রকৃতিকে যদি বলি মা, তাহলে সেই মা আমাদের বিনোদনের জন্য করেছেন বিচিত্র আয়োজন নিজের সুনিপুন হাতে। তৈরী করেছেন ঝর্ণা, জলপ্রপাত। অসংখ্য, কিন্তু কেউ কারও মত নয়। প্রত্যেকটি আলাদা। তৈরি করেছে পর্বতমালা। একটি পর্বতে আরোহনের পর মনে হবে একে একে চড়তে হবে সব ক’টিতেই। তৈরি করেছে পাথর, তার আছে নানান গঠন। কোনটির আশ্রয় পর্বত, কোনটির সমুদ্র।
প্রকৃতি মায়ের অদ্ভুত খেয়াল যতই দেখি ততই চমৎকৃত হই আমরা। অভিভুত হই, নেশাগ্রস্থের মত ছুটে যাই অজানাকে জানতে, সৌন্দর্য্যকে আবিষ্কার করতে। কিছু কিছু সৃষ্টি একদমই আলাদা, তার মত নেই আর কোনটাই। কিভাবে সৃষ্টি হল সেই এক ভিন্ন গবেষণার বস্তু।
প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের এই পর্বে আমরা জানব মেলিসানি গুহা সম্পর্কে। গুহাটির অবস্থান গ্রীসের কেফালোনিয়ায়। কেফালোনিয়া দ্বীপে মেলিসানি লেককে ঢেকে রেখেছে এই গুহা। বাইরের দিকে এটি আবৃত ঘন সবুজ বনে। গুহার ভেতরেই আসল রহস্য। পাথুরে গুহাটি পরিপূর্ণ স্বচ্ছ টলটলে পানিতে।
গ্রীক মিথলজিতে এই স্থানকে বলা হয়েছে পরীদের গুহা। বড় বড় দুইটি হলঘরের মত বিভক্ত গুহাটি আর মাঝে রয়েছে একটি দ্বীপ। একটি হলের ছাদ খোলা আর তার মধ্য দিয়েই প্রবেশ করে সূর্যের আলো। গুহাটিকে আরও রহস্যময় লাগে যেন! গুহার পানি এত স্বচ্ছ যে মনে হয় নৌকা যেন শূন্যে ভাসছে। পানির নীচে একেবারে তলা পর্যন্ত দেখা যায়। টলটলে পানিতে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে আপনি হয়ত সত্যিই হারিয়ে যাবেন কোন পরীর দেশে।
কেফালোনিয়া দ্বীপটি এর চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য জনপ্রিয় পর্যটক স্থানে পরিণত হয়েছে। মেলিসানি গুহা তাতে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। অপূর্ব এই সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে যেতে হবে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে। একেবারে মধ্য দুপুরে খোলে এর আসল রূপ। তবে সকাল এবং বিকেলেরও আছে ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য্য।
সামি অথবা আগিয়া এফিমিয়া থেকে সহজেই পৌঁছে যাবেন এখানে। নৌকার মাঝিই এখানে গাইডের দায়িত্ব পালন করবে, পুরো গুহা ভ্রমণ করতে পারবেন তার সাথে, জানতে পারবেন গুহার আদি কথা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.