নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গঠিত সার্চ কমিটি কর্মতৎপর হয়ে উঠেছে। গঠিত হওয়ার পরপরই কমিটি দেশের বিশিষ্ট ১২ নাগরিকের সঙ্গে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এই সভা অনুষ্ঠিত হবে আজ বিকাল ৪টায়। ওদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৩১টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে ৫টি করে নাম দিতে বলা হয়েছে। শনিবার সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নামগুলো যাচাই-বাছাই করে এবং সার্চ কমিটির নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে একটি তালিকা তৈরি হবে এবং ১০ সদস্যের সেই তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হবে। বলা হয়েছে, চূড়ান্ত নাম মনোনয়নের আগে প্রত্যেক ব্যক্তির অতীত কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হবে। সেই চূড়ান্ত তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি তার পছন্দমতো নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সার্চ কমিটি গঠিত হওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপিসহ কোনো কোনো মহল হতাশা প্রকাশ করেছিল, বিএনপি ক্ষুব্ধও হয়েছিল। কিন্তু সার্চ কমিটি যে কার্যপদ্ধতিতে কাজ করা শুরু করেছে, তাতে সেই হতাশা আপাতত কাটবে বলে মনে হয়। দেশের যে ১২ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে সার্চ কমিটি মতবিনিময় করতে যাচ্ছে, তাদের প্রায় সবাই দেশের সম্মানিত ব্যক্তি। বিবেচনাবোধ এবং প্রজ্ঞার দিকে থেকেও তারা অনেক উঁচুতে। সার্চ কমিটির এ সিদ্ধান্ত যথার্থই ইতিবাচক। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নাম চাওয়াও একটি শুভ লক্ষণ। দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়টি অংশগ্রহণমূলকের একটি বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে যথার্থই যোগ্যদের নাম তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন, তাহলে কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়। তবে নাম মনোনয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হল, শুধু সততা ও নিরপেক্ষতাই যোগ্যতর মাপকাঠি হওয়া ঠিক হবে না, মনোনীত ব্যক্তির সক্ষমতা ও কাজ করার দক্ষতাও বিবেচনায় নিতে হবে। আমরা মনে করি, দেশে এ ধরনের ব্যক্তির অভাব নেই। সার্চ কমিটির সঙ্গে বিশিষ্ট নাগরিকদের মতবিনিময়ের সারাংশ গণমাধ্যমে এবং অনলাইনে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও অত্যন্ত যৌক্তিক।
এক কথায় বলা যায়, আমরা একটি চমৎকার নির্বাচন কমিশন দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। এ পর্যন্ত যা হয়েছে, তাতে হতাশার কিছু নেই। আমরা আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলো সার্চ কমিটির কার্যপদ্ধতিকে সহায়তা প্রদান করতে এগিয়ে আসবে। এমন ঘটাও বিচিত্র কিছু নয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যিনি নির্বাচিত হবেন, তিনি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলেরই কমন ব্যক্তি। আর কয়েক দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশনের অবয়ব ফুটে উঠবে। ততক্ষণ পর্যন্ত দুশ্চিন্তা করার কিছুই নেই।