যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সন্ত্রাস দমনে জাতি বা বর্ণভিত্তিক ‘প্রোফাইলিং’ করা প্রয়োজন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএসে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এই প্রস্তাব দেন।
প্রোফাইলিং হলো কোনো ব্যক্তির জাতীয়তা, বর্ণ, ধর্মীয় বিষয়ে তথ্য নিয়ে অপরাধে জড়ানোর আশঙ্কা আছে কি না খতিয়ে দেখা।
রয়টার্স জানায়, সিবিএস টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে মুসলমানদের ওপর আরো তথ্য ও নজরদারি করা প্রয়োজন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রোফাইলিং করা উচিত বলেন। তাঁর এমন প্রস্তাবে রিপাবলিকান দলের মধ্যেই বিতর্ক হয়েছে।
বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, প্রোফাইলিং প্রক্রিয়ার ফলে মার্কিন মুসলমানদের মূলধারা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
সিবিএসের সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি নিজে প্রোফাইলিং ধারণাকে পছন্দ করেন না, কিন্তু এখানে সাধারণ বুদ্ধি খাটানো প্রয়োজন। প্রোফাইলিং হলো এমন কিছু, যা দেশে শুরু করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, অনেক দেশ সফলভাবে প্রোফাইলিং চালু করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্ক শহরের মসজিদে নজরদারির প্রকল্প চালু করার কথা বলেন। বিভিন্ন অভিযোগ ও আইনি লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত প্রোফাইলিং প্রস্তাব এরই মধ্যে তীব্র সমালোচিত হয়েছে। বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি রিপাবলিকান দলের নেতারাও ট্রাম্পের প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেলের লরেটা লিঞ্চ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এমন ব্যবস্থা নেওয়া হলে মুসলমান সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। কিন্তু এই যোগাযোগ রক্ষা জরুরি। কারণ, কেউ সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ হলে সবার আগে বিষয়টি জানতে পারে তার পরিবারে সদস্য ও বন্ধুরা।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরলান্ডো শহরে সমকামীদের নৈশক্লাবে হামলায় ৪৯ জন নিহতের পর ডোনান্ড ট্রাম্প সন্ত্রাস দমন বিষয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে যাচ্ছেন। ওই ঘটনার জন্য ওমর মতিন নামের আফগান বংশোদ্ভূত এক মার্কিন মুসলমানকে দায়ী করা হয়। নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া এবং ফ্লোরিডায় বসবাসকারী ওপর মতিন জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ঘোষণা করে। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, নিজে নিজেই সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন ওমর মতিন।
অবশ্য প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাওয়ার প্রচারণা শুরুর পর থেকে মুসলমানদের সম্পর্কে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগের বেশ কয়েকবার যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি মুসলমানদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.