশ্ন: এখন পর্যন্ত লীগ যতটুকু হয়েছে তাতে আপনার কাছে মনে হয় কারা শিরোপা লড়াইয়ে থাকতে পারবে? কামাল: আমার কাছে চট্টগ্রাম আবাহনীকে সবচেয়ে ব্যালেন্সড দল মনে হয়। এরপর রহমতগঞ্জ, শেখ জামাল, মুক্তিযোদ্ধা, আবাহনী শেষ পর্যন্ত শিরোপা লড়াইয়ে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রশ্ন: শেখ রাসেলের এমন পরিণতির কারণ কি? কামাল: আসলে সব বড় দলেরই খারাপ সময় আসতে পারে। আমার মনে হয় শেখ রাসেলের বেলায়ও তেমনটা ঘটেছে। তবে এজন্য ক্লাব কর্মকর্তাদেরও দায় রয়েছে। তারা বড় বড় তারকা দেখে দল করেছে। তারা ভাবেনি এদের ফর্ম আছে কিনা। তাছাড়া বিদেশি নিয়োগেও ক্লাব দূরদর্শিতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্ন: নতুন কোচ টম সেইন্টফিটের প্রাথমিক দল আপনার দৃষ্টিতে কেমন হয়েছে? কামাল: আসলে জাতীয় দলে খেলার মানদণ্ড কী এটাই আমার কাছে এখনও পরিষ্কার না। এ কারণে জাতীয় দল নিয়ে মন্তব্য করতে ভালো লাগে না। প্রশ্ন: বিষয়টি একটু পরিষ্কার করুন? কামাল: কী করলে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া যাবে সেটা এখনও কেউ জানে না। দেখুন, ৩৫ সদস্যের দলে এক ক্লাবেরই ১১ জনকে ডাকা হয়েছে। এদের মধ্যে সর্বশেষ যে দু’জনকে ডাকা হয়েছে তারা সদ্য ইনজুরি থেকে উঠেছে। এরা কেউই জাতীয় দল দূরের কথা, ক্লাবের হয়ে খেলার জন্যও ফিট না। এ কারণেই আমার মনে হয় বাফুফের কাছে দেশপ্রেমের চেয়ে ক্লাবপ্রেমই বড়। এছাড়া ফরোয়ার্ড হিসেবে সোহেল রানা ও তপুকে ডেকেছেন কোচ। সোহেল রানা, তপু দুজনই আমার প্লেয়ার। সোহেল বিজেএমসির হয়ে কী এমন পারফরম্যান্স করলো, যে কারণে কোচ তাকে দলে ডাকলো? আর তপুর তো জাতীয় দলে খেলার বয়স পেরিয়েছে। আরেক ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন ১৪-১৫ ম্যাচ ধরে গোল পাচ্ছে না। কোচ এদের নিয়ে ফরোয়ার্ড লাইন সাজাচ্ছেন। অথচ এদের বাইরে বারিধারার সবুজ, মোহামেডানের তৌহিদুল আলম সবুজ, মুক্তিযোদ্ধার তৌহিদ, চট্টগ্রাম আবাহনীর ইব্রাহিমরা দারুণ খেলছে। গোলও পাচ্ছে নিয়মিত। এদের সুযোগ হয়নি। লীগের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দল গড়া হলে একজন গোলরক্ষক সুযোগ পেলে সেটা হবে রহমতগঞ্জের মাসুম। তাকেও প্রাথমিক দলে ডাকা হয়নি। আর কী বলবো বলুন? প্রশ্ন: আপনার দলের আগামীর তারকা কে? কামাল: আমি সব সময় তারকা নিয়ে দল গড়ি না। তারকা তৈরি করি। এবারও নয়ন, দিদারুল, মাসুম, সৈকত রাসেল হবে আমার আগামীর তারকা। প্রশ্ন: আগামী মৌসুমে এরা সবাই বড় দলে খেলবে। আপনি কি রহমতগঞ্জ, ফরাশগঞ্জ ছাড়া অন্য কোনো ক্লাবের কোচিং করাবেন না? কামাল: এখনও আমার কাছে অনেক ক্লাবের প্রস্তাব আছে। আমি পেশাদার কোচ বলে ক্লাবগুলোর নাম বললাম না। তবে বড় ক্লাবের চেয়ে ছোট ক্লাবগুলোতে কোচিং করানোয় শান্তি আছে। এখানে বেশি স্বাধীনতা পাওয়া যায়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.