সর্বশেষ বাছাই পর্বে এগিয়ে থেকেও ইরানের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিলো বাংলাদেশ। ওই হারের গ্রুপে তৃতীয় হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে মার্জিয়া-সানজিদাদের। বাংলাদেশকে হারানোর সুবাধে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় ইরান। সেই ইরানকে হারিয়ে গত আসরের প্রতিশোধের পাশাপাশি এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইয়ে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। গতকাল ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল জিতেছে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে। গোল তিনটি করেছেন মার্জিয়া, মৌসুমী জাহান ও তহুরা খাতুন। চেনা মাঠ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গতকাল শুরু থেকে ইরানের রক্ষণে আক্রমণের ঝড় তোলে মেয়েরা। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতায় আর দুর্ভাগ্যের ফেরে গোল পাওয়া হয়নি। এর একটি কারণ ছিলো অতিমাত্রায় লম্বা পাসে খেলা। লম্বা পাসে খেলতে গিয়ে প্রথমার্ধে নিজেদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না সানজিদা, কৃষ্ণারা। গোলের সুযোগ এসেছিলো। কিন্তু অতিমাত্রায় তাড়াহুড়ায় গোলও হচ্ছিলো না। যদিও ম্যাচ শেষে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ‘ইরানের মেয়েরা একটু স্লো, আমি এই সুযোগটা নেয়ার জন্যই মেয়েদের ছোট পাসের পরিবর্তে লম্বা পাসে খেলতে বলেছি। লম্বা পাসে প্রথমার্ধে সুযোগও এসেছিলো বেশ কয়েকটি। দুভার্গ্যের কারণে গোল পায়নি আমরা’- বলছিলেন ম্যাচ জয়ী এই কোচ। সত্যিই তাই। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কোচের নির্দেশনার সঙ্গে মানিয়ে খেলতে শুরু করে মার্জিয়া তহুরারা। ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে অধরা গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। নার্গিস খাতুনের লং বল মারিয়ার শট ফেরার পর মার্জিয়ার গতিময় ফিরতি শট ঠিকানা খুঁজে পায়। তিন মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় বাংলাদেশ। স্বপ্নার ক্রস ধরে সানজিদার বাড়ানো বলে জোরালো শটে ইরান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন মৌসুমী জাহান। তহুরা খাতুন ও মার্জিয়া সুযোগ নষ্ট করার পর ৮৫তম মিনিটের গোলে জয় নিশ্চিত করে নেয় বাংলাদেশ। মনিকার ক্রসে তহুরার হেড ইরানের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয়। এর আগে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে সিরাত জাহান স্বপ্না ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন বাইরে মেরে। পাঁচ মিনিট পর মার্জিয়ার ফ্রি কিকের পর মারিয়ার শট ক্রসবারে প্রতিহত হয়। চাপ ধরে রেখে অষ্টাদশ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পায় এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে গতবার তৃতীয় হওয়া বাংলাদেশ। এবার মারিয়ার শট গোল লাইন থেকে ফেরান ইরানের এক খেলোয়াড়। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের অর্ধে বল বলতে গেলে আসেনি। ২৯তম মিনিটে সানজিদার ক্রসে স্বপ্না ঠিকঠাক মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হলে স্বাগতিকদের হতাশা আরো বাড়ে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বক্সের মধ্যে মারিয়ার শট গোলরক্ষক ফিস্ট করে ফেরালে বাংলাদেশের আরেকটি সুযোগও নষ্ট হয়। এরপরও ৩-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এটি এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে ইরানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়। এর আগে নেপালে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে ইরান অনূর্ধ্ব- ১৪ দলকে ২-০ গোলে হারিয়েছিলো সানজিদা-মার্জিয়ারা। ওই আসরে শিরোপাও জিতেছিলো বাংলাদেশ। চলতি বছর তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত একই আসরেও ট্রফি জিতে ছোটনের শিষ্যরা। চলতি বাছাই পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে আগামী সোমবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এদিকে গতকাল গ্রুপের প্রথম ম্যাচে কিরগিজস্তানকে ৭-১ গোলে হারায় চাইনিজ তাইপে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.