ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় আসন্ন সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে নাও যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৯ থেকে ১০ নভেম্বর এবারের সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক পাকিস্তান। একটি কূটনৈতিক সূত্র যুগান্তরকে জানায়, বাংলাদেশে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ও কয়েকজন অপরাধীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তানের শিষ্টাচার বহির্ভূত প্রতিক্রিয়া আর হস্তক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা সে দেশে অনুষ্ঠেয় ১৯তম সার্ক সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যদিও কয়েক মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর অংশ নেয়ার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সবুজ সংকেত দেয়া হয়। এরপর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু করে। নিয়মানুযায়ী সার্কের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মতির ভিত্তিতেই সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের দিন তারিখ নির্ধারিত হয়ে থাকে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বার বার হস্তক্ষেপ করছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ এর প্রতিবাদ জানানোর পরও পাকিস্তান অবস্থান বদলায়নি।
এ অবস্থায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। মন্ত্রী বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যায়ে কোনো সফর বিনিময়ও হয়নি। সম্প্রতি ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত সার্ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা যাননি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে হাইকমিশনার ও অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সর্বশেষ দীর্ঘ ছয় বছর পর কয়েকবার পিছিয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় দু’দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়। জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা আগে সেই বৈঠকটিও স্থগিত করা হয়।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া দেখায় পাকিস্তান।
এ নিয়ে ঢাকা ও ইসলামাবাদে দু’দেশের দূতাবাসের কূটনীতিকদের দফায় দফায় তলব ও পাল্টা তলব চলে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত দ্রুত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.