বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরণ করছে জাতি। ৪০ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতেই কবির আত্মার শান্তি কামনা করে মাজার প্রাঙ্গণে প্রার্থনা করা হয়। ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের প্রথম পর্বে কবির নাতনী খিলখিল কাজীর নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন কবি পরিবার।
এরপর একে একে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবির বিভিন্ন হল, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, শিল্প কলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী লীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের ব্যানারে কবির মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, নজরুলকে চেতনায় ধারণ করতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে নজরুলের দর্শন উপস্থাপনের দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু সিলেবাসে কিংবা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে নয়, নজরুলের চেতনায় অন্যায়, অপরাধ, দুর্নীতি, সম্প্রদায়িকতা রুখে দিতে হবে।
বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্রময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বলে গিয়েছিলেন ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই, যেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই’। তার সে ইচ্ছানুযায়ী কবিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (১৮৯৯ সালের ২৫ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে কবি নজরুল ইসলামের জন্ম। কবির জীবনকাল ৭৭ বছরের। ১৯৪২ সালে অসুস্থ হয়ে বাকশক্তি হারিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সৃষ্টিশীল ছিলেন। এ সময়ের মধ্যে কবি শিল্প-সাহিত্যকে যা দিয়েছেন, তা বাংলা তথা বিশ্ব পরিমণ্ডলেই অমূল্য সম্পদ। কবির ডাক নাম ছিল দুখু মিয়া।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.