রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। যারা দেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করে না, উন্নয়ন চায় না তারাই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে। এ প্রকল্পে সুন্দরবনের ক্ষতি হয় এমন কোনো আশঙ্কা থাকলে তিনি নিজেই প্রথম এই প্রকল্পের বিরোধিতা করতেন বলে জানান। প্রধানমন্ত্রী গতকাল তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। বিকালে ওই সংবাদ সম্মেলনে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে রামপাল বিরোধীদের বিভিন্ন বক্তব্যের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রকল্প নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এতো দিন আগে এই প্রকল্প নেয়া হলেও এই সময়ে তাদের বিরোধিতা ষড়যন্ত্রমূলক। যারা রামপালবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন তাদের অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তুলেন শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এতে উন্নত দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়- এ প্রকল্পে পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের সীমানা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার এবং ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত, একটি গভীর বনের ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ইউনেস্কোর ঘোষণার উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এই স্বীকৃতি অর্জন করা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, ন্যায্যমূল্যে জনগণের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দেশে বিভিন্ন অংশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে- রামপালে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এগুলোর একটি। গত কয়েকদিন ধরে উন্নয়নবিরোধী একটি স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের মধ্যে নেতিবাচক, ভিত্তিহীন, কল্পকাহিনী ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। সর্বশেষ ২৪শে আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসনের এ প্রপাগান্ডায় যোগ দেয়ায় মনে হচ্ছে এর পেছনে এক গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। তা না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরুর অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে তিনি কেনো জনসম্মুখে নেতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করলেন? খালেদা জিয়া ভেতর থেকে প্ররোচনা দিচ্ছিলেন। গত ২৪শে আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনিও ওই অপপ্রচারে অংশ নেন। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতায় বিশেষ মহলের সঙ্গে খালেদা জিয়া জনসম্মুখে আসার পেছনে একটি গভীর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্যই তিনি মিথ্যা তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এই কয়লাকে ভবিষ্যৎ জ্বালানির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সম্পদ অভিহিত করে বলেন, অদূর ভবিষ্যতে দেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ রাখা সম্ভব হবে না। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও জাপানের মতো উন্নত দেশ এবং প্রতিবেশী ভারত তাদের ৪০ থেকে ৯৮ শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা মেটায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে। কিন্তু বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ মাত্র এক শতাংশের সামান্য বেশি। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে দেয়া বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলাকাটিতে মানুষের কোনো স্থায়ী বসতি ছিল না। কোনো বসতি উচ্ছেদ করা হয়নি। নিচু, পতিত জমি মাটিভরাট করে উঁচু করা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য পশুর নদী থেকে লবণ পানি নিয়ে তা শোধন করে ব্যবহার করা হবে। ব্যবহৃত পানি শীতল করে পুনরায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে। কোনো দূষিত বা গরম পানি পশুর নদীতে ফেলা হবে না। যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হবে তা অত্যন্ত নগণ্য। শুষ্ক মওসুমে পশুর নদীর প্রবাহের মাত্র (০.০৫%) দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার ভাগের এক ভাগ পানির প্রয়োজন হবে। এই পশুর নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ড্রেজিং করা হবে। ফলে পানি চলাচল বাড়বে। নাব্য বৃদ্ধি পেলে মংলা বন্দরে নৌযান চলাচল বৃদ্ধি পাবে। আয় অনেকগুণ বাড়বে। ভারতে বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটার মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আইনি বাধা রয়েছে বলে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত একটি বিশাল আয়তনের দেশ। