শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের দিনে জঙ্গি হামলার ঘটনায় গাইবান্ধার বাড়িওয়ালা আনোয়ার হোসেন (৪৫)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুরে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে কিশোরগঞ্জের ১নং আমলগ্রহণকারী আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ. ছালাম খান ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আনোয়ার হোসেন গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার পান্থপাড়া গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং খলসী ইবতেদায়ী মাদরাসার সুপার। শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার দিন ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক ও পরে গত ৪ঠা আগস্ট রাতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত জঙ্গি শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, আনোয়ার হোসেন ছিল তাদের আশ্রয়দাতা। এছাড়া শোলাকিয়া হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া নিহত দুই জঙ্গি আবীর রহমান ও শরীফুল ইসলাম গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। গত ২৩শে জুলাই র্যাবের একটি দল তাকে আটক করে। শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। ঈদুল ফিতরের দিন গত ৭ই জুলাই সকাল পৌনে ৯টার দিকে শোলাকিয়া ঈদগার অদূরে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশিকালে জঙ্গিরা গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যা করে। জঙ্গি এই হামলায় আহত হন আরো ১২ পুলিশ সদস্য। এরপর অন্য পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসলে উভয়পক্ষে চলে বন্দুকযুদ্ধ। এক পর্যায়ে আবির রহমান (২৩) নামে ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার এক জঙ্গি গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এলাকার গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিক। আটক হয় শফিউল ও তানিম। এ ঘটনায় পুলিশের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করা পাকুন্দিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বাদী হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে শফিউল ও তানিমের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে সদর থানায় গত ১০ই জুলাই মামলা করেন। ওইদিনই আদালতে তানিমকে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর আসামি শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম (২২) সুস্থ হওয়ার পর তাকে দ্রুত আদালতে হাজির করার জন্য বিচারক নির্দেশ দেন। রিমান্ডশেষে তানিম বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে আছে। কিন্তু শফিউলের অসুস্থতার কারণে তাকে আদালতে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এক মাসের মাথায় শফিউলের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর গত ৪ঠা আগস্ট সন্ধ্যায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ময়মনসিংহ থেকে জঙ্গি শফিউলকে কিশোরগঞ্জে আনার পথে রাত ১১টার দিকে নান্দাইল উপজেলার চণ্ডিপাশা ইউনিয়নের ঘোষপালা ও বারুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানের ডাংরীবন্দ এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ইটভাটার কাছে জঙ্গিদের সঙ্গে র্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে যাতে শফিউল ছাড়াও আরো এক অজ্ঞাত জঙ্গি নিহত হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.