সুইপারের চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই কমিটি গঠন করে। এর আগে গত শুক্রবার সুমন নামে হাসপাতালের এক সুইপার কেরানীগঞ্জ থেকে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীকে মৃত ঘোষণা করে। ওই রোগীর নাম বিপ্লব মণ্ডল (২৬)। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে বিক্ষোভ করে ওই সুইপারের শাস্তি দাবি করেন। সুমনকে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। জানা যায়, ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা বিপ্লব মণ্ডল রোববার কেরানীগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে বিপ্লব অসুস্থবোধ করলে স্বজনরা দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে ইনজেকশনের নাম লিখে দিয়ে তা দ্রুত কিনে আনতে বলেন। বিপ্লবের বাবা বিনোদ অভিযোগ করেন, তারা ইনজেকশন কিনতে যাওয়ার সময় সুমন নামের এক যুবক এসে বিপ্লবের মুখে অক্সিজেনের মুখোশ চেপে ধরেন। একটু পর সুমন নিজ থেকেই বলেন, রোগী মারা গেছেন। বিনোদ মণ্ডল আরো জানান, সুমনের গলায় চিকিৎসকের স্টেথেসকোপ ছিল। প্রথমে তারা সুমনকে চিকিৎসক মনে করেছিলেন। অথচ ওই যুবক ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও মেঝে ঝাড়ু দিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর স্বজনরা ওই যুবককে ধরে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে আনসার সদস্যরা গিয়ে সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যান। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. খাজা আবদুল গফুরকে প্রধান করে গতকাল তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোজাম্মেল হক ও আবাসিক সার্জন (সাধারণ) মাহবুব এলাহী। খাজা আবদুল গফুর জানান, আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। ঘটনা সত্যতা প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল দিতে বলা হয়েছে বলেও তিনি জানান। সুমন সাংবাদিকদের বলেন, চার-পাঁচ মাস ধরে সে ঢাকা মেডিকেলের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডবয় হিসেবে চাকরি করছে। এক ওয়ার্ডমাস্টারের মাধ্যমে সে এ চাকরি পেয়েছে। এক চিকিৎসকের পরামর্শে সে ওই রোগীর (বিপ্লব) কাছে গিয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.