তিনি শুধু অভিনেত্রীই নন। নাটক রচনা, নির্মাণ উপস্থাপনা সহ মিডিয়ার নানা ক্ষেত্রে সফল। নাটকের সঙ্গে দীর্ঘ পথচলা তার। বলা হচ্ছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও নির্মাতা হৃদি হকের কথা। অভিনয় যার রক্তে মিশে আছে। মূলত অভিনয়টা তার পরিবার থেকেই পাওয়া। টিভি পর্দায় আগে নিয়মিত থাকলেও এখন ক্যামেরার পেছনেই বেশি থাকেন হৃদি। অবশ্য একেবারেই যে পর্দায় উপস্থিতি মেলে না তা কিন্তু নয়। মনের মতো কাজ হলে ক্যামেরার সামনে আসতে দ্বিধাবোধ করবেন না। কিছুদিন আগেই তার পরিচালিত ‘শেষ বিকেলের গান’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটকের প্রচার শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন আরেকটি ধারাবাহিকের কাজও শুরু করেছেন জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী-নির্মাতা। ব্যস্ততা প্রসঙ্গে হৃদি বলেন, টেলিভিশন নাটকের ব্যস্ততা যদি বলি ‘শেষ বিকেলের গান’ ধারাবাহিকটি প্রচারের পর থেকে নতুন আরেকটির প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ চলছে। চিত্রনাট্যের কাজ শেষ হলে আর্টিস্ট সিলেকশন করে শুটিং শুরু করবো। খুব সম্ভবত ডিসেম্বর মাসেই ধারাবাহিকটির চূড়ান্ত কাজ করবো। এদিকে টিভি নাটকের পাশাপাশি মঞ্চ নাটকের কাজ নিয়েও ব্যস্ত হৃদি। গত কিছুদিন ধরে ‘গওহর বাদশা ও বানেছা পরী’ নাটকের মঞ্চায়ন চলছে তার। এটি নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি এর অন্যতম প্রধান চরিত্র ‘বানেছা পরী’তে অভিনয়ের কাজও করছেন হৃদি। তিনি বলেন, নাটকটির কাজ করে বেশ ভালো লাগছে। নতুন আরেকটি শো’র জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী ১৬ই অক্টোবর ‘গওহর বাদশা ও বানেছা পরী’র নতুন মঞ্চায়নের জন্য চিত্রনাট্যের কাজ করছি। সে সঙ্গে রিহার্স্যালও চলছে। সবমিলিয়ে আগের শোগুলোর চেয়েও এটি জাঁকজমকপূর্ণ হবে বলে মনে করছি। গত শো-তে দেখেছি, কত দর্শক শিল্পকলায় এসেছেন নাটকটি দেখার জন্য! পুরো হল কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এবারও তার ব্যতিক্রমটি ঘটবে না বলে আমার বিশ্বাস। হৃদির নানামুখি ব্যস্ততার মধ্যে আরেকটি হলো নাগরিক নাট্যাঙ্গনের কাজ। সে সঙ্গে নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস গিল্ড’-এর যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও নিয়োজিত আছেন তিনি। চলতি বছর নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনটির নতুন কমিটিতে এ দায়িত্ব পান হৃদি। তারই বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতে হচ্ছে এই অভিনেত্রীকে। এ প্রসঙ্গে হৃদি বলেন, দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার পর থেকে সংগঠনের নানা কাজে নিয়মিত অংশ নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে মিটিংগুলোতে উপস্থিত থাকতে হয়। এ সংগঠনটি নিয়ে সবাই খুব জোরদার কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষত নাটকের মান উন্নয়নের জন্য অনেক পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিষয়টি আমার কাছে ইতিবাচক বলেই মনে হয়। আমি অনেক বেশি আশাবাদি ‘ডিরেক্টর গিল্ড’ নিয়ে। নির্মাণ, অভিনয়, লেখালেখি কিংবা সংগঠনের কাজের বাইরে আরেকটি পরিচয় রয়েছে হৃদির। প্রযোজনা সংস্থা ‘টিকেট’ এর পরিচালক তিনি। সেটির কাজ নিয়েও বেশ ব্যস্ত থাকেন। বিশেষ করে ইভেন্ট, নাটকের প্রোডাকশনের কাজগুলো ‘টিকেট’ থেকে করছেন এ তারকা। টিভি মিডিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পৃক্ততা। ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন অনেক নাটকেই। নিজে লিখেছেন, পরিচালনাও করেছেন। বলতে গেলে সবক্ষেত্রেই তার রয়েছে অভিজ্ঞতা। সেই আলোকে মিডিয়ার বর্তমান অবস্থা নিয়ে হৃদির মূল্যায়ন কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নাটকের গল্প, শিল্পী কিংবা অন্য কোনো সমস্যার কথা বলবো না। যে বিষয়টি নিয়ে আমার বরাবরের অভিযোগ, তা হলো ‘সিস্টেম’। আমাদের সিস্টেমে বড় রকমের সমস্য রয়েছে। চ্যানেলগুলো এজেন্সির দারস্থ হচ্ছে। নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে তাদের হস্তক্ষেপ থাকায় ভালো কিছু হচ্ছে না। তার মধ্যে ভালো বাজেট তো নেই বললেই চলে। এক কথায় নাটকের নান্দনিক জায়গাটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সমস্যা থাকলে তার সমাধানও রয়েছে। আর সেটা নিয়ে মিডিয়ার গুণীজনরা বলেছেনও। নাটকের এই সমস্যার সমাধান কি হতে পারে বলে মনে করেন হৃদি? তিনি বলেন, দেখুন আমাদের এখানে শিল্পীর অভাব নেই। নতুন যারা কাজ করছেন প্রত্যেকের মাঝে আমি দারুণ প্রতিভা লক্ষ্য করেছি। সবাই কাজ করছেন স্বতস্ফুর্তভাবে। কিন্তু সিস্টেমের সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। চ্যানেল-বিজ্ঞাপনী সংস্থা সবার সমন্বয়ে একটি ভালো পলিসি মেক করতে হবে। তাহলে সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে এতসব সংকটের মধ্যেও যে ভালো কাজ হচ্ছে তার জন্য আমি খুবই খুশি। আশা করছি নাটকে ভালো দিন আসবেই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.