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের সঙ্গে এর তুলনা সঠিক নয়। তিনি বলেন, সরকার দূষণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ সজাগ। শব্দ ও আলো দূষণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গভীর সমুদ্র থেকে কাভার্ড বার্জে কয়লা পরিবহন করা হবে। বার্জে ব্যবহৃত হবে ঢাকনাযুক্ত কম শব্দযুক্ত ইঞ্জিন। ফলে পরিবেশ দূষণের কোনো সম্ভাবনা নেই। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা থাকবে। ১৪ কিলোমিটার দূরে শব্দ যাবে না। ২০০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হবে কয়লার দামের উপর ভিত্তি করে। ভারতের এনটিপিসি এবং বাংলাদেশের পিডিবি’র সমান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। উভয় সংস্থা ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করবে। বাকি ৭০ শতাংশ দেবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। এই ৭০ শতাংশ অর্থায়নের ব্যাংক গ্যারান্টার থাকবে বাংলাদেশ। অজ্ঞাতবশত কেউ কেউ এটাকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন। গ্যারান্টার হওয়া মানে তো বিনিয়োগ করা নয়। কোনো কারণে যদি কোম্পানি ব্যর্থ হয়, তখন ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন আসবে। সে রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার জন্য বিশ্বের প্রথিতযশা ফার্ম জার্মানির ফিশনার গ্রুপকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজের মান নিয়ে কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই। এ বিষয়ে কোনো আপোষ করা হবে না। তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল মানুষের চুরি করে গাছ কাটার প্রয়োজন হবে না। এলাকার লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। কোম্পানি থেকে বছরে ৩০ কোটি টাকা সিএসআর ফান্ডে জমা হবে। তা দিয়ে এলাকার জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন কাজ করা হবে। রামপাল প্রকল্পে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি সাধারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা পোড়ানোর দক্ষতা যেখানে ২৮ শতাংশ, সেখানে আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্লান্টের দক্ষতা ৪২ থেকে ৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ একই পরিমাণ কয়লা পুড়িয়ে আমরা দেড়গুণ বিদ্যুৎ পাবো। সবচেয়ে গুণগত মানসম্পন্ন কয়লা এখানে ব্যবহার করা হবে। কয়লা আমদানি করা হবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূষণ প্রতিরোধে সর্বাধুনিক যত ধরনের প্রযুক্তি পাওয়া যায় সেগুলো আমরা ব্যবহার নিশ্চিত করবো। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইএসপি থাকবে, যা উদগিরণকৃত ফ্লাই অ্যাশের ৯৯.৯৯ শতাংশ ধরে রাখতে সক্ষম হবে। এই ছাই সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে ব্যবহৃত হবে। একইভাবে এফজিডি স্থাপনের ফলে ৯৬ শতাংশ সালফার গ্যাস শোষিত হবে। এই সালফার গ্যাস থেকে জিপসাম সার তৈরি হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চিমনির উচ্চতা হবে ২৭৫ মিটার। এই চিমনি দিয়ে যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হবে তা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১.৬ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্য যেসব গ্যাস সামান্য পরিমাণে বের হবে সেগুলোর ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃত মাত্রার চেয়ে অনেক কম থাকবে। শেখ হাসিনা বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কেন্দ্র নির্মাণ শুরু করি ২০০০ সালে। খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করেননি। তখন পরিবেশের জন্য তো মায়াকান্না করেননি। বরং ফুলবাড়িতে ওপেনপিট কয়লা খনির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত মানুষের ওপর গুলি করে আধাডজন মানুষ হত্যা করেছিলেন তিনি। সাব-ক্রিটিক্যাল প্লান্ট ব্যবহার করলেও ঘনবসতি এবং সবুজে ঘেরা বড়পুকুরিয়া এলাকায় বিগত দশ বছরে পরিবেশ এবং জনজীবনে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি। উল্টো সেখানকার জমি আরো ঊর্বর হয়েছে। ফসল ভালো হচ্ছে। বিশ্বের বহু দেশে বনভূমির মাঝখানে, শহরের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, রামপালে সুন্দরবনের কথা বলে বিরোধিতা করছে। আনোয়ারায় সুন্দরবন নেই। কিন্তু সেখানেও বিরোধিতা করছে কেন? এদের কথা শুনতে গেলে