বরগুনার পাথরঘাটায় চুরির অপবাদে দুই শিশুকে অমানুষিক নির্যাতন করে এক লাখ টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে। দুই দফায় তাদের এ নির্যাতন করে জরিমানার ১৪ হাজার টাকা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জমা রেখে ওই দুই শিশু ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়েছেন। গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে খলিফারহাট বাজার ও দ্বিতীয় দফায় একটার দিকে চরদুয়ানী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। চরদুয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ, ইউপি সদস্য আবদুর রহমান, কবির মোল্লা ও সহযোগী নাসিরের বিরুদ্ধে নির্যাতন শেষে এ জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই দুই শিশু-কিশোর হলো আবুল বাশারের ছেলে রুবেল হোসেন (১৩) ও ইসমাইল ফকিরের ছেলে আনোয়ার হোসেন (১৬)। এদের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের তাফালবাড়িয়া গ্রামে। রুবেল হোসেন খলিফারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী ও আনোয়ার হোসেন স্থানীয় একটি হাফেজি মাদ্রাসার ছাত্র। নির্যাতনের শিকার শিশু ও তাদের অভিভাবকেরা বলেন, চরদুয়ানীর খলিফারহাট বাজারে একটি কাপড়ের দোকানে চুরির ঘটনায় গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রুবেল হোসেন ও আনোয়ার হোসেনকে বেদম মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাদের চরদুয়ানী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় নিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় চরদুয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুর রহমান, কবির মোল্লা ও ওই পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ শিশু-কিশোরদের নির্যাতন করে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। এ সময় বেদম মারধরে তারা কাতরাচ্ছিল। এ নির্যাতন থেকে ওই দুই শিশু-কিশোরকে বাঁচাতে প্রাথমিকভাবে ১৪ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়। এ সময় সাদা স্ট্যাম্পসহ অন্য একটি কাগজে রুবেল হোসেন ও তার মা বুলবুলি বেগম এবং আনোয়ার হোসেন ও তার মা নূরুন্নাহার বেগমের বেশ কিছু সই রাখেন হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ। ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায় তাদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রুবেলের শরীরে আঘাতের বেশ কিছু চিহ্ন আর আনোয়ারের কুঁচকিতে ও মাথায় লাঠির আঘাত রয়েছে। অভিযোগ প্রসঙ্গে হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, জনসম্মুখে চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে তারা। তাই তাদের মেম্বার মারধর করেছেন। তবে তাদের নির্যাতন করা হয়নি। আর চুরির ঘটনায় দুজনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে সই রাখা হয়েছে। ইউপি সদস্য কবির মোল্লা বলেন, ‘মারধরের ঘটনা শুনেছি। তবে এ ঘটনায় আমি জড়িত নই।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.