যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ ধাপের প্রচারাভিযান শুরু করেছেন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড থেকে গত সোমবার থেকে দুই মাসের এ কার্যক্রম শুরু করলেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রচারাভিযান শুরুর জন্য প্রথাগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক দিবসটিকে বেছে নেন ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। শ্রমিকশ্রেণির ভোটারদের কাছে টানাই তাঁদের এ উদ্যোগের লক্ষ্য। ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি জাতীয় পর্যায়ের সাম্প্রতিক জনমত জরিপে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের চেয়ে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। দোদুল্যমান ভোটার-অধ্যুষিত রাজ্যগুলোয় তাঁর অবস্থান শক্ত রয়েছে। তহবিল সংগ্রহের দিক দিয়েও তিনি গত মাসে ট্রাম্পকে পেছনে ফেলেছেন। হোয়াইট হাউসে পৌঁছানোর দৌড়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প নানা রকম আলটপকা মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়লেও আগামী ৬৪ দিনের প্রচারাভিযানে তীব্র লড়াই করবেন, এমন আভাস মিলেছে। ক্লিভল্যান্ডে হিলারি ও ট্রাম্প খুব কাছাকাছি জায়গায় সমাবেশ করে সোমবার প্রচারাভিযান শুরু করেন। হাজার খানেক সমর্থকের উদ্দেশে হিলারি বলেন, ‘আমি প্রস্তুত, খুব বেশিই প্রস্তুত।’ ভাষণ দেওয়ার সময় কাশির দমক সামলাতে হিলারিকে থামতে হয়েছে। পরে পানি পান করে সামলে নেন পরিস্থিতি। এই নিয়ে সমালোকচদের একটি অংশ সরব হয়েছে। তাদের যুক্তি, হিলারির গুরুতর স্বাস্থ্যসমস্যা রয়েছে। তবে তিনি সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এগুলো ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’। মৌসুমি অ্যালার্জির কারণেই তাঁর কাশি হয়েছিল। নির্বাচিত হলে হিলারি ক্লিনটন হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। নয় মাসে একটিও পরিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করেননি হিলারি। এ নিয়েও তাঁর সমালোচনা রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে হিলারি সোমবার টানা ২২ মিনিট বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সেই আলোচনার মধ্যে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে উত্তেজনার প্রসঙ্গও ছিল। তিনি বলেন, মস্কো এখন ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে চাইছে। কারণ, ট্রাম্প মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই ওই গুপ্তচরবৃত্তি শুরু হয়েছিল। ট্রাম্পও সোমবার জনসংযোগ করেন। সেখানে তাঁর ব্যক্তিগত বিমানযোগে যাত্রার জন্য কয়েকজন সাংবাদিকও আমন্ত্রণ পান। আকাশপথেই তিনি তুলে ধরেন অভিবাসন নিয়ে তাঁর ভাবনাচিন্তা। অভিবাসন নিয়ে হিলারির অবস্থানের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, তাঁর (হিলারি) পরিকল্পনা হলো, পরিপূর্ণ দায়মুক্তি। কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের এ দেশ থেকে তাড়ানোর বদলে তিনি বৈধতা দিয়ে দিতে চান। কাজেই হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে যে-কেউ সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়তে পারবে। হিলারি ও ট্রাম্প আগামী দিনগুলোতে তিন দফা বিতর্কে অংশ নেবেন। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে আর তিন সপ্তাহ পরেই। সেটি দেখার জন্য মার্কিনদের পাশাপাশি কৌতূহলী বিশ্ববাসী। ট্রাম্প সবগুলো বিতর্কে অংশ নেবেন না বলে গত মাসে ইঙ্গিত দিলেও এখন বলছেন, তিনটি বিতর্কেই তিনি থাকবেন। ওহাইওর ডেমোক্রেটিক সিনেটর শেরড ব্রাউন বলেন, জয়ের ব্যাপারে হিলারির চেয়ে ট্রাম্পই সেখানে বেশি চাপের মধ্যে রয়েছেন। আর তিনি যদি ওহাইওতে হেরে যান, গোটা প্রতিযোগিতা থেকেই ছিটকে পড়বেন। হিলারি ওহাইওতে জিততে পারেন। কারণ, তিনি ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে জয়লাভ করতে চলেছেন। হিলারি গতকাল মঙ্গলবার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের টাম্পায় একটি ভোটার নিবন্ধন সমাবেশে অংশ নিতে যান। ওহাইওর মতো ফ্লোরিডাও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দোদুল্যমান ভোটার-অধ্যুষিত একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে বাড়তি গুরুত্ব পায়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.