বিশ্বের অপার সৌন্দর্য্যে অবদান রেখেছে ছোট-বড় হাজারো নদী। সুপেয় পানির প্রবাহ তো দিয়েছে বটেই, নদীগুলোর অববাহিকাতেই যুগে যুগে গড়ে উঠেছে মানব সভ্যতা। তার ধারাবাহিকতায় আজকের সভ্য সমাজ পেয়েছি আমরা।
আসুন জেনে নেই চমৎকার ও অনিন্দ সুন্দর কয়েকটি নদীর কথা –
১। ইয়াংটজে, চীন
এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ নদী এটি, কিংঘাই-তিব্বত প্লাটিউ এর গ্লাসিয়ার থেকে এর উৎপত্তি এবং ১০ টি প্রদেশের মধ্য দিয়ে বয়ে চলে অবশেষে মিশেছে সমুদ্রে। এর অববাহিকায় দীর্ঘদিন হয়েছে ধান চাষ সহ অন্যান্য শস্য উৎপাদন।
চীনের পানি আর খাবারের উৎস ছিল এটি। বর্তমানে ম্যামথ হাইড্রোইলেক্ট্রিক পটেনশিয়াল বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু আছে এখানে। জর্জ বাঁধের অপরূপ দৃশ্য মুগ্ধ করবে আপনাকে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাওয়ার স্টেশন। নাঞ্জির বেগুনী পর্বত অন্যতম বিস্ময়কর দৃশ্য যা এই নদী থেকে উপভোগ করতে পারবেন।
২। ইরাবতী, মায়ানমার
দেশটির সবচেয়ে দীর্ঘ নদী এটি। চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্যের সমাহার নদীটিকে ঘিরে। আমাদের খুব কাছের নদী ইরাবতী, চাইলেই কিন্তু বেড়িয়ে আসা যায়।
টেলেগ্রাফ ট্রাভেলের গিল চার্লটন তার বইয়ে ইরাবতীকে একটি চমৎকার নিরবধি নদী উল্লেখ করেছেন। নদীর তীরে নৌকা বাধা, গরুর গাড়ি আর সাজানো প্যাগোডা আমাদের দেশের মতোই রূপ মাধূর্য্যে ভরপুর।
৩। কেনাই, আলাস্কা, যুক্তরাষ্ট্র
আপনার অবসর যাপনের স্বপ্নটি যদি হয় এমন যে, সারাদিন মাছ ধরবেন, হেটে বাড়াবেন, শান্তিময় পরিবেশে বিচরণ করবেন তাহলে কেনাই নদী আপনার জন্য আদর্শ। এর উৎপত্তি কেনাই পর্বতে। এরপর এটি বয়ে গেছে ৮২ মাইল/ ১৩২ কিলোমিটার পশ্চিমের দিকে এবং কেনাই ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ রিফিউজ এবং স্কিলাক লেকের উপর দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পড়েছে।
সালমন মাছ ধরা এখানে খুব জনপ্রিয়, এমনকি একবার তো ৪৪ কেজি ওজনের একটি মাছ ধরা পড়েছিল। ফিসিং সিজনে অর্থাৎ জুলাই থেকে আগষ্টে এই নদী তীরে পর্যটকদের ভীষণ ভিড় হয়। তাই শরতের কাছাকাছি সময়ে যাওয়াই ভাল।
৪। লোর, ফ্রান্স
লোর ভ্যালি তার চমৎকার আঙ্গুর ক্ষেত, ফুটন্ত মনোমুগ্ধকর অর্কিড আর দর্শনীয় চাটক্সের জন্য ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। লোর ভ্যালিকে ঘিরে আছে অপূর্ব নদী ‘লোর’।
নদীটি বয়ে গেছে টামবলডাউন গ্রামের মধ্য দিয়ে, আর এংগার এবং ব্লোয়িস এর মত শহরের মধ্য দিয়েও। উচ্ছল, চঞ্চল নদীটির উপরের ব্রীজ আর দুই পাশের রঙ্গিন মাঠ এর রূপকে আরও উজ্জ্বল করে।
৫। রাইন নদী, ইউরোপ
ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ত এবং অনেকের মতে সবচেয়ে চিত্রানুগ জলপথ এটি। রাইন বয়ে চলেছে ৬ টি দেশের উপর দিয়ে- অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, লাইচটেন্সটাইন, নেদারল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ড। ১৩২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি ইউরোপের ইতিহাস গড়ে তুলেছে।
ডিস্নেস্কিউ ক্যাসল এবং মধ্যযুগীয় দূর্গগুলো ইউরোপের সেই বিগত দিনের সাক্ষী। নদী তীরবর্তী লোরলেই পাথর স্ট্রেটচ এর আঙ্গুর ক্ষেত ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। নদীতে ভ্রমণকালে তীরবর্তী ক্যাসল, ক্যাথেড্রাল এবং রোমান এন্টিকগুলো আপনাকে ইউরোপের ইতহাসের জানান দিবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.