তো কোনো উন্নয়ন কাজেই হাতে নেয়া যাবে না। কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট যদি এতই দূষণ সৃষ্টি করতো, তাহলে জাপানের মতো দেশ নতুন নতুন কয়লাভিত্তিক পাওয়ারপ্ল্যান্ট তৈরির উদ্যোগ নিতো না। ক’দিন আগে জাপান সরকার ৭০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক পাওয়ারপ্ল্যান্ট নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। চীনে প্রায় ৩০০ কয়লাভিত্তিক পাওয়ারপ্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ চলছে। রামপালবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ এনে তিনি বলেন, এই যে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে রোডমার্চ করে, সমাবেশ করে, এগুলো করতে টাকা কে দেয়? পকেটের পয়সা থেকে কেউ নিশ্চয়ই খরচ করে না। এরা বাংলাদেশবিরোধী শক্তির দাবার ঘুঁটি। তাদের এজেন্ট হয়ে কাজ করে। এসি-লাগানো বাড়িতে থেকে, এসি গাড়িতে ঘুরে মানুষকে হয়তো সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত করা যায়, কিন্তু মানুষ ঠিকই এসব মতলববাজের এজেন্ডা বুঝতে পারেন। তিনি বলেন, গঙ্গার পানি প্রত্যাহারের ফলে দেশের পশ্চিমাঞ্চল, বিশেষ করে রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়ায় মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বিএনপি সরকার এ ব্যাপারে কিছুই করেনি। আমরা ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানিচুক্তি সম্পাদন করে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করি। ফলে ওই অঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়েছে। আমরা গড়াই নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু করেছিলাম ২০০১ সালে। বিএনপি এসে তা বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে আবার তা শুরু করেছি। তিনি বলেন, পরিবেশের নাজুকতা সম্পর্কে সামান্য হলেও আমার যেমন ধারণা আছে, তেমনি বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ক্ষমতার ওপরও পূর্ণ আস্থা আছে। তিনি বলেন, প্রযুক্তিকে আপনি অস্বীকার করতে পারেন না। আগে কলেরায়, কালাজ্বরে, গুটিবসন্তে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। মানুষের আবিষ্কৃত ওষুধে জীবনহানি বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, কয়লা পোড়ালে ক্ষতিকর পদার্থ নিঃসরণ হবে- এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা এমন সব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, যেগুলো ক্ষতিকারক পদার্থগুলোকে পরিবেশে ছড়াতে দেবে না। উল্টো সেগুলোর কোনো কোনোটিকে রাসায়নিকভাবে পরিবর্তন করে মানুষের উপকারি বস্তুতে পরিণত করা হবে। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমি জানি এটা অনেকেরই সহ্য হচ্ছে না। বাংলাদেশ কেন এগিয়ে যাবে, বাংলাদেশ কেন স্বনির্ভর হবে, মানুষ কেন ভালো থাকবে, এটা তাদের সহ্য হচ্ছে না। এজন্যই একটা অজুহাত খোঁজার চেষ্টা করছে তারা। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, একটা নন-ইস্যুকে ইস্যু করে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে চায়, তাহলে তা কঠোর হাতে দমন করতে আমরা পিছপা হবো না। দেশের উন্নয়নের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য যা কিছু ভালো মনে হবে আমি সেগুলো করবোই। ‘আপনারা আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন। আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমি এমন কোনো কাজ আগেও করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না, যা দেশের এবং দেশের মানুষের সামান্যতম ক্ষতি করে। রামপালবিরোধী আন্দোলন করা বাম দলগুলোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় উল্টো রাজনীতি করেন বামপন্থিরা। বামরা বিশ্লেষণ করতে করতে অনু-পরমাণুতে পরিণত হয়েছে। তারা ভাঙতে ভাঙতে শূন্য থেকে অণু-পরমাণুতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির জিয়াউর রহমানের খালকাটা কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জিয়ার সঙ্গে ঝুড়ি-কোদাল নিয়ে খাল কাটতে চলে গেল তারা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সফরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি অতিথি হিসেবে সফরে আসছেন। তার সফরের পরে কি আলোচনা হয় সেটা জানতে পারবেন। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের অভিযানে হলি আর্টিজানে হামলার মূল হোতা খতম হয়েছে। দেশের জনগণ জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয় না। ইতিমধ্যে দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তা অব্যাহত রাখতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.